ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উন্মুক্ত স্থানে নয় ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:০৬, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯

থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উন্মুক্ত স্থানে নয় ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৫ ডিসেম্বর ‘বড়দিন’ এবং ৩১ ডিসেম্বর ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ উদযাপনে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকাসহ সারাদেশের কোথাও উন্মুক্ত স্থানে ইংরেজী নতুন বছরের প্রথম প্রহর (থার্টি ফাস্ট নাইট) উদযাপন করা যাবে না। পটকা ফোটানো এবং আতশবাজি পোড়ানো যাবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আসন্ন বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইটের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সভায় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও এ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি হিউবার্ট গমেজ, খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়াসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বড়দিনের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকেই বড়দিনের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। তাছাড়া ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট খুব কাছাকাছি। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের প্রত্যেকে যাতে সুন্দরভাবে বড়দিন উদযাপন করতে পারেন এবং থার্টি ফার্স্ট নাইটে যাতে কোন ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা না হয় সে বিষয়ে সজাগ রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেজন্য এই সভা করেছি। বিগত বছরগুলোতে বড়দিনসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান পালন এবং সমস্যা সমাধানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, সারাদেশে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে তিন হাজার চার্চ রয়েছে। রাজধানীতে এই সংখ্যা হবে প্রায় ৭০টি। ২৪ ডিসেম্বর রাতেই বড়দিনের কর্মসূচী পালন শুরু হয়। তাই ওই দিন রাতেই নিরাপত্তার বিষয়টি বেশি জরুরী। ওই দিন রাতে গ্রামাঞ্চলে কীর্তন গান করে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কর্মসূচীও পালিত হয়ে থাকে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৩ হাজার ৫০০টি চার্চের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি খ্রীস্টানদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, কাকরাইল, মিরপুর, বনানীসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ চার্চে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। সিসি ক্যামেরাসহ বিশেষ প্রয়োজনে প্রবেশ মুখে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরসহ অন্য ব্যবস্থা থাকবে। বড়দিন উপলক্ষে পুলিশের কন্ট্রোল রুম থাকবে। চার্চের একজন করে ফোকাল পয়েন্টে যে কোন পরিস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। আসাদুজ্জামান খান বলেন, ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে সব চার্চগুলোতে। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কূটনৈতিক এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। থার্টি ফাস্ট নাইটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে রাস্তায়, ফ্লাইওভারে কনসার্ট, নাচ-গানের আয়োজন করা যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টার পর ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে উন্মুক্ত স্থানে কোন ধরনের গান-বাজনার আয়োজন করা যাবে না। ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরের দিন ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদেশে সব বার বন্ধ থাকবে। এরই মধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চলবে। তিনি বলেন, বড়দিন ও থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ভুভুজেলা বাজানো, পটকা ফোটানো এবং আতশবাজি ফোটানো যাবে না। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ৩০ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল ১০টা পর্যন্ত বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার থাকা গাড়িগুলো ভেতরে ঢুকতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ ভালবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের সহাবস্থানের দৃষ্টিতেও বাংলাদেশ যেন রোল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এটাই চেয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আসন্ন শুভ বড়দিন উপলক্ষে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় ও কেক কাটা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিওর নেতৃত্বে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের অর্ধ শতাধিক সদস্য অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
×