ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কেশবপুরে বোরো আবাদের দাবিতে কৃষকদের স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ০২:০৪, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

 কেশবপুরে বোরো আবাদের দাবিতে কৃষকদের স্মারকলিপি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর ॥ কেশবপুরে টেপুর বিলে বোরো আবাদের দাবিতে কৃষকরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্মারকলিপি পেশ করেছে। জেলা প্রশাসক কেশবপুরে আসলে তার কাছে বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক টেপুর বিলের পানি নিষ্কাশনের জোর দাবি জানান। এ সময় জেলা প্রশাসক ঘের মালিককে দিয়ে বিলের মাছের ঘেরের পানি নিষ্কাশন করানোর জন্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। নির্বাহী অফিসার এ ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কৃষকদের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বন্যাকবলিত হাসাডাঙ্গা, নাগোরঘোপ, চিনাটোলা, মধ্যকুল, রতনদিয়া, হাবাসপোল গ্রামসহ ৮/১০ গ্রামের সীমান্তবর্তী স্থানে প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমি নিয়ে টেপুরবিল অবস্থিত। এলাকাবাসি ওই বিলের একমাত্র ফসল বোরো ধান উৎপাদন করেন। এসব গ্রামের মানুষ অতিদরিদ্র এবং কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। ১০/১২ বছর আগে ৩০ শে পৌষের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করে কৃষকদের ধান উৎপাদনের সুযোগ করে দেয়ার শর্তে বিলটি লিজ হিসেবে গ্রহণ করেন হাসাডাঙ্গা গ্রামের আবু তালেব মোড়লের ছেলে সুলতান মোড়ল। কিন্তু চলতি বছর ১৪ জানুয়ারী (৩০ পৌষ) পানি নিষ্কাশনের সময় শেষ হয়ে গেলেও এখনও বিলে অথৈই পানি রয়েছে। বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা এখনও বোরো বীজতলা তৈরী করতে পারেনি। ঘের মলিক পানি নিষ্কাশনের কোন উদ্যোগ না নেয়ায় এলাকার শত শত কৃষি পরিবার হতাশায় ভুগছেন। জলাবদ্ধতার এ সমস্যা নিরসনে গত ১২ জানুয়ারী এলাকার শহিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, প্রদীপ দেবনাথসহ শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি ইউএনও’র কাছে দেয়া হয়। কৃষক শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ওই বিলের উৎপাদিত ধান এলাকার মানুষের সারা বছরের রুটি রুজি। কৃষকরা যখন বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছেন তখন ওই ঘের মালিক বিলটি বারো মাসের জন্যে লিজ নেয়ার জন্যে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছেন। গত ১৬ জানুয়ারী যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আলম মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ির ইউনিয়নের চিংড়া ভূমি অফিস ও কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা পরিদর্শনে আসেন। এ খবর জানতে পেরে টেপুর বিল সংলগ্ন এলাকার শত শত কৃষক উপজেলা পরিষদ চত্বরে জড়ো হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে ওই বিলের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়ে আবারও স্মারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক কৃষকদের সমস্যা শুনে রবিবারের মধ্যে ওই ঘের মালিককে ডেকে টেপুর বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদের সুযোগ সৃষ্টির নির্দেশনা প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূসরাত জাহান জানান, অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিলের ঘের মালিক সুলতান মোড়লের ম্যানেজার দীপঙ্কার বলেন, ওই ঘেরের অনেক কৃষক তাদের জমি বার মাসের জন্যে ডিড করে দিয়েছে। কিছু কৃষক তা না মেনে বোরো আবাদের জন্যে পানি নিষ্কাশনের দাবি জানি আন্দোলন করছে। যে কারণে সময়মত পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। বিষয়টি নিরসনে অচিরেই কৃষকদের নিয়ে বসা হবে।
×