ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রজন্মের পর প্রজন্মকে এ বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে;###;শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

বেইমানরা যেন আর না আসতে পারে ॥ মোশতাক-জিয়া মীরজাফর

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

বেইমানরা যেন আর না আসতে পারে ॥ মোশতাক-জিয়া মীরজাফর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলার মাটিতে বার বার মোশতাক-জিয়ার মতো মীরজাফর ও বেইমানদের জন্ম হয়েছে। ভবিষ্যতে তাদের মতো আর যেন কেউ এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, দেশের উন্নয়ন আর যেন বাধাগ্রস্ত না হয়; সেই দায়িত্বটা দেশের জনগণকেই নিতে হবে, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে এ বিষয়ে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শনিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন- সত্য ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না, লাখো শহীদের রক্ত ও আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যায় না, যেতে পারে না। আজ সেটা প্রমাণিত হয়েছে সারা বিশ্বের কাছে, বাংলাদেশের জনগণের কাছে। আজকের প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ পেয়েছে। ভবিষ্যতেও কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। ইনশাল্লাহ! বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিয়েই আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। বাংলার মাটিতে মীরজাফররা জন্ম নিয়ে দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে যারা বিশ্বাস করে তারাই জয়ী হয়েছে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, শহীদ বুদ্ধিজীবী আলতাফ মাহমুদের কন্যা শাওন মাহমুদ, আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি ও উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা সভার শুরুতেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর একটাই স্বপ্ন ছিল। সেটা হলো দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশের একজন মানুষও যেন খাদ্যে কষ্ট না পায়, প্রতিটি মানুষ সাংবিধানিক অধিকার পায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ওপর কালোমেঘের ছায়া ছিল। সে মেঘ কেটে গেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আর যেন কেউ উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। জাতির পিতা হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে খুনী মোশতাক কখনও সেনাপ্রধান বানাত না। আসলে জিয়াই ছিল নেপথ্যের মূল লোক। কিন্তু মীরজাফর ও বেইমানরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। মীরজাফরও বেইমানি করে ১৫ দিন টিকে থাকতে পারেনি, খুনী মোশতাকও তিন মাস টিকতে পারেনি। কারণ বেইমানরা বেইমানকারীদের বেশি বিশ্বাস করে না, এটাই হলো বাস্তবতা। জিয়াউর রহমানের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, গণহত্যাসহ যুদ্ধাপরাধী, খুন, সন্ত্রাস আর লুটপাট করেছে তাদের বিচারের হাত থেকে মুক্ত করে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিল এই জিয়া। খুনী মোশতাক বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি দিয়েছিল, আর জিয়াউর রহমান সেই ইনডেমনিটিকে আইনে পরিণত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী ও আবদুল আলিমকে মন্ত্রী বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই পুরো বিকৃত করেছিল এই জিয়া। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জেনারেল এরশাদও খুনীদের পুরস্কৃত করে, রাষ্ট্রপতির প্রার্থী বানায়, ফ্রিডম পার্টি করার সুযোগ দেয়। অর্থাৎ খুন করার ফ্রিডম দিয়েছিলেন তিনি। আর জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আরও একধাপ এগিয়ে যুদ্ধাপরাধী ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কর্নেল রশিদকে বিরোধী দলের নেতা পর্যন্ত বানিয়েছিলেন। সরকারপ্রধান বলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশের মানুষের জীবনযাপনে আওয়ামী লীগ যে পরিকল্পনা করে দিয়েছে, সেটা ধরেই দেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করব, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও আমরা উদযাপন করব ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে। তিনি বলেন, জাতির পিতা সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করে বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তারই ডাকে সাড়া দিয়ে লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছে। কাজেই এ রক্ত কখনও বৃথা যায় না, বৃথা যেতে পারে না। দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা। দেশের এই স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে। বাংলাদেশ যেভাবে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছ সেভাবেই যেন এগিয়ে যেতে পারে, বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, তাহলেই শহীদদের যে সুমহান আত্মত্যাগ, তা স্বার্থক হবে। জাতির পিতার দেখানো পথেই আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। আমাদের প্রতিটি কাজ সবাই লক্ষ্য করবেন, আমাদের তৃণমূল মানুষের ভাগ্য আমরা কীভাবে পরিবর্তন করব; সেভাবেই সাজানো আমাদের পরিকল্পনা, সেভাবেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন, এদেশকে যেন আর কোনদিন কারও কাছে হাত পাততে না হয়। মানুষকে খাদ্যের জন্য কষ্ট না পেতে হয়। জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন সে সংবিধানে যে মৌলিক অধিকারগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো যেন সমুন্নত থাকে; আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদারদের নির্বিচারে গণহত্যা ও স্বাধীনতার পরও পরাজিত শত্রুদের নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনও মাথা তুলে দাঁড়াক, এটা পরাজিত শত্রুরা কখনই চায়নি। তাই পরাজয় নিশ্চিত জেনেই স্বাধীন বাংলাদেশ যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে সেজন্যই দেশের বুদ্ধিজীবীদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করে পাক হানাদারদের দোসর এদেশের কিছু কুলাঙ্গার রাজাকার-আলবদর-আলশামস। স্বাধীনতার পরও তাদের হত্যাকান্ড কিন্তু বন্ধ হয়নি। স্বাধীনতার পর নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা কিন্তু বন্ধ হয়নি। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হত্যাসহ নানা ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড তখন চালানো হয়েছে। তখন কিছু লোক সরকারের সমালোচনা করে অনেক কথা লিখেছে, তারা কিন্তু সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি উপলব্ধি করেছিলেন কিনা, আমার সন্দেহ হয়। হয় তারা উপলব্ধি করতে পারেননি অথবা কোনভাবে কোথাও না কোথাও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র ছিল। এরপরই জাতির জীবনে নেমে এলো ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড পরবর্তী ঘটনাবলীর বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনী মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিলেও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। যে লোক পেছনে ছিল সে-ই সামনে চলে এলো। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, ইতিহাস বিকৃত করে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করে তাদের মুক্ত করে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ যে মনুষ্যসৃষ্ট তার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই দুর্ভিক্ষের পেছনে সব থেকে বড় কলকাঠি নেড়েছিল ওই সময়ের খাদ্য সচিব আবদুল মমিন। জিয়াউর রহমান তাকেই কিন্তু মন্ত্রী বানিয়েছিল। যদি কখনও এ নিয়ে গবেষণা করা হয় তখন অনেক তথ্যই কিন্তু বের হয়ে আসবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা এদেশের স্বাধীনতাকেই বিশ্বাস করত কিনা, সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ নয়, তাদের পরাজিত পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্যই ছিল বেশি। তাদের তোষামদি, চাটুকারিতা এখনও অব্যাহত আছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনে দেশের মানুষকে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু সরকারে থাকতেই নয়, বিরোধী দলে থাকতেও অগ্নিসন্ত্রাস করে খালেদা জিয়া শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। সামান্য মনুষ্যত্ব যদি কারো থাকে সে কি কখনও জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে? অগ্নিসন্ত্রাস, দুর্নীতি-লুটপাট, এতিমের টাকা আত্মসাত, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি ছাড়া খালেদা জিয়া আর কিছু জানেন না। বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের তিনি মন্ত্রী বানিয়েছেন। তাদের হাত ধরেই খালেদা জিয়ার ব্যবসা, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা। তার ছেলেই সাজাপ্রাপ্ত। আর নিজে তো এতিমের অর্থ আত্মসাত করেছেন। এদেশের মানুষের প্রতি তাদের কোন দরদ নেই। এই দেশটা যে লাখো শহীদের রক্তের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, এই বিষয়েও তাদের কোনরকম সহানুভূতি ছিল না। শহীদের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যায়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুদ্ধিজীবীসহ যারা এদেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, যাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নামটাও মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু সেটা তো মুছে ফেলতে পারেনি। কারণ আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যায় না। কখনও বৃথা যাবে না। সেটা প্রমাণ হয়েছে এখন বাংলাদেশে। ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলা ও মিথ্যা ইতিহাস তৈরি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সত্যকে কেউ কখনও একেবারে মুছে ফেলতে পারে না। আজকে শুধু দেশের জনগণের কাছেই নয়, সারা বিশ্বের কাছেও সেটা প্রমাণ হয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ এটা মুছে ফেলতে পারবে না। দেশকে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবই।
×