ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৪ তলার ছয় কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত

কাওরানবাজারে পেট্রোবাংলা ভবনে অগ্নিকাণ্ড

প্রকাশিত: ১১:১৫, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

কাওরানবাজারে পেট্রোবাংলা ভবনে অগ্নিকাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার কাওরানবাজারে পেট্রোবাংলা ভবনে বড় ধরনের অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে ভবনটির চৌদ্দ তলার ছয়টি কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে চারটি কক্ষ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আগুনে বেশ কিছু কাগজপত্র পুড়ে গেছে। ওই কাগজপত্রের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আছে বলে সেখানকার দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন। একটি কক্ষের এসি থেকে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় পেট্রোবাংলা ও ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকার কাওরানবাজার পেট্রোবাংলা ভবনে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটে। ১৫ তলা ভবনের ১৪ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়। তারা টিটিএল (টার্ন টেবল লেডার) দিয়ে বাইরে থেকে আগুন নেভাতে থাকে। পাশাপাশি ভবনের ভেতরে ঢুকেও তারা আগুন নেভায়। ফলে আগুন আর বাইরে ছড়াতে পারেনি। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জনকণ্ঠকে জানান, ছুটির দিন থাকায় ভবনটির ওই তলায় তেমন কেউ ছিলেন না। মূলত বাইরে থেকে লোকজন ভবনটি থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে। তারাই খবরটি দেন। এ ছাড়া ভবনটির নিচে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরাও ফায়ার সার্ভিসকে আগুন লাগার খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপণ করে। এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে রবিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা রয়েছে। পাশাপাশি পেট্রোবাংলার তরফ থেকেও আরেকটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অগ্নিকা-ের কারণসহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিলের পর জানা যাবে। ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, যানজট এবং ভবনে লোকজন না থাকার কারণে দ্রুততার সঙ্গে আগুন নেভানো সম্ভব হয়। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নির্বাপণ করা হয়। ফলে আগুন অন্য কোন ফ্লোরে ছড়াতে পারেনি। এমনকি ওই কয়েকটি রুমের বাইরেও আগুন ছড়াতে পারেনি। পেট্রোবাংলার জনসংযোগ কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, ছুটির দিন হওয়াতে অফিসে কোন লোকজন ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রুহুল আমিনসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অগ্নিকা-ের বিষয়ে রবিবার অফিস খোলার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হতে পারে। সরেজমিনে দেখা গেছে, পেট্রোবাংলা ভবনের ১৪ তলায় যেখানে আগুন লেগেছে, সেটি সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ঢাকার লিয়ার্জো অফিস। ১৪ তলার দক্ষিণ দিকের একেবারে কোনার দিকে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ফ্লোরের মাঝ বরাবর একটি পথের পশ্চিম দিকের পর পর পাঁচটি এবং পূর্ব দিকের একটিসহ মোট ছয়টি রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বোর্ড রুমটির সামান্য কিছু চেয়ারসহ অন্যান্য মালামাল আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালো ধোঁয়ার কারণে আশপাশের সব রুমের মালামাল কালো হয়ে গেছে। চৌদ্দ তলার একেবারের দক্ষিণ দিকে রান্না ঘর। এরপর অফিসারদের কক্ষ। তবে রান্না ঘরের তেমন কিছুই হয়নি। ফ্রিজসহ অন্যান্য সব কিছুই ঠিক আছে। রান্না ঘর লাগোয়া পর পর চারটি রুম পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। রান্না ঘরের পাশের রুমটির এসি বিস্ফোরিত হয়ে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেই আগুন পাশে থাকা তিনটি রুমে লেগে যায়। ফলে ওই তিনটি রুমও পুড়ে যায়। সেখানে কর্মকর্ত পেট্রোবাংলার কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খুব সম্ভবত এসি বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আগুনে বেশ কিছু ফাইলপত্রও পুড়ে গেছে। তারমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ ফাইলপত্র অক্ষত আছে। একটি রুমের টেবিলের ওপর সাতটি বস্তায় নথিপত্র রাখা হয়েছে। সেগুলো অক্ষত আছে।
×