ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আপনার এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপটি হয়ত কথা বলছে ফেসবুকের সঙ্গে

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

 আপনার এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপটি হয়ত কথা বলছে ফেসবুকের সঙ্গে

কোন এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ তার ব্যবহারকারীর তথ্যগুলো কারও সঙ্গে বিনিময় করতেই পারে। তবে এজন্য দরকার পড়ে ব্যবহারকারীর অনুমতি। তবে ইদানীং বেশ কিছু এ্যান্ড্রয়েড এ্যাপ ব্যবহারকারীর অনুমতি না নিয়েই তথ্য বিনিমিয় করছে সরাসরি ফেসবুকের সঙ্গে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে ঐ ধরনের এ্যাপ ব্যবহারকারী ফেসবুক ব্যবহার না করলেও এ্যাপ থেকে বিভিন্ন তথ্য চলে যাচ্ছে ফেসবুকের কাছে, অথচ ব্যাবহারকারীটি হয়ত ফেসবুকে রেজিস্টারই করেনি কোনদিন। এই কাজটি করার জন্য প্রধানত দায়ী ফেসবুকের একটি SDK বা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট, যেটি ব্যবহার করে হয়ত ওই সকল এ্যাপের কিছু কার্যকারিতা তৈরি করা হয়েছে। আর ঐ এ্যাপগুলো তার কার্যকারিতা সম্পন্ন করার জন্য ফেসবুকের সেই SDK ব্যাবহার করে ব্যবহারকারীর তথ্য ফেসবুকের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। লন্ডনভিত্তিক একটি দাতা সংস্থা, প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালের পাওয়া তথ্যমতে তারা মোট ৩৪টি ভিন্ন ভিন্ন এ্যাপ সর্বমোট ১০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন বার ইন্সটল করে পরীক্ষা করে দেখেছে যে অন্তত ২০টি এ্যাপ (যা প্রায় ৬১ শতাংশ) ফোনে এ্যাপ খোলার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য ফেসবুকে পাঠায়। এই পুরো ব্যাপারটায় কোন সমস্যা থাকত না, যদি এ্যাপগুলো তথ্য পাঠাবার আগে ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়ে নিত। এই সময় ব্যবহারকারী ফেসবুকে লগ আউট করা থাকলেও তথ্য সরবরাহ বন্ধ থাকে না। কেমন তথ্য নেয় ফেসবুক এই অ্যাপগুলোর মাধ্যমে? একজন ব্যক্তির সম্পর্কে কতটা আন্দাজ করা সম্ভব এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে? আপনার ব্যক্তিগত ছবি, ভাল লাগা, শখ, ধর্মীয় অনুভূতি থেকে শুরু করে সবটাই পেতে পারে ফেসবুক এই এ্যান্ডয়েড এ্যাপগুলোর মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে খুব ছোট ছোট ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও ফেসবুক পেতে পারে ঐ এ্যাপগুলোর মাধ্যমে। এই যেমন- ভ্রমণ সংক্রান্ত এ্যাপ কায়াক (Kayak) ফেসবুককে একজন ব্যক্তি কোথায় যাচ্ছেন, কোন বিমানে যাচ্ছেন থেকে শুরু করে তার সিট নম্বর, সময় এবং ক্লাসও শেয়ার করে। ফলে, কেউ যদি এই তথ্যগুলোকে বাজেভাবে ব্যবহার করতে চায়, তাহলে সেটা তার জন্য খুব একটা কঠিন কিছু হওয়ার কথা নয়। ফেসবুকের SDK এর নীতি অনুযায়ী, যে কোন তথ্য নেওয়ার আগে ব্যবহারকারীর অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। বিশেষ করে, ২০১৮ সালে ২৫ মে ইইউ জেনারেল ডাটা প্রোটেকশন রেগুলেশন এই পুরো ব্যাপারটি দেখা শুরু করলে ফেসবুক একে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে। তবে এ্যাপ নির্মাতারা তখনও ফেসবুকের সঙ্গে ঝউক এর তথ্যগুলো সরবরাহ করা বন্ধ করতে পারছিলেন না। আর এর কারণ ছিল, এমন কোন অপশন SDK তে না থাকা। ফেসবুকে সরবরাহ না করার কোন অপশন বা ঝউক এর সেবা বন্ধ করার কোন উপায় তাদের কাছে খোলা ছিল না। প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল এ ব্যাপারে ফেসবুককে জবাবদিহি করলে ফেসবুক জানায় যে, আসলেও তাদের ঝউক দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য বন্ধ করার কোন উপায় জুন পর্যন্ত রাখা হয়নি। তবে জুন থেকে এক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন এনেছেন তারা। এখন ফেসবুক কোন তথ্য নেওয়ার সময় আপনা আপনিই সেটা তাদের কাছে চলে আসে না। এজন্য এ্যাপ নির্মাতারা যেন ব্যবহারকারীর অনুমতি নিতে পারে সে ব্যবস্থা বর্তমানে রেখেছে ফেসবুক, এমনটাই দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির পরিচালকদের।
×