ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ হলো আয়কর মেলা

প্রকাশিত: ০৮:১৮, ২০ নভেম্বর ২০১৯

শেষ হলো আয়কর মেলা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলা বুধবার শেষ হয়েছে। তবে মেলা শেষ হলেও আগামী ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত কোনো ধরনের জরিমানা ছাড়াই করদাতারা আয়কর অফিসে গিয়ে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। এছাড়া কর শনাক্তকরণ নম্বরসহ (ই-টিআইএন) অন্যান্য সেবা নেয়া যাবে। তবে ঐদিন সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় (শনিবার) পরবর্তী খোলার দিন, অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর জরিমানা ছাড়াই আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সারাদেশের কর আদায়ের হিসাব কষছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা। এদিকে, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে সপ্তাহব্যাপী মেলা আয়োজন করে এনবিআর। তবে জেলা শহরে চার দিন ও কিছু উপজেলায় দুই দিন করে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে মেলার শেষ দিনে করদাতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। ছয় দিনে আয়কর মেলায় ৫ লাখ ৪০ হাজার করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন। ওই সময়ে আয়কর আদায় হয়েছে ২ হাজার ১৬ কোটি টাকা। নতুন ই-টিআইএন নিয়েছেন ২৬ হাজার ৮৩১ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত আয়কর মেলা থেকে সেবা নিয়েছেন ১৫ লাখ ১২ হাজার ৫৯২ জন। বুধবার মেলা প্রাঙ্গণে এসে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, শেষ দিনে যতক্ষণ পর্যন্ত করদাতারা মেলা প্রাঙ্গণে উপস্থিত থাকবেন, ততক্ষণ তাদের আয়কর রিটার্ন জমা নেয়া হবে। শেষ হিসেব পর্যন্ত কর আদায় ও সেবা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়বে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া না হলে জরিমানার মুখে পড়বেন করদাতারা। এক্ষেত্রে প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে জরিমানা গুনতে হবে। সময়মতো রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হলে এবং কোনো যথাযথ কারণ না দেখাতে পারলে পূর্ববর্তী বছরের প্রদেয় আয়করের ১০ শতাংশ জরিমানা (যেটি ১ হাজার টাকার কম হতে পারবে না) গুনতে হবে। অবশ্য নতুন করদাতার ক্ষেত্রে জরিমানা ৫ হাজার টাকা বেশি হবে না। কিন্তু পুরনো করদাতার ক্ষেত্রে এ জরিমানার পরিমাণ হবে পূর্ববর্তী বছরে প্রদেয় করের অর্ধেক। তবে তা ১ হাজার টাকার কম হবে না। সেক্ষেত্রে যাদের আয়করের পরিমাণ বেশি, তাদের জরিমানাও বেশি। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রত্যেক টিআইএন ধারীকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। বর্তমানে দেশে টিআইএন ধারীর সংখ্যা ৪০ লাখের ওপরে। যদিও গত বছর রিটার্ন দাখিল করে প্রায় ২১ লাখ করদাতা। প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে আয়কর মেলা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই মেলায় করদাতার সংখ্যা বাড়ছে। মূলত হয়রানিমুক্ত পরিবেশে আয়কর রিটার্ন দেয়ার সুযোগ থাকায় সাধারণ করদাতার বড় অংশই মেলায় এসে রিটার্ন দাখিল করছেন। কিন্তু করদাতাদের অভিযোগ, কর অফিসে হয়রানি এবং নানা ছুতোয় এক শ্রেণির অসাধু কর কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী বাড়তি টাকা দাবি করেন। এসব কারণে অনেকেই কর অফিসে গিয়ে কর প্রদানে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সম্প্রতি আয়কর মেলার উদ্বোধনকালে বলেছেন, আয়কর অফিসেও আয়কর মেলার মতো পরিবেশে রিটার্ন প্রদান কিংবা অন্যান্য কর সংক্রান্ত সেবা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করতে কর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তা কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ প্রমাণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×