ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টিপু রাজাকারের ফাঁসির রায়ে রাজশাহীর শহীদ পরিবারে স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

টিপু রাজাকারের ফাঁসির রায়ে রাজশাহীর শহীদ পরিবারে স্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর কুখ্যাত রাজাকার ও ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা চিহ্নত যুদ্ধাপরাধী আবদুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতানের প্রাণদ- দেয়ার স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও হামলা-নির্যাতনের শিকার পরিবার। তারা রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। আদালতে রাজশাহীর শীর্ষ রাজাকারের ফাঁসি হওয়ায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। রায় ঘোষণার পর বুধবার সকালে রাজশাহী মহানগরের রাণীনগর শহীদ মিনারে সকাল থেকে আসতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবারের সদস্যরা। রায় ঘোষণার পর সেখানে তারা মিষ্টি বিতরণ করেন। নগরীর রামচন্দ্রপুর এলাকার জয়নাব বলেন, আমরা সে সময় দেখেছি প্রকাশ্য টিপু রাজাকাররা ঘুরে বেড়াতো। আমাদের খুব খারাপ লাগত, কষ্ট লাগতো। তবে আমরা কিছু করতে পারতাম না ভয়ে। রায় প্রকাশের মামলায় সাক্ষী দেওয়ার পর রায় প্রকাশের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শহীদ পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন প্রত্যাশিত এই ফল এখন দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজশাহী অঞ্চলের এই রাজাকারদের শাস্তির মাধ্যমে বিচার কাজ শেষ হবে তবেই তারা শান্তি পাবেন। টিপু রাজাকারের হাতে নিহত শহীদ মন্ডলের ছেলে শাহ জামান বলেন, আমার বাবাকে তারা ধরে নিয়ে হত্যা করেছিল। লাশের কোন হদিশ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল টিপু রাজাকার। তার ফাঁসির রায় হওয়ায় খুব আনন্দ লাগছে। অন্তত আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে। রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান বলেন, সে সময় প্রকাশ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা তাদের পরিবারের উপর নির্যাতন চালাতো টিপু রাজাকার ও তার দলবল। তাদের রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে টর্চার সেল ছিলো সেখানে গিয়ে নির্যাতন করা হতো। এই রাজাকারের মৃত্যুদ-ে স্বস্তি প্রকাশ করে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন এখন দ্রুত সময়ের মধ্য রায় কার্যকর করতে হবে। একইসঙ্গে গ্রামগঞ্জে আরও যেসব রাজাকার আছে তাদেরও বিচারের আওতায় নিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে টর্চার সেল থেকে বেঁচে ফেরা তৎকালীন ছাত্রনেতা ও বর্তমানে ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু বলেন, রাজশাহীর চিহ্নিত রাজাকার ছিলো টিপু। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা ছিলো। সে যুদ্ধের সময় বিভিন্ন পরিবারের ওপর হামলা, নির্যাতন, লুটপাট, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার মুলহোতা ছিলো। এই রাজাকারের ফাঁসিতে রাজশাহী অনেকটা কলঙ্কমুক্ত হলো। অতিদ্রুত এই রাজাকারের ফাঁসির রায় কার্যকর দেখতে চাই। প্রসঙ্গত, টিপু রাজাকারের বিরুদ্ধে রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দু’জনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালপত্র লুট করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
×