ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া হবে নির্বাচনী এলাকা

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

  নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া  হবে নির্বাচনী এলাকা

শংকর কুমার দে ॥ ঢাকার উত্তর দক্ষিণ দুই সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিরাপত্তায় বিজিবি র‌্যাব পুলিশ আনসার ভিডিপি গোয়েন্দাসহ মোতায়েন থাকছেন প্রায় ৪৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় চার দিনের জন্য ১২৯ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। নিরাপত্তায় সহায়তা করবে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ নিয়ন্ত্রণ ও তাৎক্ষণিক দ্রুততার সঙ্গে নির্দেশনা দেয়ার জন্য খোলা হবে কন্ট্রোল রুম। দুই দিন আগ থেকে নির্বাচনের দিন ও দুই দিন পর পর্যন্ত মোট পাঁচ দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানায়, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪২ হাজার ৮৭০ সদস্য। নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকেই তাদের মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনের দিন ছাড়াও ভোটের দুই দিন পর পর্যন্ত মাঠে থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মোবাইল টিম টহল দেবে নির্বাচনী এলাকায়। যেখানেই কোন অঘটন বা অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা সংঘর্ষ, সংঘাতের খবর পাওয়া যাবে তাৎক্ষণিক দ্রুততার সঙ্গে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের গ্রেফতার করাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের আগে থেকেই চিহ্নিত সন্ত্রাসী অপরাধী, দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অভিযানে থাকবে। তবে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কোনক্রমেই কোন দলের প্রার্থীকে গ্রেফতার করা যাবে না। নির্বাচনের আগে থেকেই কেন্দ্রে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যেই নজরদারি শুরু হয়েছে। ভোটে নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এসব পরিকল্পনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও কেন্দ্রগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। ভোটের দিন কেন্দ্রের চৌহদ্দির মধ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ, দিয়াশলাই ও লাইটারসহ কোন দাহ্য পদার্থ বহনে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। ভোটারদের নির্বিঘেœ ও স্বাচ্ছন্দ্যে কেন্দ্রে যাওয়া আসার জন্য আগে থেকেই নিবিড় টহলের ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের উত্তর সিটির মোট ১ হাজার ৩১৮ কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে সদস্য থাকবে। সমান সংখ্যক সদস্য দক্ষিণের ১ হাজার ১৫০ কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। তবে ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সঙ্গে অঙ্গীভূত থাকবেন আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা। ঢাকা সিটির উত্তরের ৫৪ সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য মোবাইল ফোর্সের টিম ৫৪, স্ট্রাইকিং ফোর্সের টিম ১৮, র‌্যাবের ৫৪ টিম ও বিজিবির সদস্য থাকবে ২৭ প্লাটুন। আর দক্ষিণে ৭৫ সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য মোবাইল ফোর্স ৭৫, স্ট্রাইকিং ফোর্স ২৫, র‌্যাবের ৭৫ টিমসহ ৩৮ প্লাটুন বিজিবি সদস্য থাকবে। মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও মূলত নির্বাচনের আগের রাত, নির্বাচনের দিন ও রাতের সময়কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগের রাতে যাতে সন্ত্রাসী অপরাধী, দুর্বৃত্তরা কোন প্রকার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে সেজন্য অভিযান পরিচালনাসহ থাকবে কঠোর নজরদারি। নির্বাচনের দিন নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া হবে দুই সিটি এলাকা, যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে ও নিশ্চিন্তে ভোট দিতে পারেন। পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, দুই সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কাজ চলছে। ইসির নির্দেশ অনুযায়ী দুই সিটি এলাকার নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কোন ওয়ার্ডে সন্ত্রাসী অপরাধী ও দুবর্ৃৃত্তরা নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে সে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এবার সিটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা হবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ, নজিরবিহীন, যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে।
×