ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারি খাতের ঋণে নিম্নগতি

প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

বেসরকারি খাতের ঋণে নিম্নগতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আশানুরূপ বাড়ছে না বেসরকারি ঋণ। গত কয়েক মাস ধরে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিক কমছে। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ হয়েছে। যা আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোকে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে হচ্ছে। অন্যদিকে আশানুরূপ আমানত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। ফলে ব্যাংকে এখন পর্যাপ্ত নগদ অর্থ নেই। বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার এর অন্যতম কারণ। এছাড়া আর্থিক খাতের নানা কেলেঙ্কারি ও সঞ্চয়পত্রে সুদ বেশি হওয়ায় ব্যাংকে আমানত প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। ফলে একদিকে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে উচ্চ সুদহারের কারণে ঋণ নিতেও আগ্রহী নয় উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে বেসরকারি ঋণ কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। আর যে হারে বাড়ছে তা মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এত কম হারে বাড়লে কাঙ্খিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত লক্ষ্য ঠিক করেছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। যা গেল অর্থবছরের জুন পর্যন্ত লক্ষ্য ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছর (জুলাই-জুন) পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। বেসরকারি খাতের ঋণের বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ব্যাংকের উপর মানুষের আস্থা কমেছে। এতে প্রত্যাশা অনুযায়ী আমানত আসছে না। ফলে ব্যাংকে অর্থ সংকট রয়েছে। এছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে অনেক উদ্যোক্তা ঝুঁকি নিয়ে ঋণও নিতে চাচ্ছে না। এসব কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধির জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। তাই এ জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পাশাপাশি ঋণের চাহিদাও বাড়বে।
×