ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উপকূলীয় ৭৭৪০ বিপন্ন পরিবারে জলবায়ু সহনশীল জীবিকায়নের ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০১:৩৯, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

উপকূলীয় ৭৭৪০ বিপন্ন পরিবারে জলবায়ু সহনশীল জীবিকায়নের ব্যবস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ উপকূলীয় ৭৭৪০টি জলবায়ু বিপন্ন পরিবারে জলবায়ু সহনশীল ও বৈচিত্রময় জীবিকায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরমধ্যে কৃষিতে ২৩০০ পরিবার, মৎস্যখাতে ২২০০ পরিবার, প্রাণিসম্পদ ২৫০০ পরিবার, বনজ-ফলদ-সবজি ১৪০টি পরিবার এবং প্রশিক্ষণ ও উপকরন প্রদান করা হয়েছে ৬০০ পরিবারকে। ৬৫০ হেক্টর সবুজ বেস্টনীতে বৈচিত্রময় ১২ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হয়েছে। জলবায়ুর অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উপকূলের ২৮ হেক্টর পরিত্যক্ত ভূমিতে বনজ, ফলদ, মৎস্য ও সবজি নামক উদ্ভাবনী মডেলে জীবিকায়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দূর্যোগকালে উপকূলীয় মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সিপিপির ৬০০০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ উপকরন ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উপকূলীয় আটটি উপজেলা সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ২০টি বনজ সম্পদ সংরক্ষণ গ্রুপ গঠণ করে উপকূলীয় সবুজ বেস্টনী সুরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ২০টি স্লুইসগেট সংস্কার ও তিন কিলোমিটার খাল খননের মাধ্যমে পাঁচ লাখ জলাবদ্ধ মানুষের জীকিায়ন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জলবায়ু অভিযোজনমূলক তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য ১০টি পরিবেশ বান্ধব কমিউনিটি রিসোর্স সেন্টার এবং গবাদপশুর দূর্যোগকালীন আশ্রয় প্রদানের জন্য চারটি মাটির কিল্লা তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় বনায়ন ও পুনঃবনায়নে কমিউনিটিভিত্তিক অভিযোজন বিষয়ক কর্মশালায় উপকূলীয় ৮টি উপজেলার জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বাস্তবায়নকৃত কর্মকান্ডের বিষয় তুলে ধরা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় আয়োজিত সরকার, বন অধিদফতর, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) ও ইউএনডিপির সহযোগিতায় রবিবার সকাল নয় টায় কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলা মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প ম্যানেজার ড. মোহাম্মদ মুজাম্মেল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান। অন্যান্যের মধ্যে ইউএনডিপির প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট আরিফ এম ফয়সাল, পটুয়াখালীর উপ-প্রধান বনসংরক্ষক আমিনুল ইসলাম, বরগুনার পাথরঘাটার ইউএনও মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনসহ জলবায়ু পরিবর্তন ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনার কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক করনীয় বিষয়ে আলোচনা করেন অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান। বিশেষ করে এসডিজি-১৩: জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন ও এর প্রভাব মোকাবেলায় চরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে ভূমিকা রাখবে বলে কর্মশালার আলোচনায় উঠে আসে। এ প্রকল্প নেয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুর জেলার আটটি উপজেলায় কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয় এ কর্মকান্ডের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন। সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, ভূমি, কৃষি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং এনজিও সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করে আসছে। বক্তারা এ কর্মকান্ড উপকূলীয় অপর উপজেলায় বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন।
×