ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্কের আকাশচুম্বী ভবনের অসংখ্য ইউনিট বিক্রি হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০২:২১, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

  নিউইয়র্কের আকাশচুম্বী ভবনের অসংখ্য ইউনিট বিক্রি হচ্ছে না

অনলাইন ডেস্ক ॥ আকাশছোঁয়া ভবনে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট। জানালা খুলে হাত বাড়ালেই ধরা দেবে মেঘ, চাওয়ার আগেই মিলবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব সেবা। এমন দারুণ সব সুবিধা নিয়েও খালি পড়ে আছে নিউইয়র্কের ‘বিলিয়নিয়ার্স রো’ বলে পরিচিত এলাকার গগনচুম্বী ভবনের বেশিরভাগ অ্যাপার্টমেন্ট। পাঁচ বছর আগে সব সাজানো-গোছানো হয়ে গেলেও এখনো ক্রেতা পাওয়া যায়নি অসংখ্য ইউনিটের। আকাশছোঁয়া ভবনে অ্যাপার্টমেন্টগুলো যেমন উঁচুতে, এর দামও তেমন চড়া। কারণ সেগুলো তৈরিই হয়েছে বাঘা বাঘা ধনীদের জন্য। বিশ্বে বিলিয়নিয়রের অভাব নেই, তারপরও বিক্রি হচ্ছে না এসব অ্যাপার্টমেন্ট। রিয়েল এস্টেট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ন্যান্সি প্যাকেস ডাটা সার্ভিসেসের তথ্যমতে, ম্যানহাটানে ২০১৫ সালে প্রস্তুত হওয়া ৭ হাজার ৭৩৭টি অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে ৪৮ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ হাজার ৬৯৫টি অ্যাপার্টমেন্ট এখনো অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে একই সময়ে পুরনো অ্যাপার্টমেন্টের পুনর্বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় নতুন ও পুরনো ইউনিটের মধ্যে পার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ন্যান্সি প্যাকেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেখানে চাকরিবৃদ্ধি স্থিতিশীল এবং শেয়ারবাজারের মূল্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে সেখানে বিস্ময়কর অস্বাভাবিকতা হচ্ছে, রিয়েল এস্টেট মার্কেট জাতীয় অর্থনীতি ও স্থানীয় অর্থনীতি থেকে দূরে সরে গেছে। কমপক্ষে ৩০টি ইউনিট সম্পন্ন ভবনগুলো পর্যবেক্ষণ করে তৈরি এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরবরাহ সংকটের কারণে নয়, বরং বিক্রির এই ধীরগতি এসেছে দামের কারণে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেন্ট্রাল পার্কের দক্ষিণ পাশে বিলিয়নিয়ার রো’তে নতুন নতুন বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির হিড়িক দেখা গেছে। নতুন এসব ইউনিটের দাম পুনর্বিক্রি হওয়া পুরনো ইউনিটের তুলনায় অন্তত ১১৮ শতাংশ বেশি, যেখানে ২০০৫ সালেও এই পার্থক্য ছিল মাত্র ৯ শতাংশ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গত মাসে বিলিয়নিয়ার রো’র একটি পেন্টহাউস কিনেছেন মার্কিন ধনকুবের ড্যানিয়েল অচ। এর জন্য তার খরচ হয়েছে প্রায় ৯২ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা নিউইয়র্ক শহরে তৃতীয় সর্বোচ্চ দামি ইউনিটের খেতাব পেয়েছে। ১০০ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে টাওয়ার ওয়ান৫৭-এ একটি পেন্টহাউস কিনেছেন কম্পিউটার মোঘল মাইকেল ডেল। অচের মতো একই ভবনে তার সহকর্মী হেজ ফান্ড ম্যানেজার কেন গ্রিফিন পেন্টহাউস কিনেছেন ২৪০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে। তবে সেখানে ডলার খরচ করায় বিদেশি বিলিয়নিয়ারদের খুব একটা সাড়া পাওয়া যায়নি। দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনের ডেরেক থম্পসন বলেন, ‘ডেভেলপাররা বিদেশি ধনকুবের যেমন- রুশ শাসকগোষ্ঠী, চীনা মোঘল, সৌদি রাজপরিবারের ওপর বড় বাজি ধরেছিল দ্বিতীয় (বা সপ্তম) বাড়ি খুঁজতে। কিন্তু চীনা অর্থনীতিতে ধীরগতি নেমেছে, তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় রুশ ও মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেরদেরও চাহিদায় ভাটা পড়েছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগও সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ফলে দেশটির শতভাগ প্রস্তুত বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যে বেশিরভাগই এখন খাঁ খাঁ করছে।
×