ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক মোবাইল ফোনে চলছে পুরো গ্রাম

প্রকাশিত: ১০:০০, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

এক মোবাইল ফোনে চলছে পুরো গ্রাম

বর্তমান সময়ে দৈনন্দিন জীবনে অন্যতম অনুষঙ্গ মোবাইল ফোন। ফোনবিহীন আমাদের যাপিত জীবন অকল্পনীয় প্রায়। তবে প্রচলনের প্রথম দিকে কিন্তু মোবাইল এতটা সহজলভ্য ছিল না। তখন বড় বড় শহরেও ব্যক্তির হাতে মোবাইল ফোনের দেখা মিলত কালেভদ্রে। তবে দিন বদলেছে। অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের চেয়ে মোবাইল ফোন এখন সবচেয়ে সহজলভ্য। বর্তমানে ধনী-গরিব সকলের হাতে এক বা একাধিক ফোন দেখা যায়। এমন সময় খোঁজ পাওয়া গেল এমন একটি গ্রামের, যে গ্রামের মানুষ একটি ফোন দিয়ে তাদের সব ধরনের যোগাযোগ সম্পন্ন করে। গ্রামের নাম দান্দাবাহালি। অবস্থান ভারতের ওড়িশা রাজ্যের আঙ্গরজেলা। দান্দাবাহালিতে সব মিলিয়ে ৭২ পরিবারের বাস। অথচ মোবাইল মাত্র একটি। গ্রামের মানুষ দরিদ্র বলে তাদের মোবাইল কেনার টাকা নেই, ব্যাপারটি এমন নয়। প্রধান সমস্যা নেটওয়ার্ক। অধিকাংশ ফোন কোম্পানির নেটওয়ার্ক এই গ্রামে কাজ করে না। তাই গ্রামবাসীর মোবাইল কেনার সামর্থ্য থাকলেও তারা কিনতে আগ্রহী নয়। তাছাড়া অনেকের বাড়িতে দামী ফোন থাকলেও তা দিয়ে আর যাই হোক কথা বলা যায় না। তবে এই একটি মোবাইল ব্যবহার করতে গ্রামবাসীকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়। কারণ ফোনের মালিক বাসন্ত। গ্রামের সীমানা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে তার একটি দোকান আছে। এই দোকানের সামনে একটি গাছে তার ফোনটি ঝুলানো থাকে। নতুবা এই ফোনেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস কিংবা পুলিশকে ফোন করতে হলে, অথবা দূরের আত্মীয়-স্বজনের কুশলাদি জানতে গ্রামবাসীর ভরসা বাসন্তের মোবাইল। আত্মীয়-স্বজনরাও বাসন্তকেই ফোন করে। বাসন্ত তখন প্রয়োজনীয় খবর গ্রামে পৌঁছে দেয়। এমনকি প্রশাসনের লোকজনও প্রয়োজনে বাসন্তকে ফোন করে। এ যেন মোশাররফ করিমের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘মাইক’র বাস্তব রূপ। বাসন্ত প্রতিদিন ভোর চারটায় দোকান খোলে। বন্ধ করে রাত নয়টায়। এই সময়ের মধ্যে গ্রামের লোকেরা তাদের জরুরী কলগুলো সেরে নেয়। তবে এই সেবা দিতে বাসন্ত টাকা নেয় না। এমনকি কিঞ্চিত বিরক্তও হয় না। কারণ হিসেবে বাসন্ত বলেন, গ্রামবাসী বিপদে পড়েই আমার কাছে ফোন করতে আসে। আমি তাদের জরুরী খবরগুলো পৌঁছে দিয়ে তৃপ্তি পাই। শাহিদুল ইসলাম
×