ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দাম সহনীয় হতে আরও এক সপ্তাহ লাগবে

পেঁয়াজের বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন নীলফামারীর কৃষক

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

  পেঁয়াজের বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন নীলফামারীর কৃষক

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ পেঁয়াজের বাড়তি যত্নে এখানকার কৃষক মনোযোগী হয়ে মাঠে নেমেছে। ক্ষেতে নিড়ানিসহ চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দিনে ও রাতে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন নীলফামারীর চাষীরা। পেঁয়াজের বর্তমান পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বন করেছে কৃষক নিজেরাই। শুক্রবার সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে পেঁয়াজ চাষীরা এমনটাই জানালেন। পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে জেলায় পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন চাষীরা। আকাশচুম্বী দামে কেনাবেচার পর বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। এরই মধ্যে বাজারে উঠেছে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ। এদিকে পেঁয়াজের বাড়তি মূল্য দেখে বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি বাজারে আসবে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলেই সহনীয় পর্যায়ে আসবে পেঁয়াজের দাম। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলার ছয়টি উপজেলায় এ বছর এক হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জেলা সদরে ৫০০ হেক্টরে ডোমারে ২৫১ হেক্টরে, ডিমলায় ২৮২ হেক্টরে, জলঢাকায় ২১১ হেক্টরে, কিশোরীগঞ্জে ১৫০ হেক্টরে ও সৈয়দপুরে ৬ হেক্টর। গত অর্থ বছরে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ২৯০ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছিল এক হাজার ৩৯১ হেক্টর। জেলায় বন্যার প্রকোপ বেশি হওয়ায় আশানুরূপ পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারেনি চাষীরা। এবার পেঁয়াজ সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে নীলফামারী সদরে। এর মধ্যে জাত রয়েছে তাহেরপুর, ফরিদপুর ও বারী-১ উল্লেখ্যযোগ্য। এখনও মাঠ পর্যায়ে জমি চাষ বীজ বপণ অব্যাহত রয়েছে। জেলা সদরের গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোবাডাঙ্গা গ্রামের পেঁয়াজ চাষী সাইদুল ইসলাম জানান, যদি আবহাওয়া ভাল থাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাতে আমাদের পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, এবার বাজারে যে পরিমাণ পেঁয়াজের টান গেল তাতে মোটামুটি ভাল বাজার পাওয়ার আশা করছি। আর সপ্তাহখানেক পর পরিপক্ব পেঁয়াজ বাজারে তোলা যাবে। আবার এই গ্রামের অনেকেই কাঁচা পাতা পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করছেন। একই এলাকার পেঁয়াজ চাষী নূহ মিয়া জানান, এবারে আমি ৪০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছি। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ওই ৪০ শতাংশ জমির পেঁয়াজ বিক্রি হবে প্রায় এক লাখ টাকা। পেঁয়াজ চাষীরা জানায়, বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বেশি থাকায় আবাদে একটু বাড়তি যত্ন নেয়া হচ্ছে পেঁয়াজে। শীতের সকালের কুয়াশা উপেক্ষা করে নিড়ানিসহ জমি থেকে পেঁয়াজ চুরি হতে পারে এমন আশঙ্কায় দিনে ও রাতে পেঁয়াজের ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন তারা। এ জন্য পেঁয়াজ ক্ষেতে পলিথিন দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়েছে। সরেজমিনে, বিভিন্ন এলাকার পেঁয়াজের মাঠ ঘুরে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় (কন্দ) কাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকলে বিঘাপ্রতি ৪০-৪৫ মণ পেঁয়াজ ঘরে তোলা যাবে। বর্তমানে পাতা পেঁয়াজ বা কন্দ পেঁয়াজ প্রতিমণ এক হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, এ বছর নীলফামারী জেলায় কাটা (কন্দ) পেঁয়াজের আগাম চাষ হয়েছে ২১৭ হেক্টর জমিতে।
×