ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ফুল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ফুল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিজয়ের মাসের ডিসেম্বরে চমৎকার দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য এক চমৎকার আয়োজন। সে আয়োজনে বিজয়ের প্রতীক হয়েছে জাতীয় ফুল শাপলা। নদীমাতৃক বাংলাদেশের জলাশয়ে ভেসে থাকা ফুলটি নিয়ে চলছে বিজয়ফুল প্রতিযোগিতা। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর অভিপ্রায়ে অনুষ্ঠি হচ্ছে ফুল প্রতিযোগিতা। ছয় পাপড়ি ও একটি কলির জাতীয় ফুল শাপলা হচ্ছে বিজয়ফুল। পাপড়ি ও কলিসহ সাত ভাগে বিভক্ত ফুলটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে মহান নেতার ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণের কথা। ছয়টি পাপড়ির মাঝে মিশে আছে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার কথা। এই বিজয়ফুল তৈরির সঙ্গে প্রতিযোগীদের সৃজনশীলতা বিকাশে যুক্ত হয়েছে আরও সাতটি বিষয়। এগুলো হলো মুক্তিযুদ্ধনির্ভর গল্প ও কবিতা রচনা, কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, একক অভিনয়, চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং দেশাত্মবোধক ও জাতীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতা। জেলা, উপজেলায় পেরিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হলো জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা। পরবর্তীতে জাতীয় প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আয়োজিত প্রতিযোগিতা বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ছুটির দিনের সকালে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়। সংস্কৃতি সচিব মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোকাম্মেল হোসেন। কে এম খালিদ বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এবং জাতি গড়ার কারিগর। তাদের কাছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং এর প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতিকে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে দেয়া হয়নি। তাই দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শ ছড়িয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিজয়ফুল প্রতিযোগিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। পাশাপাশি অপশক্তি প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখবে বিজয়ফুল। মানবিক মানুষ গড়ার ক্ষেত্রে সংস্কৃতিচর্চার অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ করেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বলেন, শুধু আইন প্রণয়ন করে নৈতিক গুণাবলীসম্পন্ন মানবিক মানুষ গড়া সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন দেশব্যাপী সুষ্ঠু সংস্কৃতি চর্চা ও সাংস্কৃতিক জাগরণ। কেবল সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমেই মানুষের মাঝে দেশপ্রেম জাগ্রত করা সম্ভব। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সকাল থেকে বিকেল অবধি চলে সংস্কৃতিনির্ভর সেই প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদপত্র প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার প্রদান করা হবে। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে প্রতিযোগিতায়। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তঃশ্রেণী প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয়ে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাইকৃত প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগীরা নির্বাচিত হয়। তিনটি স্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে এ প্রতিযোগিতা। ক শাখায় শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণী, খ শাখায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী এবং গ শাখায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে।
×