ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ আগামীকাল বুধবার ১১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল হানাদারমুক্ত দিবস। টাঙ্গাইলের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলার সূর্যসেনারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবল থেকে টাঙ্গাইলকে মুক্ত করে উত্তোলন করেন স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। দিনটিকে স্মরণ করে টাঙ্গাইলবাসী তাই এখনো আনন্দে উদ্বেলিত হয়; বাঁধভাঙা আনন্দের স্রোত বয়ে যায় টাঙ্গাইলে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে; যতদিন বাঙালি থাকবে’ ততদিনই ১১ ডিসেম্বরের আনন্দ আসবে নতুনের স্বাদ নিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইল নানাদিক থেকে অসামান্য ইতিহাস সৃষ্টি করে। এখানকার অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসীকতাপূর্ণ যুদ্ধের কাহিনী দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বজুড়ে। বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গঠিত ও পরিচালিত ‘কাদেরিয়া বাহিনী’র বীরত্বের কথা স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শুরুতেই এখানে ‘টাঙ্গাইল জেলা স্বাধীন বাংলা গণমুক্তি পরিষদ’ গঠন করা হয়। চলতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। ২৬ মার্চ থেকে গ্রামে-গ্রামে যুবকরা সংগঠিত হয়। ৩ এপ্রিল মির্জাপুরের গোড়ান-সাটিয়াচড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের অবরোধ ভেঙে হানাদারবাহিনী টাঙ্গাইল শহরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদ স্থানে চলে যান। অল্পদিনের মধ্যেই সেদিনের তরুণ-যুবক ছাত্রলীগ নেতা কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে বিশাল ‘কাদেরিয়া বাহিনী।’ শুরু হয় বিভিন্নস্থানে হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ। খন্দকার আবদুল বাতেনের নেতৃত্বে গঠিত ‘বাতেন বাহিনী’ও অনেক জায়গায় হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। টাঙ্গাইলে মুক্তিযুদ্ধে প্রধান ভূমিকা পালন করে কাদেরিয়া বাহিনী। চারদিক থেকে তাদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকবাহিনী। ১০ ডিসেম্বর বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের অদূরে পৌলিতে মিত্রবাহিনীর প্রায় দুই হাজার ছত্রীসেনা অবতরণ করায় হানাদারদের মনোবল একেবারেই ভেঙে পড়ে। তারা ছুটতে থাকে ঢাকার দিকে। ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকে বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করতে থাকেন। টাঙ্গাইল শহর শত্রুমুক্ত হয়। মানুষ নেমে আসে রাস্তায়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শহর...। এদিকে টাঙ্গাইল মুক্তদিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইল পৌরসভা ৬দিন ব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। প্রথমদিন ১১ ডিসেম্বর বুধবার সকালে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শান্তির কপোত ও বেলুন উড়ানো, সূচনা সঙ্গীত ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে। শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক। বিকেলে আয়োজন করা হবে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
×