ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে মেয়র আতিক

মহাখালী টার্মিনাল রাখা হবে না, সরিয়ে নেয়া হবে

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

মহাখালী টার্মিনাল রাখা হবে না, সরিয়ে নেয়া হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ভেতরে চলাচল করবে সিটি বাস আর শহরের বাইরে থাকবে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল। তাই মহাখালীতে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল কোনক্রমেই রাখা হবে না। অবশ্যই এখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনের প্রধান সড়ক ও আশপাশে দু’দিকের সড়কে কোন প্রকার বাস দাঁড় না করাতে পরিবহন মালিকদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকার সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধে মহাখালী বাস টার্মিনালে বাস মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মহাখালী বাস টার্মিনাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম। এছাড়া ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্লাহ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হোসেন, শফিউললাহ, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, রাজধানী বা শহরের ভেতরে ১৯৮৪ সালে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল স্থাপন করাই ভুল ছিল। যার ফলে রাজধানীর চলমান ট্রাফিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, কোনভাবেই ঢাকার ভিতরে আন্তঃজেলা বাস চলাচল করতে পারে না। এর ফলে যানজট তৈরি হয়। মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। তাছাড়া মূল সড়কে বাস পার্কিং করার কারণে যানজট আরও বেড়ে যায়। এ সময় মেয়র মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনের প্রধান সড়কে কোন বাস দাঁড় না করাতে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা চাই সকল বাস নির্দিষ্ট স্থানে থামুক ও যাত্রী উঠানামা করুক। আমরা চাই সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলুক। আতিকুল ইসলাম বলেন, পাঠ্যপুস্তকে গরুর রচনা পড়ানোর পরিবর্তে নিরপদ সড়ক, ট্রাফিক আইন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, শুধু রাজধানী ঢাকা থেকেই সরকারের মোট জিডিপি প্রবৃদ্ধির ৩২ ভাগ আসে। বর্তমানে বিদেশীরাও বলছে যে ঢাকার রাস্তায় ভয়াবহ যানজট। এ থেকে আমাদের সবার চেষ্টায় উত্তরণ ঘটাতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সড়কে শৃঙ্খলা ফিরলে ঢাকার জিডিপির হার ও দেশের মোট জিডিপির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অনেকাংশে বেড়ে যাবে। মেয়র বলেন, ৩০ বছর আগে কোরিয়ায় ভয়াবহ যানজট হতো। দিল্লীর যানজটও তীব্র ছিল। বর্তমানে কোরিয়া ও দিল্লী যানজট থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমাদেরকেও ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন করে ট্রাফিক জ্যাম থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বাসে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের গৃহীত বাস র‌্যাশনালাইজেশনের কাজও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় যত্রতত্র বাস রাখা ও ওভারটেকিং প্রতিযোগিতার কারণে সড়কে ভয়াবহ ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়। মূলত কন্ট্রাক্ট ভিত্তিক বাস চলাচলের কারণেই সড়কে কোনভাবেই শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। যার ফলে রাজধানীর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নেই। আমরা ভেবে দেখেছি সড়কে বাসের শৃঙ্খলা আনয়নে ফ্র্যাঞ্চাইজের প্রচলন করা ছাড়া কোন গতি নেই। যার জন্য ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকে সরকার দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা তাকে সহায়তা করছি। তবে যানজট নিরসনে আমরা যা যা প্রয়োজন তা করতে সর্বোচ্চ সহায়তা করব। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার বাইরে আন্তঃজেলা বাসের জন্য নতুন বাস টার্মিনাল নির্মাণে সিটি কর্পোরেশন সহায়তা করবে। সিটি কর্পোরেশন থেকে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে নতুন জায়গার সন্ধান করা হবে। বাস মালিক শ্রমিকদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আপনারাও খুঁজুন। দেখুন আশপাশে কোথাও ভাল স্থান পেলে আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের সঙ্গে যাব। মেয়র বলেন, রাজধানী ঢাকা অপরিকল্পিত গড়ে উঠেছে। এ থেকে বের হতে হলে রাস্তায় বাস বে তৈরি করতে হবে। ক্যান্টনমেন্ট গেলে শৃঙ্খলা দেখা যায় কারণ সেখানে বাস বে সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি করা আছে। আমাদেরও রাস্তায় বাস বে তৈরি করতে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক ও জনপথের জমি বরাদ্দ দেবেন বলে জানিয়েছেন। ডিএনসিসি বাস বে এর স্থান খুঁজছে ও কিভাবে তৈরি করা যায় তার নক্সা করছে।
×