ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বসে গেছে পদ্মা সেতুর ১৬তম স্প্যান

প্রকাশিত: ০২:৩০, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

বসে গেছে পদ্মা সেতুর ১৬তম স্প্যান

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টায় পদ্মা সেতুর ১৬তম স্প্যান ‘৩ডি’ বসে গেছে। স্প্যানটি ১৬ ও ১৭ নং পিলারের উপর বসানো হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে সেতুর ২৪শ’ মিটার বা প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো। এছাড়া এ মাসেই পদ্মা সেতুতে বসতে যাচ্ছে অন্তত আরও ২টি স্প্যান। এর আগে ১৫টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটির ২২৫০ মিটার বা ২ কিলোমিটারের অধিক দৃশ্যমান হয়েছে। এখন দিন গড়ানোর সাথে সাথে পদ্মা সেতুও দীর্ঘায়িত দৃশ্যমান হবে। এসব তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, মঙ্গলবার সকল ৯টার দিকে ভাসমান ক্রেন তিনাই-ই-তে করে স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে নদীতে কুয়াশা থাকায় সকাল পৌনে ১০ টায় এটি রওনা হয়। কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ১৬ ও ১৭ নং পিলার দূরত্ব কম হওয়ায় এটি নিয়ে যেতে ভাসমান ক্রেনের তেমন সময় লাগেনি। তাই অল্প সময়ের মধ্যেই স্প্যানটি পিলারের উপর বসানো সম্ভব হয়েছে। এরপর কয়েকদিনের মধ্যেই ‘৪ডি’ নম্বর স্প্যানটি ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটিতে বসানো হবে। এটির প্রস্তুতিও প্রায় সম্পন্ন। এ ছাড়া ২১ ও ২২ নং পিলারের উপর আরও একটি স্প্যান এ মাসেই বসানো হবে। দায়িত্বশীল ওই প্রকৌশলী আরও জানান, ২২ ও ২৩ নম্বর খুঁটির জন্য তৈরি করা ৪ডি স্প্যানটি ২৮ ও ২৯ নম্বর খুঁটির কাছে প্লাটফরম তৈরি করে নদীর তীরে রাখা আছে। কিন্তু নদীর চ্যানেলের নাব্যতার কারণে স্প্যানটি সেখান থেকে তুলে এনে স্থাপনে বিলম্ব হচ্ছে। পলি জমে থাকায় নাব্য সঙ্কটের কারণে ক্রেনবাহী জাহাজ খুঁটির কাছে পৌঁছতে পারছিল না তাই স্প্যান বসাতে বিলম্ব হচ্ছিল। তবে দিনরাত ড্রেজিং করে ওই এলাকায় নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এদিকে ওয়ার্কশপের ইয়ার্ডে ৬এ, ৬বি, ৫সি ও নম্বর স্প্যান বেশ কিছুদিন ধরে তৈরি আছে। উচ্চ ক্ষমতার ড্রেজারে রাত দিন ড্রেজিং করায় নাব্যতা সঙ্কট এখন কমে এসেছে। এদিকে ৪১টি স্প্যানের মধ্যে মাওয়ায় এসেছে ৩১টি স্প্যান। এর মধ্যে ১৬টি স্প্যান স্থাপন করা হলো। আর ৫টি রেডি এবং ৩ টি রং করা ছাড়া বাকি ৮ টি স্প্যান ফিটিংয়ের কাজ চলছে। গত ২২ অক্টোবর ১৫ তম স্প্যানটি বসেছিল। ২৮ দিন পর আজ ১৯ নবেম্বর ১৬তম স্প্যানটি বসানো হলো। তবে নাব্যতা সঙ্কট না হলে এই সময়ের মধ্যে আরও একাধিক স্প্যান বসতে পারতো বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সেতুর দায়িত্বশীল প্রকৌশলী বলেন, সেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ৩৩ খুঁটি সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকি ৯টি খুঁটির কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এখন শুধু পাইলের উপর ক্যাপিং করার কাজ রয়েছে। এটি এখন কোনও কাজই নয়। বসে যাওয়া স্প্যানে স্ল্যাব স্থাপনের কাজও চলছে সমান তালে। সেতুর নীচের অংশে রেলওয়ে স্ল্যাব বসে গেছে ৩৬২ টি। রেলওয়ে ২৯৫৯টি প্রিকাস্ট স্ল্যাব প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে ২৯২৪ টি শেষ হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রীজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টীল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এই সেতুর কাঠামো। ইতোমধ্যে ১৬ট স্প্যান বসানোর মাধ্যমে সেতুটির আড়াই কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। এ মাসে ৩টি স্প্যান বসে গেলে সেতুর প্রায় অর্ধেক দৃশ্যমান হবে।
×