ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটিং ও ফিল্ডিং ব্যর্থতায় হারল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

ব্যাটিং ও ফিল্ডিং ব্যর্থতায়  হারল  বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ উইকেটে বোলারদের জন্য বিশেষ কিছু ছিল না। এরপরও বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা স্কোরবোর্ডে বড় স্কোর দাঁড় করাতে পারেননি। আর তাতেই প্রথম টি২০তে হারল বাংলাদেশ। হার হলো ৫ উইকেটে। প্রথম টি২০ হারায় এখন সিরিজ হারের মুখেই পড়ে গেল বাংলাদেশ। যেখানে সিরিজ জয়ের আশা নিয়ে পাকিস্তান সফরে যায় বাংলাদেশ, সেখানে আজ দ্বিতীয় টি২০ অথবা সোমবার তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচের মধ্যে যে কোন একটি ম্যাচ হারলেই বাংলাদেশের সিরিজ হার। পাকিস্তান যে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে গেছে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা আগে ব্যাটিং করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। একটি হাফসেঞ্চুরির দেখাও মিলেনি। শুরুতে তামিম ইকবাল ও নাঈম শেখ মিলে যে ৭১ রানের জুটি গড়েন, সেটিই ৫০ রান উর্ধ্ব জুটি হয়ে থাকে। এরপর দল আর ৭০ রান করতে পারে। ৭১ রানে যখন প্রথম উইকেট পড়ে, তখন ১১ ওভার ছিল। সেখান থেকে পরের ৯ ওভারে ৭০ রান করতে পারে বাংলাদেশ। তাতে করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৪১ রান করে। টি২০তে শেষ ১০ ওভারেই বেশি রান হয়। টি২০তে শেষদিকে ঝড় তুলেন ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা তা করতে পারেননি। তবে পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত নৈপুন্য দেখিয়ে দলে সুযোগ পাওয়া অভিষিক্ত এহসান আলী সেই ভুল করেননি। তিনি ৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তিনি আউট হওয়ার পর শোয়েব মালিক ৪৫ বলে ৫ চারে অপরাজিত ৫৮ রান করে পাকিস্তানকে জেতান। শ্রীলঙ্কার কাছে টানা তিন টি২০ ম্যাচ হারের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টি২০তে জিতে পাকিস্তান। ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯.৩ ওভারে ১৪২ রান করে ম্যাচ জিতে। শুরুতে পাকিস্তানেরও বারোটা বাজে। ৩৫ রানেই দুই উইকেট হারায়। তখন মনে হয়, যদি আরেকটু ভাল বোলিং করা যায়, এই ভাল বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা রাখা যায়, তাহলে জেতাও অসম্ভব নয়। কিন্তু এহসান আলি ও শোয়েব মালিক মিলে দলকে ৮১ রানে নিয়ে যান। এমন সময় এহসান (৩৬) আউট হলেও মালিক অভিজ্ঞতার মান রাখেন। তিনি দলকে শেষপর্যন্ত টেনে নেন। তবে দলের ১২৫ রানে গিয়ে ৪৭ রান করা মালিক ক্যাচ আউট হওয়া থেকে বাচেন। পাকিস্তানের আরও দুটি উইকেট পড়ে। তবে শেষ ওভারে গিয়ে জিততে ৬ বলে ৫ রান লাগে। যে কোন দলের পক্ষেই জেতা সম্ভব। পাকিস্তানও ৩ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে নেয়। তবে ৪ বলে জিততে যখন ২ রানের দরকার থাকে তখন ৫ রানে অপরাজিত থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানকে আউট করার সুযোগ কাজে লাগানো যায়নি। ক্যাচ আউট হওয়া থেকে রিজওয়ানও বাচেন। ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে ২ রান নিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মালিক ও রিজওয়ান। তামিম (৩৯) মন্থর ব্যাটিং করার পরও যখন দলের ৭১ রানে আউট হয়ে যান, এরপর যে ব্যাটসম্যানই উইকেটে আসেন, তার ঝড়ো ব্যাটিং করার দরকার ছিল। কিন্তু দলের ৯৮ রান হতেই লিটন কুমার দাস (১২) ও সর্বোচ্চ রান করা নাঈম শেখ (৪৩) আউট হয়ে যান। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুব (৯), সৌম্য সরকার (৭) ব্যাট হাতে নেমে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। তাতে করে দল চাপে পড়ে যায়। শেষদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (১৯*) ও মোহাম্মদ মিঠুন (৫*) দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। তাও পাকিস্তানকে ১৪২ রানের বেশি টার্গেট দেওয়া যায়নি। টি২০তেও রানে সাকিব আল হাসানকে (১৫৬৭ রান) ছাড়িয়ে গিয়ে ১৫৯৫ রান করা তামিম আউটের পর লিটন, নাঈম যে ১৫তম ওভারে তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আউট হয়ে যান, সেখানেই আসলে বাংলাদেশের বড় ক্ষতি হয়ে যায়। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ৬ ওভারে ৩৫ রান করে। তামিম ফেরায় স্বাভাবিকভাবেই ওপেনিংয়ে একজনকে মিলে যায়। কিন্তু দ্বিতীয় জন কে? এই প্রশ্ন ছিল। কারণ, দলে মোট ছয় ওপেনার আছেন। শেষ পর্যন্ত ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজে দুর্দান্ত নৈপুন্য দেখানো নাঈম শেখকেই ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী হিসেবে রাখা হয়। নাঈম সেই প্রতিদান দেনও। কিন্তু বাকিরা এমনই নিষ্প্রভ থাকেন, তাতে বড় স্কোর গড়া যায়নি। পাকিস্তান পেসার হারিস রউফকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। তিনি ‘১৫০’ কিমি গতিতে বল করেন। বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেবেন। কিন্তু অভিষেক টি২০ ম্যাচে বল হাতে খুব ভাল কিছু করতে পারেননি। ১ উইকেট নিতে পারেন। তবে নিয়ন্ত্রিত বোলিং সব বোলারই করেন। আর তাতেই বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা কাত হন। শেষপর্যন্ত হারও হয়।
×