ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটা সৈকত অরক্ষিত ॥ চরম অব্যবস্থপনা পর্যটকের দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

কুয়াকাটা সৈকত অরক্ষিত ॥ চরম অব্যবস্থপনা পর্যটকের দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ কুয়াকাটা সৈকত এখন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির এ লীলাভ‚মির কোন অভিভাবক নেই। দীর্ঘ প্রায় ১৮ কিলোমিটার সৈকতের সর্বত্র আগাছোলা। পর্যটক-দর্শনার্থীর ভোগান্তির শেষ নেই। এমনকি কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পর্যটকরা বিচরণ করতে পারছে না। যত্রতত্র দোকানপাট, জেলেদের জাল পাতার গ্রাফি পোতা রয়েছে, মাছ আনা-নেয়ার নৌকা ফেলে রাখা হয়েছে। জেলেদের ফেলা মাছের পচা গন্ধ। শুটকি কিংবা ফ্রাই করা দোকাপনপাটের বর্জ্য ফেলে রাখা হয়। মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের ফ্রি-স্টাইলে জিরো পয়েন্টে বিচরণ করা। মোট কথা সৈকতজুড়ে চলছে চরম অরাজকতা। একসময় পরিচ্ছন্ন সৈকত হিসেবে কুয়াকাটার যে সুখ্যাতি ছিল তা এখন হারিয়ে গেছে। কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি কিংবা কুয়াকাটা পৌরকর্তৃপক্ষ রয়েছে। রয়েছে তাদের কর্মকান্ড, কিন্তু কুয়াকাটা সৈকতের পর্যটকের বিনোদনের জায়গাটুকু পর্যন্ত এখন আর পর্যটকের নিয়ন্ত্রণে নেই। যে যার মতো সৈকত দখল করে করছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এ কারণে পর্যটক-দর্শনার্থী বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা নিয়ে কুয়াকাটা ত্যাগ করছেন। তিনদিনের পরিকল্পনা নিয়ে আসলেও একদিন পরেই কুয়াকাটা ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন পর্যটক। একেতো বর্ষকালে সাগরের অব্যাহত ভাঙ্গনে সৈকতের পরিধি ছোট হয়ে গেছে। জোয়ারের সময় থাকে না ওয়াকিং জোন। এরপরে ভাঁটার সময় সৈকতের জিরো পয়েন্টের এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় পর্যটক জড়ো হয় সূর্যোদয় কিংবা সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য উপভোগের। আর তখনই অস্থায়ী দোকানপাটের পসরা বসে। জিরো পয়েন্টের দুই দিকে অসংখ্য জেলে নৌকা ফেলে রাখা হয়। এলোমেলো করে রাখা এসব দোকানপাট ও নৌকাসহ বিভিন্ন যানবাহনের কারনে পর্যটকরা পারিবারিক ভাবে শিশু সন্তানদের নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে সময়টুকু পার করছেন। এরকম নৈরাজ্যে কুয়াকাটার ভাবমুর্তি চরমভাবে অক্ষুন্ন হচ্ছে। সায়মা শারমিন এক পর্যটক বিরক্তিকর ভাষায় বললেন, এখানে কোন পরিবেশ নেই। সব যেন আগাছোলা।’ অধিকাংশ পর্যটক জানান, তারা বেঞ্চিতে বসে থাকলেও তাদের সামনের দিকে সৈকতে অসংখ্য চানাচুর, ফুচকা, চটপটির দোকান এবং ঘোড়াসহ যানবাহন ঘুরতে থাকে। সামনে কিছুই দেখা যায় না। এছাড়া ভাড়াটে হোন্ডাচালক ও বাণিজ্যিক ক্যামেরাম্যানদের যাতনা যেন উপদ্রবের মতো। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলীভ‚মি কুয়াকাটা সৈকতে গিয়ে কোন কিছুই উপভোগ করা যায় না নির্বিঘ্নে। একটু নিরিবিলি পরিবেশ বজায় রাখতে পর্যটকরা বিচ ম্যাজেমেন্ট কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন আমরা বলতে বলতে এখন হাতাশ। স্থানীয়দের দাবি প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর উত্তরণ ঘটবে না।
×