ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভোটের তারিখ পাল্টানোর দাবিতে শাহবাগে অবরোধ

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

ভোটের তারিখ পাল্টানোর দাবিতে শাহবাগে অবরোধ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ সরস্বতী পূজার দিনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ আজ বুধবার বেলা ১২টার মধ্যে পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন না হলে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য থেকে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা ও নির্বাচন কমিশন ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেন তারা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শাহবাগ মোড়ে দেড় ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচী শেষে এই আল্টিমেটাম দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে সরস্বতী পূজার কারণে আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ বদলানোর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে পূজার দিনেই ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। হাইকোর্টে আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর পরেই ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। পরে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের এই অবস্থান কর্মসূচীতে অংশ নেয় বিভিন্ন হল সংসদের নেতারাও। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তারিখ আগামী ১৫ জানুয়ারি (আজ বুধবার) বেলা ১২টার মধ্যেই পরিবর্তন করতে হবে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের দায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার ও কর্মকর্তাদের পদত্যাগ করতে হবে। দাবির বিষয়ে জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের ভিপি উৎপল বিশ্বাস বলেন, শাহবাগের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করা আমরাও চাই না। কিন্তু আজকে যখন হাইকোর্টও ৩০ তারিখ নির্বাচনের রায় দিল, তখন আমরা এখানে না এসে পারলাম না। কারণ পূজা ও নির্বাচন একই দিনে হতে পারে না। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ‘৩০ তারিখের নির্বাচন, মানি না-মানবো না’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘পূজার দিনে নির্বাচন, মানি না-মানবো না’ স্লোগান দিচ্ছেন। জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের জিএস কাজল দাস বলেন, আমরা মনে করি পূূজার দিনে নির্বাচন দেয়ার সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের একটি অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তকে আমরা ধিক্কার জানাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান শান্ত বলেন, নির্বাচন কমিশন চাইলেই এই তারিখটি এড়াতে পারত। কমিশন জানত এটি পূজার দিন। সেটি না করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর আগে রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের দিন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজার সপ্তমী ছিল। তাদের এ ধরনের আচরণ মেনে নেয়া যায় না। তিনি আরও বলেন, কমিশন পূজার তারিখ না জানলেও যখন হাইকোর্টে রিট করা হলো, তখন কেন তারা তারিখ পরিবর্তন করেনি? সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই সরস্বতী পূজার দিন ক্যাম্পাসসহ পুরো ঢাকা শহরে উৎসব করে। ভোটও তো উৎসব। এখন আমরা কোন উৎসব করব ভোট উৎসব নাকি ধর্মীয়? কাজেই এই ভোটের তারিখ পেছাতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহি করতে হবে। যতক্ষণ কমিশনের পক্ষ থেকে আশ্বাস পাচ্ছি না, ততক্ষণ আমরা শাহবাগ চত্বর ছাড়ব না। এ ধরনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। বিক্ষোভে অবস্থানকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, একজন নাগরিক হিসেবে তা মেনে নিতে পারছি না। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। কিন্তু রায় হয়েছে বিপক্ষে। ভবিষ্যতেও অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের দিনে নির্বাচন কমিশন এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিবে যা আমরা মেনে নিতে পারব না।
×