ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গুজব রটিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ॥ এবার লবণ নিয়ে অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ২০ নভেম্বর ২০১৯

গুজব রটিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ॥ এবার লবণ নিয়ে অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি

এম শাহজাহান ॥ লবণ নিয়ে গুজবে সারাদেশে লঙ্কাকাণ্ড শুরু হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে কৃত্রিম সঙ্কটের মুখে লবণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, দেশে লবণের কোন সঙ্কট নেই। দেশে এখন ৬ লাখ মে. টন ভোজ্যলবণ মজুদ রয়েছে আর প্রয়োজন মাত্র ১ লাখ টনের। তিনি দাবি করেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গুজব ছড়িয়ে লবণের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। কিন্তু গুজব রটনাকারীদের ক্ষমা নেই। যারা এ অপচেষ্টায় জড়িত তাদের কঠোর ও কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী তিন মাস চলার মতো ভোজ্যলবণ তাদের কাছে মজুদ রয়েছে। এছাড়া এখন লবণের মৌসুম শুরু হয়েছে। তাই লবণ সঙ্কটের আশঙ্কা নেই। তবে গুজব ছড়িয়ে লবণের দাম বাড়ানোর পেছনে জামায়াত শিবির ও বিএনপি সমর্থক ব্যবসায়ীরা সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা এ ধরনের কারসাজির আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন জনকণ্ঠের স্থানীয় পর্যায়ের সংবাদদাতারা। এছাড়া ঢাকায়ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী সমর্থক ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লবণ নিয়ে প্রথম গুজব ছড়ানো হয়। আর এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ফেসবুক, ইউটিউব, ট্ইুটার, ম্যাসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন এ্যাপস। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে ভোক্তাদের মধ্যে লবণ নিয়ে যেন কাড়াকাড়ি চলে। এক পর্যায়ে মুদিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও এর সুযোগ নেয়। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিকেজি ৩৫ টাকার লবণ বিক্রি হয় ৮০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। তবে বিকেলে লবণ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীর পৃথক ঘোষণা মিডিয়ায় আসার পর ঢাকার বাজারে দাম কমতে থাকে। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়। মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের একাধিক বাজার মনিটরিং টিম। শিল্পমন্ত্রী আরও জানান, চাহিদার তুলনায় দেশে পাঁচগুণ লবণ উৎপাদন হয়। এ কারণে কৃত্রিম সঙ্কটের খবরে বিভ্রান্ত হবেন না। দেশে লবণের কোন ঘাটতি নেই। অনেক ব্যবসায়ী রাতারাতি বড়লোক হতে এমনটা করছেন। তিনি ব্যবসায়ীদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনারা মনে রাখবেন এটা কোন জুয়া খেলা না। এছাড়া বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ভোক্তাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংবাদ সম্মেলনে জানান, পেঁয়াজ নিয়ে বিপদে আছি। এর মধ্যে আবার নতুন কারসাজি লবণ নিয়ে। তিনি বলেন, দেশে ৬ লাখ মে.টন লবণ মজুদ রয়েছে, যা দিয়ে আগামী ছয়মাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব। অথচ গুজব ছড়িয়ে লবণের বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা অপকর্মে লিপ্ত থাকবেন, তাদের জেল জরিমানাসহ সব ধরনের শাস্তি পেতে হবে। জানা গেছে, পেঁয়াজের পর এবার লবণ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি শুরু হয়েছে। সারাদেশে এখন লবণ আতঙ্কের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভোক্তারা দাম বাড়ার আশঙ্কায় বেশি করে লবণ সংগ্রহ করছেন। অন্যদিকে মুদিপণ্যের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় লবণ মজুদ করছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হস্তে লবণ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হবে জানান বাণিজ্যসচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দীন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ মজুদ করে দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার লবণ নিয়ে কারসাজি। এভাবে আর নয়। তিনি বলেন, যেসব ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী ভবিষ্যতে পণ্যমূল্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এদিকে, লবণের দাম বাড়ালে অসাধু ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানা দিতে ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, দেশে পর্যাপ্ত লবণ মজুদ রয়েছে। লবণের কোন সঙ্কট নেই। আমার নির্দেশ আপনারা বাজার মনিটর করেন। লবণ নিয়ে কারসাজি করলে জেল দেয়ার প্রয়োজন হলে দেন, যাকে জরিমানা করার দরকার করেন। বাজারের দামটা যেন ঠিক রাখেন। তিনি বলেন, লবণের বিষয়ে আমি খবর নিয়েছি। লবণের চাষীদের সুবিধার্থে সরকার আমদানি বন্ধ রেখেছে। তারপরেও লবণের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সঙ্কট রয়েছে মর্মে গুজব রটনা করছে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় লবণের দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে সরকারের কাছে মনে হয়েছে। