স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুজিব বর্ষ কে সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে দেশব্যাপী পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। একইসাথে আগামী বছর গ্রামে এডিস মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু যাতে ছড়িয়ে না যায় সেজন্য সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি। বুধবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মুজিব বর্ষ ২০২০ কে সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কর্মসূচি বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের ১৭ ই মার্চ থেকে মুজিব বর্ষ পালন করা হবে। এই মুজিব বর্ষ কে সামনে রেখে আমরা পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই। এজন্য আগামী বছরের শুরুতেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের সহ সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা এবার ঢাকা শহরে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব দেখেছি। গ্রামে যে আগামীবার তা ছড়িয়ে যাবে না, তার নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। কারণ,গ্রাম তো সেই গ্রাম নেই, প্রায় ঘরই এখন বিল্ডিং হয়ে গেছে, সেখানে ছাদে পানি জমবেই। এডিস মশা এবার শহর থেকে গ্রামে মাইগ্রেট করেছে, এবার কম-বেশি সব জায়গায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখেছি। কর্মপদ্ধতির কথা তুলে ধরে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন,দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রথমে ছোট এলাকায় কাজ শুরু হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে চালুকৃত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে ১৯৯৯ সালে ডেঙ্গুতে এক হাজার লোক মারা যায়, ১০ লাখের বেশি এফেক্টেড হয়। সেখানে আমাদের ডেনসিটি হাই। তাদের ডেনসিটি লো। দেখা যায়, সেখানে ইনফেক্টেড মশা আরেক জায়গায় গিয়ে মানুষকে কামড়াতে গিয়ে মারাই যায়। কারণ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এডিস মশা ডিম পারতে না পারলে বেঁচে থাকা কষ্টকর। আমেরিকা প্রতিদিন এসব নিয়ে রিসার্চ করে।সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশে ১৫ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছে। সমস্যা পর্যায়ক্রমে হয়েছে, হতাশার কারণ নেই। আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। মন্ত্রী বলেন, ভিশন ২০২১, ২০৪১, এসডিজি অর্জন ও উন্নয়নের মানদণ্ড হিসেবে পরিচ্ছন্ন জনপদ গড়ে তোলা সর্বসাধারণের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দৈনন্দিন অভ্যাস গড়ে তােলা, জনসাধারণকে এ বিষয়ে সচেতন করা মশাবাহিত, পানিবাহিত, বায়ূবাহিত ও মৌসুমি রােগ-বালাই হতে পরিত্রাণ পাওয়া, প্লাস্টিক, পলিথিনের ব্যবহার রোধ, সীমিতকরণ এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, নতুন প্রজন্মকে উন্নত-পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা ও তাদের মধ্যে জীবনব্যাপী পরিচ্ছন্নতার বোধ ও অভ্যস্ততা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, আমাদের শরীরে ১০০ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া আছে। এর মধ্যে ৯৯ ভাগ আপনার জন্য প্রয়োজন। আর ১ ভাগ ক্ষতিকর। এই ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে যা প্রোটেকটিভ এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তাকে যদি মেরে ফেলেন তাহলে কি বেঁচে থাকার উপায় আছে? সেভাবে মশা মারতে গিয়ে মানুষ মেরে ফেলা যাবে না। যেগুলো মশাকে ধ্বংস করবে, সেগুলো আমরা মেরে ফেলছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, মুজিব বর্ষকে ২০২০ সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিচ্ছন্ন গ্রাম-পরিচ্ছন্ন শহর কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন প্রদান করেছেন। উন্নত দেশগুলোর ন্যায় বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায় হতে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সর্বত্র সার্বিক পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার হতে প্রাতিষ্ঠানিক সবক্ষেত্রে শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।