ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘যদি বাঁচতে চাও আত্মসমর্পণ কর’ - ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

 ‘যদি বাঁচতে চাও আত্মসমর্পণ কর’ - ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১

১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। মিত্র ও মুক্তিবাহিনী বীরদর্পে দেশের অধিকাংশ জেলায় বিজয় কেতন উড়িয়ে ঢাকা দখলের জন্য মরিয়া। রণাঙ্গনে চতুর্দিক থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পাকবাহিনী। মাত্র একদিন আগেই বেতারসহ বিমানে হাজার হাজার লিফলেট ছড়িয়ে পাক হানাদারদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায় মিত্রবাহিনী। মিত্রবাহিনী দ্রুত ঢাকা পৌঁছার লক্ষ্য নিয়ে চারদিক থেকে অগ্রসর হচ্ছে। মিত্রবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমরা এখন বড় ধরনের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেন-পাকিস্তানীরা যদি মাটি কামড়ে ঢাকায় লড়াই চালাতে চায় আপনি কী করবেন? জেনারেল অরোরা জবাব দিলেন, ওরা কী করবে জানি না। তবে আমরা বড় ধরনের লড়াইয়ের জন্যই প্রস্ত্রত। সাংবাদিকরা আবারও প্রশ্ন করলেন- ঢাকাকে মুক্ত করার পথে আপনার সামনে সবচেয়ে বড় বাধা কী? অরোরা জানালেন-নদী যদিও বড় বাধা, কিন্তু সে বাধা অতিক্রমের সব ব্যবস্থা আমরা করে ফেলেছি। আমাদের পদাতিক সৈন্য ও রসদ পারাপারের ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে। আর আমাদের পিটি-৬৭ জলচর ট্যাঙ্কগুলো নদী পেরিয়ে যেতে পারবে। মিত্রবাহিনী দ্রুত ঢাকা পৌঁছাবার লক্ষ্য নিয়ে চারদিক থেকে অগ্রসর হচ্ছে। পূর্বে একটি বাহিনী যাচ্ছে আশুগঞ্জ, দাউদকান্দি এবং চাঁদপুর। পশ্চিমে আর একটি বাহিনী পৌঁছেছে মধুমতি নদীর তীরে। আর একটি বাহিনী কুষ্টিয়া মুক্ত করে গোয়ালন্দ ঘাটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। হালুয়াঘাট থেকে এগিয়ে আসা বাহিনীও পৌঁছে গেছে ময়মনসিংহের কাছাকাছি। মিত্রবাহিনীর বিমান ইউনিট টাঙ্গাইলের নিকটবর্তী কোন এক এলাকায় ৭শ’ ছত্রীসেনা এবং ৮০ টন সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। বাংলাদেশের বিজয় অনিবার্য। জয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এটা বুঝতে পেরেও পাক শাসকরা তাদের বন্ধুরাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে স্বাধীনতা ঠেকাতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে বাঙালী জাতিকে নেতৃত্বশূন্য করতেও গোপন ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয় তারা। রাজশাহী টাউন থানার ওসি শামসুল আলমের নেতৃত্বে হানাদার বাহিনী অতর্কিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে ঢুকে শওকত রেজা ও অন্য চারজনকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে রেজাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় তা প্রথমে কেউ অনুমান করতে পারে নাই। তবে তিন/চার দিন তারা একটি অন্ধকার কক্ষে আবদ্ধ থাকে। রেজার সহপাঠী সাহাবউদ্দিন আহমদ পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়।’ পাকসেনারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলকে প্রায় গোটা ৯ মাস ক্যান্টনমেন্ট হিসাবে ব্যবহার করেছিল। এই হলের পেছনে দীর্ঘ ১ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে ছিল বধ্যভূমি। এই বধ্যভূমিতে হাজার হাজার নারী-পুরুষকে পাকসেনা ও তাদের দোসররা নিয়ে হত্যা করেছে। চীনের অস্থায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চি পেং ফি এক ভাষণে বলেন- ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরু করেছে। ভারত তথাকথিত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রতিনিধিত্বকারী পাকিস্তানী দলের নেতা মাহমুদ আলী দেশে ফিরে সাংবাদিকদের কাছে সোভিয়েত ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, সোভিয়েতের উচিত বিশ্ব শান্তির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ভারতের পাশ থেকে সরে দাঁড়ানো। চীন ও আমেরিকার সমর্থনের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, পাকিস্তান তাদের নির্ভীক ও ঐতিহাসিক সমর্থনের জন্য অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এইদিন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভা ও আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি জাতীয় কংগ্রেসের সমন্বয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভারত ও ভুটান বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের পর উপদেষ্টা পরিষদের এটিই ছিল প্রথম বৈঠক। বৈঠকে মুক্ত এলাকায় বেসামরিক প্রশাসনের কার্যক্রম শুরু এবং খাদ্য, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিকেলে ভারতীয় বিমানবাহিনী জামালপুরে হানাদার ঘাঁটির ওপর এক ঘণ্টা ধরে কয়েক হাজার পাউন্ডের বোমা নিক্ষেপ করে। এর ফলে পাকসেনারা পালাতে আরম্ভ করে। জামালপুর থেকে পালিয়ে যাবার সময় ভারত-বাংলা যৌথ বাহিনীর কাছে ৬শ’ হানাদার সেনা ধরা পড়ে। