ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কল্পরাজ্যের এক গল্প

প্রকাশিত: ০৯:৪৮, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

  কল্পরাজ্যের এক গল্প

আইজ্যাক এ্যাসিমভের ফাউন্ডেশন সম্পর্কে বলতে গেলে বিস্তর কথা বলা যায়। এ যাবতকালের শ্রেষ্ঠ বেস্টসেলিং থ্রিলোজি সায়েন্স ফিকশন বলা হয় ফাউন্ডেশনকে। এক ধরনের উচ্চমার্গীয় সায়েন্স ফিকশন, যেখানে সায়েন্সের সঙ্গে ফিকশনের বৃহৎ মেলবন্ধনের পাশাপাশি কল্পরাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, মানবজাতির সহজাত বৈশিষ্ট্য, পরবর্তী প্রজন্মের উৎকর্ষতা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিকদের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তা-চেতনা ইত্যাদি নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে। এ্যাসিমভ বেশ তরুণ বয়সেই ফাউন্ডেশন রচনা করেন এবং এর প্রায় তিন দশক পরে সেটি আবার পরিবর্ধন করেন। ষাটের দশকে প্রকাশ পাওয়া এ উপন্যাসে বিভিন্ন পর্বে মনোইতিহাসবিদদের কথা, মেয়রদের কথা, বণিকদের কথা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং হ্যারি শেলডনের দূরদৃষ্টির সেই ফাউন্ডেশন, যা বিভিন্ন গ্রহ এবং গ্যালাক্সির মধ্যে ভবিষ্যতের প্রকল্প বজায় রাখে, সে সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করা রয়েছে। সাইকোলজিক্যাল রিলের মাধ্যমে পুরো মহাজগতের পরিসংখ্যানের ফলে ভবিষ্যতবাণী করেছেন বিজ্ঞানী হ্যারি শেলডন এবং তাদের গ্রহ এ্যানাক্রিয়ন অদূর ভবিষ্যতে ধ্বংস হতে যাচ্ছে এমন মত প্রকাশ করায় তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের রোষানলের শিকার হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু মেয়র হার্ডিন বুঝতে পারেন সেই সহজ সমীকরণ। এরজন্য কাজ করে, অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যাতে ঘৃণার পাত্র হতে না হয় সেজন্য শেলডনের ইশারাকৃত পথেই রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছেন মেয়র হার্ডিন। এ কাজ করতে গিয়ে শেলডনের মতো তারও যে নেহায়ত কম শত্রু ছিল তা বলা যাবে না। এ্যাসিমভের ফাউন্ডেশন বাস্তববাদী এক কল্পগল্প। মিথ্যে কাহিনীর মতো তিনি প্লট সাজিয়ে আজগুবি কথা বলেননি। মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে যেসব জিনিস ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তার সবকিছুই পাওয়া যায় এই ফিকশনে। প্রযুক্তিনির্ভর হতে থাকলেও মানুষের নেতৃত্ব এবং প্রশাসিত করার জন্য রাজনীতিও যে প্রয়োজন এবং তা মানবজাতির ধ্বংস পর্যন্ত যে অবধারিত থাকবে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় এ্যাসিমভের ফাউন্ডেশনে। ফাউন্ডেশন সম্পর্কে অনেক বললেও খুব কমই বলা হবে। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে মানুষে মানুষে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং অনুভূতির বহির্প্রকাশ এই ফাউন্ডেশন। বলা যেতে পারে, সর্বসময়ের সেরা এক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী।
×