ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩৯ পাচারকারী আটক

যশোর সীমান্তে দুই বছরে ১৩৬ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

 যশোর সীমান্তে দুই বছরে ১৩৬ কেজি  স্বর্ণ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর সীমান্ত দিয়ে চোরাপথ দিয়ে ভারতে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। গত দুই বছরে যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতে স্বর্ণ পাচারের সময় ১শ’ ৩৬ কেজি স্বর্ণ আটক করেছে বিজিবি, পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময়ে ৩৯ জন সোনা পাচারকারীকে আটক করা হয়। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যশোর-বেনাপোল সড়কটি ভারতে সোনা পাচারের প্রধান রুটে পরিণত হয়েছে। যদিও সোনা পাচারের জন্য বেনাপোল সড়কটি নব্বই দশকে পরিচিতি লাভ করে। সেই থেকে এ রুটে সোনা পাচার শুরু হয়। এরপর প্রায় দুই যুগ বন্ধ থাকার পর ২০১৭ সাল থেকে বেনাপোল সড়ক দিয়ে ফের স্বর্ণ পাচার শুরু হয়। আন্তর্জাতিক একটি শক্তিশালী পাচারকারী সিন্ডিকেট এসব স্বর্ণ পাচার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। ওই সিন্ডিকেটটি মধ্যপ্রচ্যের দেশ থেকে বিমানযোগে এদেশে স্বর্ণের বার নিয়ে আসে। এরপর তারা ছোট ছোট অংশ করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়। পথে টাকার বিনিময়ে কাজ করে বহনকারীরা। তবে ঢাকা ও বেনাপোলে তাদের নির্দিষ্ট এজেন্ট রয়েছে বলে প্রশাসনিক ওই সূত্রটি জানিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এরমধ্যে গোগা, কায়বা, পুটখালী, দৌলতপুর, সাদিপুর, গাতিপাড়া ও রঘুনাথপুর, শিকারপুর, শালকোনা, কাশিপুর, ঘিবা, রঘুনাথপুর, বাহাদুরপুর, উল্লেখযোগ্য। অভিযোগ রয়েছে, পরিবহন কর্মচারী, চেকপোস্টের বৈধ ও অবৈধ মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী, সিএ্যান্ডএফ কর্মচারী ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের মাধ্যমে সীমান্ত পথে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। এসব ঘটনায় কেউ কেউ আটক হলেও পর্দার আড়ালে থেকে যায় প্রকৃত চোরাকারবারিরা। গত সোমবার রাতে যশোর ৪৯ বিজিবির সদস্যরা বেনাপোল সড়কের নতুন হাট ইটভাঁটির সামনে থেকে এ যাবতকালের বৃহৎ একটি স্বর্ণ পাচারের চালান আটক করেছে। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১১ কেজি স্বর্ণের বার ও প্রাইভেট কার। আটক হয়েছে তিনজন। বেনাপোল সীমান্তমুখী একটি প্রাইভেট কারে (ঢাকা মেট্রো গ-৪৩-৪২২৯) বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ৯৪ পিস এ সোনার বার উদ্ধার করেন বিজিবি সদস্যরা। পাচারকারীরা এগুলো প্রাইভেটকারের পায়ের স্কেলটরের সঙ্গে টেপ দিয়ে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রেখেছিল। বিজিবি গোপন সূত্রে জানতে পারে ঢাকা থেকে ওই নম্বরের প্রাইভেট কারে সোনার বারগুলো ভারতে পাচারের উদ্দেশে বেনাপোলে নিয়ে যাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে তারা নতুন হাট থেকে গাড়িসহ স্বর্ণের বারগুলো আটক করে। যার ওজন ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম। যার মূল্য ছয় কোটি ষাট লাখ টাকা বলে জানান ৪৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা। প্রাইভেট কারের মালিক বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের ইমান আলী। তার বিরুদ্ধেও পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বিজিবি অধিনায়ক। গত ২০ জানুয়ারি আটক প্রায় ১১ কেজি সোনাসহ গত দুই বছরে বেনাপোল সীমান্ত পথে ভারতে পাচার হওয়ার সময় মোট ১৩৬ কেজি স্বর্ণ আটক করেছে বিজিবি, পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। অভিযান চালিয়ে ৩৯ সোনা পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। তবে যারা আটক হয়েছে তারা প্রকৃত মালিক নয়। তারা টাকার বিনিময়ে এসব স্বর্ণ বহন করে থাকে। আসল ব্যবসায়ীরা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এছাড়া ঢাকা থেকে কলকাতার দূরত্ব কম হওয়ায় স্বর্ণ চোরাকারবারিরা এ সীমান্ত নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছেন।
×