ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ দিনে বাফুফে ভবনে নিরুত্তাপ দলবদল!

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ২০ নভেম্বর ২০১৯

শেষ দিনে বাফুফে ভবনে নিরুত্তাপ দলবদল!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বুধবার ছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের দলবদলের শেষ দিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে আগেরদিন মোহামেডান, শেখ রাসেল, বাংলাদেশ পুলিস ফুটবল ক্লাবগুলো যেভাবে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে তাদের দলবদল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল, বুধবার তার সিকিভাগও দেখা যায়নি! এদিন খেলোয়াড় ও কোচ নিয়ে দলবদল সারে একমাত্র বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র এবং রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। অবশিষ্ট ক্লাবগুলোর পক্ষে শুধু কর্মকর্তারা সন্ধ্যার পরে বাফুফে ভবনে এসে খেলোয়াড় তালিকা বুঝিয়ে দিয়ে যান বাফুফের কর্মকর্তাদের কাছে। একেবারেই সাদামাটা, অনাড়ম্বরভাবে শেষ হয় এবারের ফুটবল দলবদলের আনুষ্ঠানিকতা। দুপুরের পর প্রথমে বাফুফে ভবনে আসে দু’বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ক্লাবের সভাপতি জহুরুল ইসলাম রুহেল বলেন, সরকারী ক্লাব হওয়ায় প্রতি মৌসুমেই আমাদের দলগঠনের জন্য টাকা-পয়সা পেতে অনেক দেরি হয়। ফলে খেলোয়াড়দেরও বেতন বকেয়া থেকে যায়। তবে এবার আমি আস্থার সঙ্গে বলতে চাই চলতি মৌসুমে এমনটি আর হবে না। খেলোয়াড়দের কারোর কোন টাকা আর বাকি নেই, সব পরিশোধ করা হয়েছে। আমাদের এবারের দলটি তারুণ্যনির্ভর। গত লিগে আমরা পঞ্চম স্থান অধিকার করেছিলাম। এবার তারচেয়েও একটু ভাল করতে আশাবাদী। মুক্তিযোদ্ধার ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা মাঠের খেলায় ভাল কিছু উপহার দিতে চাই এবার। দলের কোচ আব্দুল কাইউম সেন্টু বলেন, আমাদের এবারের দলটি গতবারের মতোই হয়েছে। সাফল্য পেতে আগের চেয়েও বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবার। অন্য দলগুলোর শক্তিমত্তা আগের চেয়ে বেড়েছে। এজন্য আমাদের এবার ভালো করার চ্যালেঞ্জটা অনেক বেশি। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে রুহেল জানান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যে ভবনটি ভাড়া দেয়া হয়েছিল, সেটিই ছিল তাদের আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু ভাড়াটিয়া ভাড়া না দিতে দিতে বকেয়া ভাড়ার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ কোটি টাকায়। এ নিয়ে মামলা চলছে। আশা করি মামলার রায় আমাদের পক্ষেই যাবে এবং আমরা টাকাটা পাব। সেন্টু বলেন, আমাদের দলটি একটি দিক দিয়ে একটু দুর্বল। সেটা হলো-গত লিগে আমাদের হয়ে খেলা দুই বিদেশী জাপানের কাতো এবং আইভরি কোস্টের বাল্লো ফামৌসা এবার আমাদের সঙ্গে নেই। তারা ইতোমধ্যেই যোগ দিয়েছে শেখ জামাল ধানমণ্ডিতে। তারা অবশ্য আমাদের সঙ্গে থাকতেই চেয়েছিল। কিন্তু তাদের বেতন দেয়ার সামর্থ্য আমাদের ছিল না। ফলে তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। সেন্টু আরও যোগ করেন, তবে তাদের পরিবর্তে নিয়েছি নতুন দুই বিদেশীকে। তারা আগে থেকেই বিপিএল খেলে। একজন পল এমিল, আরেকজন ইসমাইল বাঙ্গুরা। দুজনেই চমৎকার খেলোয়াড়। দুজনেই পরীক্ষিত। আশা করি তারা আমাদের ভালো সার্ভিস দেবে। গত মৌসুমের ১২ ফুটবলার এবারও মুক্তিযোদ্ধায় খেলবে। দলবদলে তাদের আছে মোট ৩৪ ফুটবলার। ঘরোয়া ফুটবলের জায়ান্ট কিলার বলা হয় রহমতগঞ্জকে। তাদের আরও দুটি নিকনেম আছে, আইলো এবং ডাইলপট্টি। পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব ১৯৭৭ সালের লিগে রানার্সআপ হয়েছিল। ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ বলেন, এবার আমরা ইয়াং একটি দল গড়ার জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। ক্লাবের ফুটবল সেক্রেটারি সুলতান আহমেদ বলেন, আশা করি আমাদের দলটি ভালো খেলার চেষ্টা করবে এবং ভাল রেজাল্ট করবে। আর আমরা এবার মাঠে দর্শক নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। উজবেকিস্তান জাতীয় অ-২৩ দলের ফুটবলার আকপপব আসররভককে নিজেদের ডেরায় ভিড়িয়ে এবার চমক সৃষ্টি করেছে রহমতগঞ্জ। এছাড়া গত মৌসুমে চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলা গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড মমোদৌ বাওকেও দলভুক্ত করেছে তারা। একই ক্লাব থেকে নিয়েছে গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটনকে, যিনি জাতীয় দলে একসময় খেলেছেন। মুক্তিযোদ্ধা থেকে নিয়েছে ডিফেন্ডার কামারা ইউনুসাকে। দলের কোচ এবারও সৈয়দ গোলাম জিলানী। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে আমাদের এবারের দলটি ভাল হয়েছে। আশা করি আমরা এবার ভাল করবো। লিগে আমরা মাঝামাঝি অবস্থান (৬ বা ৭ নম্বরে) থাকতে চাই। এছাড়া ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।
×