ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধার মানস নদী এখন পানি শূন্যতায় তার অসিত্ব হারাতে বসেছে

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

  গাইবান্ধার মানস নদী এখন পানি শূন্যতায় তার অসিত্ব হারাতে বসেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধা সদর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা মানস নদী এখন যৌবন হারিয়ে মৃত প্রায় খালে পরিণত হয়েছে। মাঘ মাসের প্রারাম্ভে শীর্ণকায় রূপ নেয়া নালা সাদৃশ্য এই নদীটির এখন কোথাও পানি আছে আবার কোথাও নেই। যেখানে পানি আছে সেখানে অতিসহজেই হেঁটে পারাপার হচ্ছে মানুষ। অথচ বর্ষাকালে এই মানস নদী পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। নদীর বুকে তখন নৌকাও চলাচল করে। মাঝিরা মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, মানস নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার একটি নদী। নদীটি গাইবান্ধা জেলায় প্রবেশ করে ব্রহ্মপুত্র নদীর সাথে মিলেছে। মানসের দৈর্ঘ্য ১৭ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৫০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। তবে এবার ফাল্গুন চৈত্রমাস আসার আগেই মানস নদী অধিকাংশ স্থানে পানি শূন্য হয়ে কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে এবং দু’পাশ জুড়েই বোরো ধানের বীজতলায় ছেয়ে গেছে। লক্ষ্মীপুর-মালিবাড়ি-দারিয়াপুর-ঘাগোয়া-গিদারির উপর দিয়ে একে বেঁকে বয়ে যাওয়া শীর্ণকা মানস নদী এখন সবুজের সমারোহ। শীর্ণকায় নালায় যে সমস্ত এলাকায় সামান্য পরিমাণ পানির প্রবাহ বইছে তা বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহৃত হবে বলে কৃষকরা জানালেন। এলাকার কৃষকরা জানালেন, মানস নদীর এ অবস্থা আগে ছিল না। কিন্তু এখন পৌষ মাসের শুরু থেকেই নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় এই মানস নদী অকাল পানি শূন্যতার শিকার হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে বলে জানালেন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা। এই নদী থেকে মাছের উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলায় মাছের সরবরাহ ব্যাপক হারে কমে গেছে। ফলে নদী নির্ভর মৎস্যজীবীরা পড়েছে চরম বিপাকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই এই মানস নদী তার অসিত্ব হারিয়ে ফেলবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন এলাকার কৃষিজীবি ও মৎস্যজীবীরা।
×