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, লবণ নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না। দেশে পর্যাপ্ত লবণ আছে। গুজব ছড়িয়ে যারা লবণের দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিসিকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লবণ চাষীদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সরকারের সার্বিক সহায়তার ফলে লবণ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের লবণ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রেকর্ড পরিমাণ ১৮ দশমিক ২৪ লাখ মে.টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। গত ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত দেশে লবণের মজুদের পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ লাখ মে.টন। এছাড়া সারাদেশে বিভিন্ন লবণ কোম্পানির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি চলতি নবেম্বর মাস থেকে লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত নতুন লবণও বাজারে আসতে শুরু করেছে। দেশে প্রতিমাসে ভোজ্য লবণের চাহিদা কম-বেশি ১ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে লবণের মজুদ আছে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টন। সে হিসাবে লবণের কোন ধরনের ঘাটতি বা সঙ্কট হওয়ার কোন কারণ নেই। এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থানে লবণের খবর দিয়েছেন জনকণ্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা ও স্টাফ রিপোর্টারগণ। নারায়ণগঞ্জ॥ স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জে লবণের দাম বেড়েছে এরূপ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়ার সময় মোঃ রহিম (২০) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে নিতাইগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রহিম নগরীর দেওভোগ এলাকার আঃ হাকিমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাত ৯টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কার্যালয়ে থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়। মুন্সীগঞ্জ ॥ লবণের দাম বৃদ্ধির গুজবে মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারে লবণ কেনার হিড়িক পড়েছে। এতে একদিকে যেমন লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি দোকানগুলো লবণ শূন্য হয়ে পড়েছে। গুজবের এ খবরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কোন বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, লবণের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে-এমন গুজব সকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসীর মধ্যে। বিশেষ করে ফেসবুক ও ঢাকা থেকে আত্মীয়স্বজনের ফোনে এ গুজব আরও ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী গুজবে কান দিয়ে হাটবাজারের দিকে ছুটতে শুরু করে লবণ কিনতে। অনেকেই ১০, ১৫, ২০ কেজি পর্যন্ত লবণ কেনেন। এতে দোকানিরাও সুযোগ পেয়ে যায়। তারাও ভাবে লবণের দাম বুঝি সত্যি সত্যিই বাড়তে চলছে। তাই তারাও এ সুযোগে লবণের দাম ইচ্ছেমতো ২শ’ টাকা পর্যন্ত হাকিয়ে বসে। বিশেষ করে শ্রীনগর উপজেলার বাজারগুলোতে এ দাম লক্ষণীয় ছিল। শ্রীনগরের মতো লৌহজং টঙ্গীবাড়িতেও মানুষজন লবণ কিনতে বাজারগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অনেক দোকানি মানুষজনের চাপ সামলাতে দোকানের অর্ধেক শাটার বন্ধ করে লবণ বেচা-বিক্রি করে। বাজারগুলোতে মুহূর্তেই লবণ সঙ্কট দেখা দেয়। গাজীপুর ॥ কাপাসিয়ায় গুজব ছড়িয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশি দামে লবণ বিক্রির অপরাধে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাসহ দু’ব্যবসায়ীকে মঙ্গলবার রাতে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলো- কাপাসিয়ার সালুয়ার টেকি এলাকার সুনীল সাহার ছেলে ভাইভাই ট্রেডার্সের মালিক রাজন সাহা (৩৭) ও টোকনয়ন বাজার এলাকার মৃত রুশমতের ছেলে সোহেল স্টোরের মালিক সোহেল (২৮)। এদের মধ্যে রাজন সাহা পাইকারি বিক্রেতা এবং সোহেল খুচরা বিক্রেতা। তারা দু’জনই স্থানীয় টোকবাজারের ব্যবসায়ী। কাপাসিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, কাপাসিয়ায় গুজব ছড়িয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টোক বাজারের পাইকারি বিক্রেতা রাজন প্রতিবস্তা লবণ ৬০ টাকা বেশি মূল্যে অর্থাৎ ৭২০ টাকা মূল্যের প্রতি বস্তা লবণ ৮শ’ টাকা এবং খুচরা বিক্রেতা সোহেল প্রতি কেজি লবণ ১০ টাকা বেশি মূল্যে অর্থাৎ ১৫ টাকা কেজি মূল্যের লবণ ২৫ টাকা মূল্যে বিক্রি করছিল। এলাকাবাসীর এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে টোক ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দু’ব্যবসায়ীকে আটক করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বগুড়া॥ স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া থেকে জানান, লবণ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রির অভিযোগে পুলিশ বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় পুলিশ জানায়, জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। লবণ নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে বগুড়ায় বাজার অস্থিতিশীল করার খবর পাওয়া পর থেকে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন বাজার ও বিভিন্ন লবণ বিক্রির দোকান মনিটরিং করছিল। গুজব ছড়িয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রির সময় পুলিশ অভিযান চালায়। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা ৪৪ জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা লবণ ব্যবসায়ী। মাদারীপুর ॥ এক ঘণ্টার মধ্যে গুজব ছড়িয়ে মহাজন, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা লবণের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি করে দেয়। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা গ্রামের ক্রেতাদের ভুল বুঝিয়ে প্রতি কেজি লবণ ৭০ থেকে ১শ’ টাকা দরে বিক্রি করে। সিন্ডিকেট করে মহাজন ও পাইকাররা প্রচুর পরিমাণ লবণ মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ উঠেছে। হঠাৎ করে মহাজনরা তাদের গুদাম থেকে লবণ অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে শুরু করেছে। খবর পেয়ে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে টেকেরহাট থেকে ৩০৫ বস্তা লবণ আটক ও কালকিনি এক দোকান থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। লালমনিরহাট ॥ জেলার গ্রামের হাটবাজার ও শহরে লবণ কিনতে সাধারণ মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। জেলা কে বা কাহারা গুজব ছড়িয়েছে দেশে তীব্র লবণ সঙ্কট রয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে বাজারের লবণ পাওয়া যাবে না। এই গুজবে কান দিয়ে সাধারণ মানুষ লবণ কিনতে দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। বাজারে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতাকে লবণ কিনতে দেখা গেছে। জেলা সদরের বড়বাড়িতে এক কেজি লবণ ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ খবরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট গিয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে দোকান বন্ধ করে পালিয়েছে। নীলফামারী ॥ লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১০০ টাকায় উঠবে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে নীলফামারী জুড়ে। গুজবের তেলেসমাতির কারণে লবণ সংগ্রহে শত শত ভোক্তা দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকাল হতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও বাজারে কোন লবণের সঙ্কট বা ঘাটতি ছিল না। এরপরও বাসা বাড়ির মানুষজন লবণ কিনতে দোকানে দোকনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। নড়াইল ॥ লবণের কৃত্রিম সঙ্কটের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর নড়াইল জেলায় একযোগে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসান ও পুলিশ প্রশাসন। লবণ মজুদ ও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলার ৩টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৬ জনকে আটকের পর বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করেছেন। অভিযানকালে মজুদকৃত ২শ’ কেজি লবণ উদ্ধার করা হয়। ফরিদপুর ॥ ফরিদপুরে লবণের বাজারে হুলস্থূল লেগে যায়। মঙ্গলবার বিকেল চারটা থেকে অস্থিও হয়ে ওঠে শহরের লবণের দোকনগুলো। ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে নাভিশ্বাস অবস্থার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন বাজার ঘুরে বাজারগুলো ঢুকে লবণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিও বিষয়টি চোখে পড়েনি। তবে লোকজনকে হন্যে হয়ে জটলা করে লবণ কিনতে দেখা গেছে। ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৫০ কেজি পর্যন্ত লবণ কিনে শ্রমিকদের দিয়ে প্রধান সড়কে উঠে রিক্সায় তুলতে দেখা গেছে।
×