ইশরাত নিশাত ছিলেন বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে একজন পরিচিত মুখ। প্রয়াত গুণী অভিনেত্রী নাজমা আনোয়ারের মেয়ে। অভিনয়ের প্রতি দৃঢ় ভালবাসার এবং সৃজনশীল মনন ছিল তার ছোট বেলা থেকেই। মঞ্চ নাটকপ্রেমীরা তাকে খুব ভাল করেই জানতেন। নাটকপাড়া থেকে শিল্পকলা সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষটি থিয়েটারের মানুষদের মাতিয়ে রাখতেন। ভালবাসতেন তাকে এই অঙ্গনের সকলে।
থিয়েটার নিবেদিত ইশরাত নিশাত গত ১৯ জানুয়ারি সবাইকে হতাশ করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে মুহূর্তেই শোকের ছায়া নেমে আসে নাট্যাঙ্গনে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনেক সৃহৃদ দুঃখ প্রকাশ করে ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছে। তাকে নিয়ে নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা লিখেছেন-‘গুডবাই ইশরাত।’
ইশরাত নিশাতের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দিয়ে এবং নানারকম স্মৃতিচারণমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ভক্তরা। থিয়েটার থেকে যারা টিভি নাটকে এসেছেন তারা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তাকে।
শোবিজ জগতের শিল্পীরাও স্মৃতিচারণমূলক লেখা দিয়ে তাকে ভালবাসায় সিক্ত করছেন।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘নিশাত আপা, আপনার আসল ঠিকানা আসলে কোথায় ছিল? থিয়েটারে, আমাদের অন্তরে না কী আপনি যেখানে চলে গেলেন- সেখানে?’
থিয়েটার অঙ্গনে ইশরাত নিশাত বিদ্রোহী কণ্ঠ হিসেবে সবার কাছে পরিচিতি ছিলেন।
ঢাকার অন্যতম দর্শকপ্রিয় নাট্যদল দেশ নাটকের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন অনেক বছর ধরে। এই নাট্যদলের হয়ে অভিনয় যেমন করেছিলেন, তেমনি নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি।
দেশ নাটকের হয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন ইশরাত। তার নির্দেশিত মঞ্চ নাটক ‘অরক্ষিতা’ নাটকপাড়ায় বেশ প্রশংসা পেয়েছে। এছাড়াও দেশ নাটকের হয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন ‘যাত্রানাস্তি’ ও ‘পার্থক্য’ নাটক দুটি। দেশ নাটকের প্রথম দিকের সব নাটকেই তিনি অভিনয় করেছিলেন। মঞ্চে আলোক নির্দেশক হিসেবেও কাজ করেছেন ইশরাত। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন আবৃত্তি শিল্পীও।
গেল বছরের শেষ দিকে ইশরাত নিশাত একটি সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। নাসিরউদ্দিন ইউসুফ পরিচালিত সিনেমাটির নাম ‘আলফা’।
এদিকে ইশরাত নিশাত সব শেষ এ্যাকটিং নির্দেশক হিসেবে দেশ নাটকের ‘জলবাসর’ নাটকে কাজ করছিলেন। মাসুম রেজা নাটকটির নাট্যকার ও নির্দেশক। এ মাসেই ‘জলবাসর’ নাটকটির শো হওয়ার কথা ছিল।