ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে দুর্নীতি তদন্তে এসে অভিযুক্তের বাসায় ভূরিভোজ!

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

কুড়িগ্রামে দুর্নীতি তদন্তে এসে অভিযুক্তের বাসায় ভূরিভোজ!

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ চিলমারী উপজেলায় তদন্তের নামে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বাসায় ভূরিভোজ করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। তাদের এমন আচরণে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষক সমাজে। জানা গেছে,উপজেলার দক্ষিণ রাধাবল্লভ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্লিপ গ্রান্ডের-৫০ হাজার, রুটিন মেনটেন্যান্সের-৪০ হাজার এবং প্রাক প্রাথমিকের ১০ হাজার টাকাসহ মোট বরাদ্দ দেয়া হয় এক লাখ টাকা। চলতি বছর জুন মাসে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা হলেও ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি এবং কৌশল অবলম্বন করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে বাকি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ ওঠে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, একটি সাধারণ দেয়ালঘড়ি ভুয়া বিল দেখিয়ে মূল্য দেখানো হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। এছাড়া পুরাতন বুক সেলফ এবং ডিজিটাল হাজিরা মেশিন ক্রয় দেখান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এই সংক্রান্ত দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে যান। এ সময় তদন্তের নামে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দাওয়াত গ্রহণ করে ভূরিভোজ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে। শিক্ষকের বাসায় ভূরিভোজ করায় তা এলাকায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। কর্মকর্তাদের এমন ভূরিভোজের কারণে উপজেলাজুড়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সহকারী শিক্ষক জানান, নিউজ হওয়ার পর রবিবার প্রধান শিক্ষক ৪টি নতুন দেয়ালঘড়ি এনে স্কুলে লাগিয়েছেন। এছাড়া তারা বলেন, বৃহস্পতিবার টিও, এটিও স্যারসহ অনেকেই এসেছিল স্কুলে। পরে তারা সবাই প্রধান শিক্ষকের বাসায় দুপুরের খাবার খেয়েছেন। কর্তারা যদি অনিয়মকারীদের প্রশ্রয় দেয় তাহলে দুর্নীতি দূর হবে না, বরং বাড়বে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক বলেন,স্যাররা এসেছিল স্কুলে তদন্ত করার জন্য। পরে আমার বাসায় চা-কফির দাওয়াত দিয়েছিলাম। এ বিষয়ে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধের সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে কোন কর্মকর্তা দাওয়াত খেতে পারে না। এটা চরম অনুচিত। কেননা, এতে দুর্নীতি করতে উৎসাহ দেয়া হয়। যে কর্মকর্তা এই কাজ করেছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু সালেহ্র সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমরা স্কুলে গিয়েছিলাম দেখার জন্য; তবে ভূরিভোজের কথা তিনি এড়িয়ে বলেন, তেমন কিছু না। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এডব্লিউএম রায়হান শাহ্ বলেন, বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর তা দেখার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে; তবে ভূরিভোজের বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে আমি ক্ষতিয়ে দেখব।
×