ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলের ফাইনালে এশিয়া-আফ্রিকা লড়াই

ফিলিস্তিনের বাধা আজ বুরুন্ডি

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

 ফিলিস্তিনের বাধা আজ বুরুন্ডি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে স্বাগতিক বাংলাদেশ প্রথম ও শেষবারের মতো ফাইনালে খেলেছিল ২০১৫ সালে। তারপর ২০১৬ ও ২০১৮ আসরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল। এবারের ২০২০ আসরেও একই চিত্র, শেষ চার থেকেই হতাশাজনক বিদায়। লাল-সবুজদের আক্ষেপে পুড়িয়ে আজ ফাইনালে পরস্পরের মোকাবেলা করবে এশিয়া বনাম আফ্রিকা, অর্থাৎ ফিলিস্তিন বনাম বুরুন্ডি। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল ৪টায় ম্যাচটি শুরু হবে। খেলা শেষে বিজয়ী ও বিজিত দলকে পুরস্কৃত করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভাল খেলে প্রথমবার শিরোপা জেতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বুরুন্ডি। অন্যদিকে নিজেদের শিরোপা ধরে রাখার প্রত্যয় ফিলিস্তিনের। এটা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ষষ্ঠ আসর (শুরু হয় ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে)। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ও সর্বশেষ আসরে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই বাজিমাত করেছিল ফিলিস্তিন। ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-৩ (০-০) গোলে তাজিকিস্তানকে হারিয়ে অভিষেকেই শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটি। এবার ফিলিস্তিনের মতো সেই কীর্তি গড়ার দারুণ সুযোগ আছে আফ্রিকান দেশ বুরুন্ডিরও। কেননা তারাও এই প্রথমবারের মতো এই আসরে অংশ নিয়েছে। যদিও ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ফিলিস্তিনের চেয়ে ৪৫ ধাপ পিছিয়ে তারা। যেখানে ফিলিস্তিনের র‌্যাঙ্কিং ১০৬, সেখানে বুরুন্ডির ১৫১। তবে র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকলেও এই আসরে ফিলিস্তিনের চেয়ে ঢের ভাল খেলে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বুরুন্ডি। তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলশৈলী এবং প্রতি ম্যাচে গোলের বন্যা বইয়ে দেয়ার ক্ষমতা (৩ ম্যাচে ১০ গোল, ফিলিস্তিন সমান ম্যাচে মাত্র ৫ গোল) প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার। অথচ টুর্নামেন্টের শুরুতে তাদের নিয়ে কতই না হাসাহাসি হয়েছে! সে সবের যোগ্য জবাব ইতোমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে তারা। তবে গোল হজমের ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের চেয়ে পিছিয়ে আছে বুরুন্ডি। তারা যেখানে ২ গোল হজম করেছে, সেখানে ফিলিস্তিন এখনও কোন গোল হজম করেনি। অবশ্য এই আসর শুরুর আগেই ফুটবলবোদ্ধারা অনুমান করেছিলেন ফাইনাল খেলবে ফিলিস্তিন-বুরুন্ডিই। তাদের অনুমানই সত্যি হয়েছে। ফিলিস্তিন এবারের আসরে গ্রুপ পর্বে ‘এ’ স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে ওঠে। সেমিফাইনালে অপর আফ্রিকান দেশ সিশেলসকে ১-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায়। পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপে মরিশসকে ৪-১ গোলে এবং সিশেলসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে বুরুন্ডি। সেখানে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে নাম লেখায়। বুরুন্ডির অন্যতম ফরোয়ার্ড জসপিন এনশিমিরিমানা এখন পর্যন্ত ৭ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার আসনটি ধরে রেখেছেন। এছাড়াও করেছেন দুটি হ্যাটট্রিকও, যা আগের পাঁচ আসরেও কেউ করতে পারেননি। ফিলিস্তিনের কোচ মাকরাম দাবুব ফাইনাল প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা শিরোপা ধরে রাখতে আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলেই হবে। তবে প্রতিপক্ষ হিসেবে বুরুন্ডি খুবই শক্তিশালী। তাদের হারানোটা অনেক কঠিন হবে। তবে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’ বুরুন্ডির কোচ বিপফুবুসা জসলিন বলেন, ‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই এখানে এসেছি। দলের খেলোয়াড়রা মুখিয়ে আছে ফাইনাল খেলতে। তবে ফিলিস্তিন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। তাদের সমীহ করেই খেলব এবং শিরোপাও ছিনিয়ে নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করব।’ একদিকে ‘লায়ন্স অব ক্যানান’ ফিলিস্তিন। অন্যদিকে ‘দ্য সোয়ালোস’ খ্যাত বুরুন্ডি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হলেও বুরুন্ডিকে হারিয়ে দেয়াটা খুব একটা সহজ হবে না ফিলিস্তিনের জন্য। এখন দেখার বিষয়, প্রথম দল হিসেবে ফিলিস্তিন টানা দুবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কি না কিংবা ফিলিস্তিনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিষেকেই শিরোপা জিততে পারে কি না বুরুন্ডি। এশিয়া, না আফ্রিকাÑ কার ভাগ্যে জুটবে শিরোপা, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
×