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মানেকশ বাংলাদেশে পাকিস্তানী সৈন্যদের উদ্দেশ করে বলেন, ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তোমরা যদি বাঁচতে চাও ভারতীয় বাহিনীর কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ কর। নতুবা তোমাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হবে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর প্রবল আক্রমণের মুখে সকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতর ঢাকা থেকে প্রথমবারের মতো জেনারেল নিয়াজী সঙ্কটপূর্ণ পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেন। গুরুতর পরিস্থিতিতে তিনি তার সরকারের কাছে আবেদন জানাতে থাকে চীন যেন অবিলম্বে ভারত ভূখ-ে আক্রমণ চালায়, তা না হলে পরাজয় ঠেকানো যাবে না। রাওয়ালপিন্ডিতে পাঠানো এক সঙ্কেত বার্তায় বলা হয়Ñ পরিস্থিতি নিদারুণ সঙ্কটপূর্ণ। আকাশে শত্রুর প্রভুত্বের কারণে পুনর্বিন্যাসকরণ সম্ভব নয় বলে সঙ্কেতবাণীতে বলা হয়। এ বার্তায় স্পষ্ট হয়ে যায়, দখলদার পাকবাহিনীর মনোবল একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। তারা আত্মসমর্পণের পথ খুঁজছে। পাকিস্তানের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমিন রেডিও পাকিস্তান থেকে ভাষণ দেন। তিনি জাতির উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে ‘ভারতীয় হামলা’ মোকাবেলা ও ‘দুরভিসন্ধি’ নস্যাত করার আহ্বান জানান। মিত্রবাহিনীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের নগ্ন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাত করে দেয়ার জন্য পাকিস্তানের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা এই দিনও থেমে থাকেনি। সিআইএ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অবহিত করে বাংলাদেশ প্রশ্নে চীন ভারতের ভূমিতে আক্রমণ করবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ সময় পাকিস্তানকে সামরিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। সিআইএ এর সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের বিমান ও সাঁজোয়া বাহিনীর ধ্বংস সাধন পাকিস্তানী বাহিনীর কাশ্মীর দখলের জন্য ভারতীয় অভিসন্ধির অভিযোগ আনার পর প্রেসিডেন্ট নিক্সন অপেক্ষমাণ মার্কিন সপ্তম নৌ-বহরকে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। ‘অত্যাসন্ন হামলা থেকে পশ্চিম পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য সপ্তম নৌবহরকে করাচীর সন্নিকটে আরব সাগরে না পাঠিয়ে তার প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পূর্বে বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয় এবং এই মহান দায়িত্ব পালনের জন্য কথিত ভারতীয় প্রচেষ্টা উদঘাটিত হওয়ার প্রায় দু’সপ্তাহ আগেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় সপ্তম নৌবহরের এখতিয়ার বঙ্গোপসাগর অবধি সম্প্রসারিত করা হয়। যাতে ভারত শত্রুপরিবেষ্টিত হয় এবং পাকিস্তানী সৈন্যরা নিরাপদে সরে আসতে পারে। বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তান বাহিনী যখন পর্যুদস্ত, আত্মসমর্পণ ছাড়া যখন তাদের আর কিছুই করার নেই, ঠিক তখনই বঙ্গোপসাগরের দিকে আসতে থাকে মার্কিন সপ্তম নৌ-বহর। বেপরোয়া নিক্সন-কিসিঞ্জার। হেরে যাচ্ছে তারা ইন্দিরার কাছে। এই খবরে মুক্তি বাহিনীর অগ্রগামী দলগুলো বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাইফেলের ব্যারেল শূন্যে তুলে একের পর এক গুলি চালাতে থাকে। এক ভয়ঙ্কর ক্রোধের বহিপ্রকাশ। এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। স্লোগান ওঠে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক। কিন্তু মার্কিন শেষ কৌশলও অকার্যকর পরিণত হয়। বাংলাদেশ প্রশ্নে শ্রীমতি গান্ধীর যুক্তি, দৃঢ়তা এবং বিস্ময়কর আন্তর্জাতিক জনসংযোগের ফলে বিশ্ব জনমত তখন বাংলাদেশের পক্ষে আসে। এমন কি আমেরিকার মিত্ররাও সটকে পড়ে। অবশ্য এই খবরটির সঙ্গে আরেকটি খবর আসে। কুড়িটি রুশ রণতরীও যাত্রা করেছে বঙ্গোপসাগরের পথে। অতএব ভয় নেই। নয়া দিল্লীর কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে জানান, বাংলাদেশ থেকে দখলদার পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীকে সরিয়ে নেয়ার কোন রকম এখতিয়ার মার্কিন নৌবহরের নেই। কারণ পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে এখন ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেন, পাকিস্তানের সৈন্য ও বেসামরিক লোকজন সরিয়ে দিতে বঙ্গোপসাগরের যদি মার্কিন নৌ-বহর ঢুকতে চায় তাহলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। এই কাজকে আমরা শত্রুতা বলে গণ্য করব। ঘটনার ও ব্যাখ্যার এসব অসঙ্গতি বৃহত্তর যুদ্ধের ডামাডোলে চাপা পড়ে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মুক্তপ্রায় বাংলাদেশে পাকিস্তানী বাহিনীর সর্বাত্মক পতন রোধের জন্য ‘নৌ, বিমান ও স্থল তৎপরতা চালানোই’ যে সপ্তম নৌ-বহরের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল তা অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে সমর্থিত। স্পষ্টতই এই শক্তিশালী নৌ-বহরের গঠন ছিল বঙ্গোপসাগরে ভারতের নৌ-অবরোধ ব্যর্থ করা, পাকিস্তানী স্থল বাহিনীর তৎপরতায় সাহায্য করা, ভারতীয় বিমান তৎপরতা প্রতিহত করা, মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়া এবং মার্কিন নৌ-সেনা অবতরণে সাহায্য করার উপযোগী । কিন্তু মার্কিন নৌ-বহরের জন্য বঙ্গোপসাগর ছিল ৪-৫ দিনের যাত্রাপথ। কিন্তু নিক্সনের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। কারণ বীর সন্তানদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। সপ্তম নৌ-বহর যখন যাত্রা শুরু করে তখন অর্থাৎ ৯-১০ ডিসেম্বরে ভারত ও বাংলাদেশের মিলিত বাহিনীর অভিযানের মুখে পাকিস্তানী বাহিনী দ্রুত পশ্চাদাপসরণে ব্যস্ত। দ্রুত মুক্ত হতে থাকে ঢাকার আশপাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান একের পর এক অঞ্চল। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা বেলা ১১টায় শহরের চারদিক ঘিরে ফেললে পৌর এলাকায় কুন্ডুপাড়ায় ক্যাম্পের আল-বদর কমান্ডার ফিরোজ বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয়। এ সংবাদে জেলা শহরে অবস্থানরত পাক সেনারা দ্রুত এসে শহর ঘিরে গণহত্যা শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা পুনরায় সংগঠিত হয়ে শহর ঘিরে রাজাকার পাক-হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা করলে তারা পালিয়ে যায়। এদিকে, কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার খবরে দাউদকান্দি এবং চান্দিনার মুক্তিযোদ্ধারা দ্বিগুণ উৎসাহে পাকসেনাদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গত রাতে মুক্তিযোদ্ধারা উত্তর এবং দক্ষিণ পাশ থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়া পাক সেনাদের ওপর হামলা চালালে তারা পাল্টা জবাব দিতে দিতে পশ্চিম দিকে হাঁটতে থাকে এবং ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে যে জায়গাগুলো শত্রুমুক্ত হয়, তাদের অন্যতম হলো দাউদকান্দি, গাইবান্ধা, কপিলমুনি, ত্রিশাল, নকলা, ঈশ্বরগঞ্জ, নেত্রকোনা, পাইকগাছা, শ্রীপুর, অভয়নগর, পূর্বধলা, চট্টগ্রামের নাজিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকা। ভারতের হাফলং এর বিএসএফ ট্রেনিং সেন্টার হতে ট্রেনিংপ্রাপ্তদের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল গ্রুপ কমান্ডার নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে ৯ ডিসেম্বর কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ও বালুখালীতে গেরিলা অপারেশন পরিচালনা করে। এ যুদ্ধে গ্রুপ কমান্ডার নাজিম উদ্দিন এবং মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ জাফর শহীদ হন। দাউদকান্দি শত্রুমুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত মেঘনার সম্পূর্ণ পূর্বাঞ্চল মুক্তিবাহিনীর দখলে আসে। এর আগে কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীর হামলায় টিকতে না পেরে পাক হানাদার বাহিনী ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×