ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বস্ত্র খাতের নতুন কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা ঠকছেন বেশি

প্রকাশিত: ১২:১১, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

বস্ত্র খাতের নতুন কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীরা ঠকছেন বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ২০১০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে মোট ১০৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে ৩৪টিই ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানি। তালিকাভুক্তির দৌড়ে এগিয়ে ছিল এ খাতের কোম্পানিগুলো। বর্তমানে পুঁজিবাজারে মোট ৫৫টি বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য এখন অভিহিত দরের নিচে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্টদের মতে তালিকাভুক্তির দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও এ খাতের কোম্পানি থেকে বেশি ঠকছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই এ ধরনের কোম্পানি অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জের (বিএসইসি) আরও সর্তক থাকা দরকার। তাদের অভিমত তালিকাভুক্তির পর বেশিরভাগ কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে। তারপরও এ খাতের কোম্পানির প্রতি আস্থা ধরে রেখেছে বিএসইসি। বর্তমানে অভিহিত দরের নিচে থাকা ১৮ কোম্পানি হচ্ছে- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সি এ্যান্ড এ টেক্সটাইল, ঢাকা ডায়িং, ডেলটা স্পিনিং, ফ্যামেলিটেক্স, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ম্যাকসন স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং, মিথুন নিটিং, নূরানী ডায়িং, আরএন স্পিনিং, সাফকো স্পিনিং, তালু স্পিনিং, তুং হাই নিটিং, জাহিন স্পিনিং এবং জাহিন টেক্সটাইল। এর মধ্যে জাহিন টেক্সটাইল, তুংহাই নিটিং, তাল্লু স্পিনিং, আরএন স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট, ফ্যামেলিটেক্স, ঢাকা ডায়িং এবং সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইলের শেয়ার বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকার কমে। ফলে এসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। এদিকে বর্তমানে পুঁজিবাজারে বস্ত্রখাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে রয়েছে ১৪টি প্রতিষ্ঠান। পুঁজিবাজারে থাকা ২২ খাতের ফান্ড ও কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি রয়েছে এ খাতে। এসব কোম্পানির বছরের পর বছর শেয়ারহোল্ডারদের কোন রিটার্ন দিতে পারছে না। এ খাতের কয়েকটি কোম্পানি তালিকাচ্যুত হওয়া ঝুঁকিতে রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানির শীঘ্র মালিকানা বদল হবে পুঁজিবাজারে এমন গুঞ্জনও শোনা যায়। এদিকে বস্ত্র খাতের কোম্পানির বোনাস শেয়ার দেয়ার হারও বেশি। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় এ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানিই শুরু থেকেই বোনাস শেয়ার ইস্যু করে। সেই তুলনায় তাদের ব্যবসা বাড়ে না বা প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত উন্নয়নও হয় না। যার ফলে আগ্রহ কমতে থাকে এসব শেয়ারের। শুরু হতে থাকে দরপতন। ফলে এখানে যাদের বিনিয়োগ থাকে তারা লোকসানের মুখে পড়ে যায়। সংশ্লিষ্টদের মতে, যখন একটি খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের অবস্থা নাজুক হয় তখন বিএসইসির উচিত ওই শ্রেণীর কোম্পানির অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে একটু হিসাবি হওয়া। নতুন ইস্যু আনতে হবে এটা ভেবে কোম্পানির অনুমোদন দেয়া ঠিক হবে না। কারণ দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়া চেয়ে না হওয়া অনেক ভাল। এতে পুঁজিবাজার এবং বিনিয়োগকারী উভয়-ই উপকৃত হয়। এ প্রসঙ্গে মডার্ন সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুজিস্তা-নুর-ই নাহারিন বলেন, শুধু বস্ত্র খাতই নয়। অন্যান্য খাতের দুর্বল কোম্পানি রয়েছে। সেজন্য আইপিওতে ভাল ভাল প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পাওয়া জরুরী। দুর্বল কোম্পানির অনুমোদন পাওয়ার চেয়ে না পাওয়াই ভাল।
×