ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীর চারটি আয়রন ব্রীজ এখন মরণ ফাঁদ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

আমতলীর চারটি আয়রন ব্রীজ এখন মরণ ফাঁদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ আমতলীর চারটি আয়রন ব্রীজ এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। তিন উপজেলার দের লক্ষ মানুষ চরম দূর্ভোগে রয়েছে। প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ পাঁচ বছরেও ব্রীজ নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে ব্রীজের ভাঙ্গা অংশে কাঠের পুল দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। দ্রুত এ ব্রীজ চারটি নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালী সদর উপজেলার সীমানায় মানজান খালে গুলিশাখালী ইউনিয়নের উত্তর কালামপুর আয়রন ব্রীজ, ২০০৮ সালে আমতলী-গলাচিপা উপজেলার সীমানা দিয়ে চাউল খালের চাউলা বাজার আয়রন ব্রীজ, ২০০৭ সালে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের তাফালবাড়ীয়া খালে সোনাখালী বাজার আয়রন ব্রীজ ও ২০১০ সালে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশবাড়িয়া খালের আয়রন ব্রীজ স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগ নির্মাণ করে। এ চারটি আয়রন ব্রীজের ভেঙ্গে পরার ধরন একই রকম। প্রতিটি ব্রীজের মধ্যখানের অংশ ভেঙ্গে খালে পরে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করায় এ ব্রীজগুলোর দ্রুত ভেঙ্গে পরেছে। আমতলী ও পটুয়াখালী সদর দুই উপজেলার সেতু বন্ধন উত্তর কালামপুর ব্রীজটি ২০১৬ সালে ভেঙ্গে যায়। গত তিন বছর ধরে ব্রীজটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। ব্রীজটি ভেঙ্গে পরায় উত্তর কালামপুর নুরানী দাখিল, ন.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসাসহ সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ চরম দূর্ভোগে পরে ৫০ হাজার মানুষ। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে পরেছে। আমতলী-গলাচিপার উপজেলার চাউলা বাজার ব্রীজটি ২০১৫ সালে ভেঙ্গে পরে। ব্রীজটি ভাঙ্গার দুই উপজেলার ৫০ হাজার লোক চরম দূর্ভোগে পরেছে। গত চার বছর ধরে এ ব্রীজটি ভাঙ্গা অবস্থায় পরে আছে। এ ব্রীজটি ভেঙ্গে পরায় দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া এ ব্রীজ দিয়ে চাউলা সরকারী, পূর্ব আঠারোগাছিয়া সরকারী, ছৈলাবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৮ টি স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হয়। ২০১৪ সালে সোনাখালী বাজার ব্রীজের মাঝখানের অংশ ভেঙ্গে পরে। এতে দূর্ভোগে পরেছে ওই এলাকার ৩০ হাজার মানুষ। পাঁচ বছর ধরে এই ব্রীজটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে আছে। এ ব্রীজ দিয়ে সোনাখালী স্কুল এন্ড কলেজ ও সোনাখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঁচটি স্কুল ও মাদ্রসার ছাত্র ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। ২০১৬ সালে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া ব্রীজের মাঝখানের অংশ ভেঙ্গে পরে। এতে দূর্ভোগে পরে ওই এলাকার ২০ হাজার মানুষ। এ ব্রীজ দিয়ে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জেবি সেনের হাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫ টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যেতে হয়। ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ায় খেয়া নৌকায় দিয়ে ওই শিক্ষার্থীরা ও এলাকার মানুষ পারাপার হচ্ছে। চারটি আয়রন ব্রীজের কারনে তিন উপজেলার দের লক্ষ মানুষ সীমাহীন দূর্ভোগ পরেছে। নিরুপায় হয়ে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে ব্রীজের উপরে কাঠের পাটাতন দিয়ে পুল নির্মাণ করে চলাচল করছে। স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগকে জানানো হলেও তারা গত পাঁচ বছরেও ব্রীজগুলো নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেয়নি। স্থানীয়রা দ্রুত এ ব্রীজ চারটি নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন। রবিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, ব্রীজ চারটির মধ্যখানের অংশ ভাঙ্গা। স্থানীয়রা ভাঙ্গা অংশে কাঠ দিয়ে পুল নির্মাণ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, ওই ব্রীজ চারটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×