ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সাহিত্য পত্রিকা লোকের ২০ বছর পূর্তি উৎসব

প্রকাশিত: ১১:৪০, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

সাহিত্য পত্রিকা লোকের ২০ বছর পূর্তি উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বড় স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে ওঠে লিটলম্যাগ বা সাহিত্যের ছোটকাগজ। সাহিত্যের তেমন একই ছোটকাগজ লোক। কবি অনিকেত শামীম সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকাটি দুই দশক ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে শিল্প ও সাহিত্য নিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি কাজ করছে কবি, লেখক ও সাহিত্যকদের নিয়ে। পথচলার ২০ বছর পূর্ণ করল পত্রিকাটি। আর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব। শীতল সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে দুই দশক পূর্তি স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হয় ‘সৃজন-সক্রিয়তার সানন্দ জ্ঞাপন’ শীর্ষক এ উৎসব। পাঁচদিনের উৎসবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, সম্মাননা প্রদান, গান ও আড্ডার পাশাপাশি জাহাজ ভ্রমণ। এর মধ্যে দুইদিন ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এবং বাকি তিনদিন জাহাজ ভ্রমণে চর কুকরিমুকরি, চরফ্যাশন, ভোলায় ছড়াবে উৎসবের রং। মঙ্গলবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। স্বাগত ভাষণ দেন লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম। শুরুতেই ভিডিও চিত্রে লোকের দুই দশক পরিক্রমা দেখানো হয়। এরপর লোক-এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত সংখ্যার পাঠ উন্মোচন করা হয়। এ পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা প্রদান করা হয়। লিটলম্যাগ সম্পাদনার জন্য আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (নতুন দিগন্ত), আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ (কণ্ঠস্বর), রামেন্দু মজুমদার (থিয়েটার) ও আবুল কাসেম ফজলুল হক (লোকায়ত)। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের লিটলম্যাগ সম্মাননা কোটায় রয়েছে অনিন্দ্য, চর্যাপদ, লিরিক, নিসর্গ, জীবনানন্দ, প্রতিশিল্প, দূর্বা, মেঘ ও কারুভাষ। লিটলম্যাগ প্রকাশনা ও প্রতিষ্ঠান সম্মাননা পেয়েছে উলুখড় (ঢাকা) এবং কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইক্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র। লেখক সম্মাননা পেয়েছেন কবি গৌতম চৌধুরী, কবি সরকার মাসুদ প্রমুখ। বুধবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে শুরু হবে অনুষ্ঠান। শুরুতেই অনুষ্ঠিত হবে ‘ছোটকাগজের লড়াই : বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করবেন কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ। মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন কবি সৈকত হাবিব। আলোচনা করবেন কবি এজাজ ইউসুফী, কবি সরকার আজিজ, কথাশিল্পী সরকার আশরাফ, কবি স্বদেশ বন্ধু সরকার, জিল্লুর রহমান, কবি আশিক আকবর, কবি মুজিব মেহদী, কবি মোস্তাক আহমাদ দীন, কবি আসমা বিথী ও কবি মনিরুল মনির। সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে ‘আমাদের উপচে পড়ার দিন’ শিরোনামে কবিতা পাঠের আসর। সভাপতিত্ব করবেন কবি শেখ ফিরোজ আহমদ। সন্ধ্যা ৭টায় থাকছে সম্মাননাপ্রাপ্তদের প্রতিক্রিয়া ও মুক্ত আলোচনাসভা। এ পর্বে সভাপতিত্ব করবেন প্রাবন্ধিক ও চিন্তক সলিমুল্লাহ খান। রাত সাড়ে ৮টায় বসবে গানের আসর। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবে ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা পরিবেশা ॥ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে চলছে ২১ দিনব্যাপী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব। একাডেমির নন্দন মঞ্চ এবং তৎসংলগ্ন খোলা মাঠে চলমান উৎসবের দ্বাদশ দিন ছিল মঙ্গলবার। রাত ৮টায় দর্শনীর বিনিমেয়ে মঞ্চস্থ হয় আব্দুল রাজ্জাকের পরিচালনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘গম্ভীরা’। সঙ্গীতনির্ভর লোকনাট্য গম্ভীরার বৈশিষ্ট্য মূলত কীর্তন, জারি প্রভৃতি গোষ্ঠীসঙ্গীতের অন্তর্গত। নানা-নাতির গল্পময় এই লোকনাট্যে নানার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফিরোজ আহম্মেদ এবং নাতির চরিত্রে রূপ দিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক। এছাড়া যন্ত্রসঙ্গীতের সহযোগে দোহার ও নৃত পরিবেশনাসহ বিভিন্ন চরিত্র রূপায়ন করেন কণা, সান্ত¦না, নীলিমা, সাবিনা, খুশি, নীশি, আনিকা, হ্যাপি ও আঁখি। এদিন নন্দনমঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এরপর ছিল শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় এ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা। ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ ও ‘বাংলার হিন্দু বাংলার বৌদ্ধ’ গানের সুরে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে ধৃতি নর্ত্তনালয়। বুধবার উৎসবের ত্রয়োদশতম দিনে বিকেল বিকাল ৪টা থেকে একাডেমির নন্দনমঞ্চে পরিবেশিত হবে কিশোরগঞ্জ, বাগেরহাট ও গাজীপুর জেলার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। রাত ৮টায় একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনীর বিনিময়ে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুরের ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য ‘সোনাবানের পুঁথি’।
×