ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের তথ্য প্রকাশ

অপহরণের তিনদিনের মাথায় শিশুকে উদ্ধার

প্রকাশিত: ১২:৪৮, ২০ জানুয়ারি ২০২০

  অপহরণের তিনদিনের মাথায় শিশুকে  উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপহরণের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এক শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব-১। এ সময় চার অপরহরণকারীকেও হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব ১ এর অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ সময় জানানো হয়-বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে গাজীপুরের বাসিন্দা শরিফপুরের আশরাফ আলীর বাসায় যান চারজন গার্মেন্টস কর্মী। ভাড়া নিয়ে আলাপের ফাঁকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে আশরাফ আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করে ফেলা হয়। এরপর ঘরের নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটসহ আশরাফ আলীর ১৬ মাস বয়সী শিশু সন্তান আরাফকে অপরণ করে নিয়ে যায় চক্রটি। এরপর ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়, অন্যথায় শিশু আরাফকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়। পরিবারের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটিকে উদ্ধার অভিযানে নামে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১) একটি দল। প্রথমে গাজীপুরের গাছা এলাকায় বিকাশে টাকা লেনদেনের সময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য জেরিন ইশরাত জুলি (২২) ও তারিন নুশরাত তুলিকে (১৬) আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাইনবোর্ড এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত শিশু আরাফকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের অপর দুই সদস্য আমিনুল ইসলাম (২৯) ও সুমনকে (৩০) আটক করা হয়। রবিবার রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১৬ জানুয়ারি গাজীপুর মহানগরীর শরিফপুরের আশরাফ আলীর বাসা ভাড়া নিতে যান জেরিন ইশরাত জুলি। বাসা পছন্দ হয়েছে জানিয়ে দুইদিন পর শনিবার সকালে জুলি তার ছোট বোন তারিনকে নিয়ে অগ্রিম ভাড়া দেয়ার জন্য যান। এ সময় আলাপচারিতার ফাঁকে আশরাফ আলীসহ পরিবারে সবাইকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে দেন। এক পর্যায়ে সবাই অজ্ঞান হয়ে পড়লে জুলি ও তারিন আশরাফ আলীর ১৬ মাস বয়সের শিশু আরাফকে অপহরণ করে এবং বাসার নগদ টাকা, স্বর্ণলঙ্কার ও মোবাইলফোন চুরি করে পালিয়ে যায়। পরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পাশের বাসার লোকজন এসে তাদের কাছের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে সুস্থ হওয়ার পর আশরাফ আলী জানতে পারেন শিশু আরাফ নিখোঁজ। তখন অপহরণকারীরা চুরি করা ভিকটিমের মায়ের মোবাইলফোন থেকে ফোন করে আরাফকে মুক্ত করতে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের আটক করে এবং শিশু আরাফকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব জানতে পেরেছে- তারা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তারা সবাই পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল গাজীপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট কিনে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করার। আর এই স্বপ্ন পূরণের জন্যই তারা এই অপহরণ করেছে।
×