ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে গুজব ছড়িয়ে লবণের কেজি ১০০ টাকা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ নভেম্বর ২০১৯

বরিশালে গুজব ছড়িয়ে লবণের কেজি ১০০ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ কতিপয় প্রভাবশালী অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে গত কয়েক মাস ধরেই পেঁয়াজের আকাশচুম্বি দামের কারণে সারাদেশের মানুষ দিশেহারা। পেঁয়াজের দাম নিন্মমুখী করতে সরকারীভাবে ইতোমধ্যে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাজার যখন গরম ঠিক সেই মুহুর্তে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে চাল ও নিত্য প্রয়োজনীয় লিকুইড পেট্রলিয়াম গ্যাস (এলপিজি)। রান্নার কাজে নিত্য ব্যবহার্য্য এ পণ্যটির দাম প্রতি সিলিন্ডারে বেড়েছে একলাফে ১২০ টাকা। এরইমধ্যে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে হঠাত করেই বরিশালের বিভিন্ন হাট ও বাজারে লবণের প্রতিকেজি দাম একশ’ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত ব্যবসায়ী বন্দর গৌরনদীর টরকীতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারী বাজারে লবণের দাম বেড়েছে বলে গুজব ছড়িয়েছে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। এমন খবর পেয়েই ক্রেতারা আগেভাগে লবণ ক্রয় করতে ভিড় জমিয়েছেন বিভিন্ন দোকানে। খুচরা ব্যবসায়ীরাও সুযোগ বুঝে পূর্বের প্রকার ভেদে ২৫ টাকার কেজি দরের মোটা লবণ ৭০ টাকা ও ৩৫ টাকা দামের চিকন লবণ একশ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক খুচরা লবণ বিক্রেতারা জানান, মাত্র এক ঘন্টার ব্যবধানে টরকী বন্দরের প্রতিটি দোকানের লবণ বিক্রি হয়ে গেছে। ওই বন্দরের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে লবণের দাম বেড়েছে প্রচার করলে মুহুর্তের মধ্যে ভিড় জমে যায় বিভিন্ন দোকানে। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সব শ্রেনী ও পেশার মানুষ একসাথে ৮/১০ কেজি করে লবণ ক্রয় করে নিচ্ছেন। লবনের মূল্যে বৃদ্ধির সংবাদ গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পরলে সর্বত্র লবন ক্রয়ের হিড়িক পরেছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে বেশি দামে লবন বিক্রির যৌক্তিক কোন কারন খুঁজে পাওয়া যায়নি। সচেতন নাগরিকদের ধারনা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনার পর নিজ দলের কতিপয় বিতর্কিত প্রভাবশালী নেতা ইতোমধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পরেছেন। নিজ দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তাদের ধরা হবে বলে যখন প্রচার শুরু করেছেন তখন থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যে বৃদ্ধি হতে শুরু করেছে। প্রথমে ভারত থেকে পিঁয়াজ রফতানী না করার অজুহাতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পিঁয়াজের প্রতি কেজি মূল্যে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করে সাধারণ জনগণ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মধ্যে আন্দোলনের ইস্যু তৈরি করে দেয়। এরপর বিভিন্ন মিডিয়ায় পিঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন করে চাল ও গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধির পর এবার লবনের মূল্যে বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে বলেও মনে করেন সচেতন নাগরিকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটসহ এর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও মনে করছেন সচেতন বরিশালবাসী। তবে লবণের মূল্য বৃদ্ধির এমন খবর গুজব বলে উল্লেখ করে গৌরনদী উপজেলা ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইসরাত জাহান জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণের লবণ মজুদ রয়েছে। দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। গুজব ছড়িয়ে যারা বেশি দামে লবণ বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
×