ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খুনী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত চীনা নাগরিকের লাশ সমাহিত করা হবে না

প্রকাশিত: ১১:১৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

খুনী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত চীনা নাগরিকের লাশ সমাহিত করা হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুনী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত চীনা নাগরিকের লাশ সমাহিত করা হবে না বলে জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী ও তার স্বজনরা। নিহত চীনা নাগরিকের ধর্ম মোতাবেক খুনীকে বা খুনীদের তার পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা যতক্ষণ না দেখবেন, ততক্ষণ নিহত ব্যক্তির আত্মা শান্তি পাবে না। এজন্য খুনী গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত লাশ হাসপাতালের মর্গেই থাকবে বলে নিহত চীনা নাগরিকের পরিবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে আটটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে খুনীদের গ্রেফতারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে। মামলাটির তদন্তের সঙ্গে জড়িত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জনকণ্ঠকে এসব জানান। তিনি আরও জানান, শনিবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত হত্যাকান্ডের জড়িত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী, চালক, লিফটম্যানসহ ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ডিবি ডিসি মশিউর রহমান জানান, ঘটনার সময় বাসার এবং আশপাশের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। তবে সার্বিক পর্যালোচনায় ব্যবসায়িক বিরোধ ও আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরে হত্যাক‍ান্ডটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকান্ডের রহস্য জানতে নিহত চীনা ব্যবসায়ীর বাংলাদেশী ও বিদেশী ব্যবসায়িক অনেক পার্টনারদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশী-বিদেশী কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে একজন চীনা নারী ব্যবসায়ী পার্টনার কাম বান্ধবীও আছে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম জনকণ্ঠকে জানান, খুবই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নিহত চীনা নাগরিকের বাসার ভেতরে মদসহ খাওয়া দাওয়ার আসর বসার আলামত মিলেছে। এমনকি সেখানে ধস্তাধস্তিরও কিছু আলামত পাওয়া গেছে। তাতে অনেকটাই নিশ্চিত যে, চীনা নাগরিককে বাসার ভেতরেই শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা জানান, নিহত চীনা ব্যবসায়ীর লেনদেন অস্বচ্ছ ছিল। বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ী তার কাছে আট কোটি টাকা পান। তবে হত্যাকান্ডের সঙ্গে পাওনা টাকার কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে। বনানী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জনকণ্ঠকে জানান, বাংলাদেশের চীনা দূতাবাসকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী চীন থেকে স্বামীর মৃত্যুর খবরে বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসেছেন। বৃহস্পতিবার রাতেই নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। প্রসঙ্গত, গত ১১ ডিসেম্বর বুধবার সকাল এগারোটার দিকে বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর নয় তলা বাড়ির ৬/বি নম্বর বাড়ির পেছন থেকে মাটি খুঁড়ে জে জিয়াং ফিকে (৪৭) নামের এক চীনা নাগরিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত চীনা নাগরিক পদ্মা সেতু ছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। পদ্মা সেতুতে তিনি পাথর সরবরাহ করতেন। ঘটনার সময় তার এক ছেলে ও এক মেয়েসহ স্ত্রী চীনে ছিল। তিনি নিজেও চীনে ছিলেন। গত ২৩ অক্টোবর ওই চীনা নাগরিক ঢাকায় ফেরেন।
×