ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজাকার কমান্ডার কায়সারের ফাঁসি চায় বীরঙ্গনা মাজেদা

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৪ জানুয়ারি ২০২০

রাজাকার কমান্ডার কায়সারের ফাঁসি চায় বীরঙ্গনা মাজেদা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ ॥ বীরঙ্গনা মাজেদার ৭১’এর দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে নিরবে নিবৃত্তে পল্লীগ্রামের একটি কুড়ে ঘরে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে যুদ্ধ শিশুকে নিয়ে কোনরকমে বেঁচে আছেন। যুদ্ধের সময় দুঃসহ যন্ত্রনার ক্ষত দিনে দিনে আরো গভীর হচ্ছে। অজানা আতংক এখনো তাকে তাঁড়িয়ে বেড়াচ্ছে। যুদ্ধ শিশু শামসুন্নাহারকে নিয়ে মাধবপুর উপজেলার আদাঐর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের বসবাস করছেন। একাত্তরের জগদীশপুর হাইস্কুল পাক মিলিটারী বাহিনীর নির্যাতনের কথা মনে করতেই তিনি নির্বাক হয়ে পড়েন। ওই সময় কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার কায়সারের নির্দেশে জগদীশপুর মিলিটারী ক্যাম্পে নিয়ে মাটির নিচে বাংকারে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চলে মাজেদার উপর। নির্যাতনের বাংকারে মাজেদা অজ্ঞান হয়ে পড়ায় মরে গেছে ভেবে তাকে পাশের জগদীশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাজেদাকে ফেলে আসে মাজেদাকে। ভোর বেলা মাজেদার জ্ঞান ফিরে এলে বাবার বাড়ি বেলঘরে যায়। পরে তাকে বাবার বাড়ির লোকজন ছাতিয়াইন চিকিৎসা দেয়।আজ মঙ্গলবার সকালে একাত্তরের বীরঙ্গনা মাজেদার বাড়িতে দেখা যায় তার যুদ্ধ শিশু শামসুন্নাহারকে নিয়ে কাঁথা সেলাই করছেন। একাত্তরের বীরঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মাজেদা বেগম বলেন তার চাচা আব্দুল মতিন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় রাজাকার কমান্ডার কায়সারের নির্দেশে তাদের বেলঘর গ্রামে হানা দিয়ে তার চাচা আইয়ুব আলী, আতাত মিয়া, লুদন মিয়াকে জগদীশপুর হাইস্কুল মিলিটারী ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। একই সাথে বেলঘর গ্রাম থেকে মাজেদাকেও পাক হানাদার বাহিনী ধরে নিয়ে জগদীশপুর হাইস্কুল মিলিটারী ক্যাম্পে বাংকারে বন্দি করে রাখে। মাটির নিচে বাংকারে পাক সৈন্যরা ৪/৫দিন তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। মাজেদা বেগম জানান, সরকার তাকে বীরঙ্গনা হিসাবে মুক্তিযোদ্ধার ৮ শতক সরকারি জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু জমিটি মাঝ মাঠে হওয়ায় তার উপর ঘর বাড়ি করা যাচ্ছে না। তার ইচ্ছা ছিল তার যুদ্ধ শিশুর জন্য সরকারি জায়গায় ঘর তৈরি করে দিবেন। কিন্তু এটি করা সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার সকালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী রাজাকার কামন্ডার সৈয়দ মোঃ কায়সারের ফাঁসির রায় আপীল বিভাগে বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক। এতে জাতি কলংকের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে।
×