ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার নিজ সেনাদের বিচার করবে না ॥ গাম্বিয়া

প্রকাশিত: ১১:১৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

মিয়ানমার নিজ সেনাদের বিচার করবে না ॥ গাম্বিয়া

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি শেষ হয়েছে। এখন শুধু রায়ের পালা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ শুনানি বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজে আদালতে শেষ হয়েছে। তবে যে রায়ই আসুক না কেন মিয়ানমার নিজেদের সেনাদের বিচারের মুখোমুখি করবে না বলে মনে করে আইসিজেতে অভিযোগ আনা দেশ গাম্বিয়া। খবর আলজাজিরার। আইসিজে আদালতের সিদ্ধান্ত মানার আইনী বাধ্যবাধকতা আছে এবং এর বিরুদ্ধে আপীল করার কোন সুযোগ নেই। তবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোন রায় কার্যকর করার এখতিয়ার এ আদালতের নেই। এমন এখতিয়ার না থাকলেও আন্তর্জাতিকভাবে নিষেধাজ্ঞার জন্য সুপারিশ করতে পারবে আদালত। আন্তর্জাতিক এ আদালতে ১৫ বিচারকের সঙ্গে প্যানেলে আছেন গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মনোনীত দুই বিচারক। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে গাম্বিয়া মিয়ানমারের সদিচ্ছা সম্পর্কে সংশয় পোষণ করে। এদিকে মিয়ানমারের পক্ষে সাফাই করা দেশটির প্রতিনিধি শান্তিতে নোবেলজয়ী আউং সান সুচি আদালতে বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক বিচার কাঠামোকে কাজ করার সুযোগ দেয়া উচিত। অভিযোগকারী দেশ গাম্বিয়ার প্রধান কৌঁসুলি পল রাইখলার আদালতে মন্তব্য করেছেন, রাখাইনে নৃশংসতার জন্য দায়ী সেনা সদস্যদের বিচার ও সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ওপর আস্থা রাখা যায় না। শুনানি শেষ ও যুক্তিতর্কের দিন দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনেন আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারকের প্যানেল। শুনানি শেষে রায়ের কোন তারিখ ঘোষণা না করে আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রধান আবদুলকাভি আহমেদ ইউসুফ বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন তারা। রায়ের আগ পর্যন্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যে কোন একটি পদক্ষেপের দাবি করেছিলেন বাদী গাম্বিয়ার কৌঁসুলি। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ১৯৮৪ সালের গণহত্যা কনভেনশন ভঙ্গ করার অভিযোগে মিয়ানমারকে জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ আদালতে এনেছে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া। মঙ্গলবার দ্য হেগের পিস প্যালেসে গাম্বিয়ার পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করতে গিয়ে দেশটির আইনমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেন এবং গণহত্যা বন্ধের দাবি জানান। পরদিন বুধবার মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর সুচি। গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, রাখাইনের পরিস্থিতি সম্পর্কে গাম্বিয়া যে চিত্র আদালতে উপস্থাপন করেছে তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’। আইসিজের শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে যুক্তি খণ্ডনে দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্য করেছেন সুচি। সেনা সদস্য বা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ থাকলে মিয়ানমার তা তদন্তের পর দায়ীদের বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা করে থাকে বলে দাবি করেছেন তিনি।
×