ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্ব) সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ ১৫০ কোটি ডলার আয় করেছে

সেবা রফতানিতেও ধাক্কা

প্রকাশিত: ১২:১৪, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

সেবা রফতানিতেও ধাক্কা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সুখবর দিয়ে গত অর্থবছর শেষ করলেও চলতি অর্থবছরের শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে সেবা রফতানি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্ব) সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ ১৫০ কোটি ডলার আয় করেছে। রফতানির এই পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ২৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই তিন মাসে সেবা রফতানি থেকে ২১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৫২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। পণ্য রফতানির মতো সেবা রফতানিতেও বেশ ভাল প্রবৃদ্ধি নিয়ে শেষ হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছর। গত অর্থবছরে সেবা রফতানি করে বাংলাদেশ ৬৩৫ কোটি (৬.৩৫ বিলিয়ন) ডলার আয় করে। ওই অঙ্ক ছিল ২০১৭-’১৮ অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় হয়েছিল প্রায় ২৭ শতাংশ। ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সেবা খাতের মোট রফতানি আয়ের মধ্যে ১৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। অর্থাৎ মোট আয়ের ৯৮ শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা রফতানি করে। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মার্চেন্টিংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়। কোন অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোন অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মার্চেন্টিং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মার্চেন্টিং রফতানি আয় হিসাব করা হয়। দেশের স্থল, সমুদ্র বা বিমান বন্দরে বিদেশী পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা-যেমন জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা-কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে সরকারী পণ্য ও সেবা রফতানি থেকে। এ উপখাত থেকে এসেছে ৬৭ কোটি ডলার। অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে অন্যান্য ব্যবসায় সেবা থেকে এসেছে ২১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি থেকে আয় হয়েছে ১২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সেবা (সমুদ্র, বিমান, রেল এবং সড়ক) থেকে ১৫ কোটি ১ লাখ ডলার আয় হয়েছে। আর্থিক সেবা খাত থেকে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার এবং ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার আয় হয়েছে। নির্মাণ সেবা থেকে এসেছে ৭ কোটি ৭২ লাখ ডলার। ইপিবি’র তথ্য ঘেটে দেখা যায়, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের মোট রফতানি আয়ের ৯৮ শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা রফতানি থেকে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ চার হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ (৪০.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অংক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি। আর আগের অর্থবছরের চেয়ে আয় বেশি এসেছিল ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। পণ্য ও সেবা খাত মিলে গত অর্থবছরে মোট রফতানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৬৮৭ কোটি ৩৫ লাখ (৪৬.৮৭ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য রফতানির লক্ষ্য ধরা ছিল ৩ হাজার ৯০০ কোটি (৩৯ বিলিয়ন) ডলার। আর সেবা রফতানির লক্ষ্য ছিল ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার। দুইটা মিলিয়ে মোট লক্ষ্য ছিল ৪ হাজার ৪০০ কোটি (৪৪ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাত মিলিয়ে মোট রফতানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫৪ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে পণ্য রফতানির লক্ষ্য হচ্ছে ৪৫ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। আর সেবা রফতানি থেকে ৮ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সরকার।
×