ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মহিলা ফুটবল লীগ ॥ এখনও আনুষ্ঠানিকতা সারেনি অনেক ক্লাব, শেষ মুহূর্তে শেখ জামাল ধানমণ্ডির নাম প্রত্যাহার

দরকষাকষি চলছে ফুটবলারদের সঙ্গে

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

দরকষাকষি চলছে ফুটবলারদের সঙ্গে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ ছয় বছর পর অবশেষে আবারও মাঠে গড়াতে যাচ্ছে মহিলা ফুটবল লীগ। তারিখটা আগামী ৩১ জানুয়ারি। ভেন্যু ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোঃ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে। অংশ নেবে ছয় ক্লাব। এরা হলো : বসুন্ধরা কিংস, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র, এফসি উত্তর বঙ্গ, বেগম আনোয়ারা স্পোর্টিং ক্লাব ও নাসরিন স্পোর্টস ক্লাব। মজার ব্যাপারÑ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ষষ্ঠ দলটি চূড়ান্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সন্ধ্যায় জানা যায় ছয় নম্বর দলটির নাম হচ্ছে জামালপুরের কাচারিপাড়া একাদশ উন্নয়ন সংঘ। যদিও এর আগে শোনা গিয়েছিল মহিলা লীগে অংশ নেবে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব। কিন্তু লীগ শুরুর ক’দিন আগেই তারা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের স্থলাভিষিক্ত হয় জামালপুরের ক্লাবটির। লীগ উপলক্ষে গত ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে দলবদল। শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি। লীগের ৬ ক্লাব ২৩ জন করে ফুটবলার নিবন্ধন করতে পারবে। সে হিসেবে ১৩৮ মহিলা ফুটবলার খেলার সুযোগ পাবেন। ডাবল লীগ ভিত্তিতে হবে খেলা। প্রতিটি দল খেলবে ১০টি করে ম্যাচ। এরপর সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল করা যায় কিনা তা নিয়েও ভাবছে বাফুফে। দলবদল শুরুর পর ৬ দিন কেটে গেলেও এখনও কোন ক্লাব আনুষ্ঠানিকভাবে দলবদল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি। বাফুফের হেড অব মিডিয়া আহসান আহমেদ অমিত জনকণ্ঠকে জানান, ‘এখন পর্যন্ত কোন ক্লাবের দলবদলের অফিসিয়াল খেলোয়াড় তালিকা আমাদের কাছে জমা দেয়নি।’ বাস্তবতা হচ্ছেÑ দলবদল চলছে আসলে মুখে মুখেই, কাগজে-কলমে নয়। খেলোয়াড়দের সঙ্গে ক্লাবগুলোর টাকার অঙ্ক নিয়ে দর কষাকষি অব্যাহত আছে। জানা গেছে, সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়তে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। এই দলে নাম লেখাতে যাচ্ছেন জাতীয় দলে খেলা বেশিরভাগ ফুটবলার। জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড- অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, দুই গোলরক্ষক সাবিনা আক্তার ও মাহমুদা আক্তার, মিডফিল্ডার কৃষ্ণা রানী সরকার, স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন, মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার, ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন, ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন, মিডফিল্ডার ইশরাত জাহান মৌসুমী, ডিফেন্ডার শিউলি আজিম, ফরোয়ার্ড লিপি আক্তার, ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার (সিনিয়র) এবং জাতীয় দলের সাবেক মিডফিল্ডার মাইনু মারমার যোগ দেয়ার কথা রয়েছে কিংসের জার্সিতে। এছাড়া খেলবেন মুন্নী আক্তার, প্রাণতি, রিপা আক্তার ও নিলুফা ইয়াসমীন নীলা। সাবিনাদের সঙ্গে ক্লাবের কাগজে-কলমে চুক্তি না হলেও বিস্ময়করভাবে তারা ঠিকই অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছেন কিংসের হয়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে সাবিনাই হতে যাচ্ছেন এই ফুটবল লীগের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার। ৫ লাখ টাকায় খেলার কথা তার। অনুর্ধ-১৬ দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্দা, মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা, নাজমা, শামসুন্নাহার (জুনিয়র), গোলরক্ষক রূপনা চাকমা ও সাজেদা আক্তারের শেখ রাসেলের হয়ে খেলার কথা রয়েছে। ২০১১ ও ২০১৩ সালে হয়েছিল মেয়েদের দুটি ফুটবল লীগ। ২০১১ সালে হয়েছিল একটি কর্পোরেট লীগও। এছাড়া মেয়েদের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ সর্বশেষ হয়েছে ২০১৫ সালে। তারপর সিনিয়র মেয়েদের ঘরোয়া কোন খেলাই নেই। ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম লীগ শুরু হয়েছিল। টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ও রানার্সআপ মোহামেডান। ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়িয়েছিল ঢাকা মহানগরী মহিলা ফুটবল লীগ’-এর দ্বিতীয় আসর। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আবাহনী, রানার্সআপ মোহামেডান। সেবার লীগ খেলে সাবিনা খাতুন প্রথম বছর শেখ জামাল থেকে পেয়েছিলেন ৬০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় আসরে মোহামেডান থেকে পেয়েছিলেন ৮০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী কয়েকজনকে ১ লাখ টাকা করেও দিয়েছিল। দুই লীগের মাঝে কর্পোরেট লীগ হয়েছিল। তাতে চ্যাম্পিয়ন বিজেএমসি। ২০১৫ সালে হওয়া জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফিও জিতেছিল বিজেএমসি।
×