ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভাইরাসের উৎস বিষধর সাপ!

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

করোনা ভাইরাসের উৎস বিষধর সাপ!

অনলাইন ডেস্ক ॥ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিন-সহ বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল উৎসই হচ্ছে বিষধর চিনা সাপ ক্রেইট এবং কোবরা সাপ। করোনা ভাইরাস বাতাসে মিশে প্রাথমিকভাবে স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখির শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ করে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। • করোনার নেপথ্যে কোবরা? • আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়িয়ে চিনের বাইরে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। • এর আগে চিনের বাইরে থাইল্যান্ড ও জাপানে তিন জনের সংক্রমণের খবর মিলেছিল। • এখন সুদূর মার্কিন মুলুকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়িয়ে চিনের বাইরে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এর আগে চিনের বাইরে থাইল্যান্ড ও জাপানে তিন জনের সংক্রমণের খবর মিলেছিল। এখন সুদূর মার্কিন মুলুকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন এক ভারতীয় মহিলাও। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে আশ্চর্যজনক এক তথ্য। চিনের দুই প্রজাতির সাপ থেকেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিন-সহ বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল উৎসই হচ্ছে বিষধর চিনা সাপ ক্রেইট এবং কোবরা সাপ। করোনা ভাইরাস বাতাসে মিশে প্রাথমিকভাবে স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখির শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ করে। এর ফলে প্রাথমিকভাবে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়। এর আগে ২০১৯ সালে চিনের হুয়ান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসের বিষয়টি সামনে আসে। যা খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে এবারের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকও করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'র (WHO) বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি। চিনা ভাইরাসের বিস্তারের জেরে বিশ্বে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কিনা, সে বিষয়েও শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। উল্লেখ্য, গত দশকে মাত্র পাঁচবার বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জরুরি মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। চিনা ভাইরাসের বিস্তার যে উদ্বেগজনক, তা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। উদ্ভূত পরিস্থিতিকে জটিল এবং উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বুধবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, 'এই বিষয়ে আমি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ যাচাই করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।' কীভাবে এই করোনা ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল, WHO চিনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তার তদন্ত করে দেখছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। লেখাপড়ার সূত্রের উহান শহরে বহু ভারতীয় ছাত্রের বসবাস। এই সময়ে দেশে ফিরছেন পড়ুয়ারা। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আশঙ্কা, যদি তাঁদের কেউ ওই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে এ দেশে আসেন ও তা থেকে তার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হতে পারে। তাই দেশের সমস্ত বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। চিন ও হংকং থেকে এদেশে কেউ এলে বিমানবন্দরেই তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে। ২০০২-২০০৩ সালে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্সের সংক্রমণে দুনিয়াজুড়ে প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার পিছনেও ছিল করোনা ভাইরাস। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই নতুন সংস্করণ সেই সাবেক করোনা ভাইরাসেরই জ্ঞাতি। তবে এখনই নয়া ভাইরাসটিকে সার্সের মতো বিপজ্জনক ভাবার কারণ নেই বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তাহলে এত আশঙ্কা কেন? আসলে এর গঠনগত বৈশিষ্ট্য, অভিযোজনের ক্ষমতা বা সংক্রমণের মাধ্যম, কিছুই জানা নেই। ফলে সেটিকে প্রতিহত করা যাবে, সে ব্যাপারেও আঁধারে তাঁরা। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাথমিক ধারণা, এর সঙ্গে সামুদ্রিক খাবারের বাজারের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে। অগ্রিম সতর্কতাই তাই বিধেয়। চিন থেকে আগত বিমান যাত্রীদের জন্য তাই থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত করেছে মুম্বই বিমানবন্দর। অভিবাসন সংক্রান্ত চত্বর পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মধ্যে দিয়ে তাঁদের যেতে হবে বলে জানিয়েছে এয়ারপোর্ট হেলথ অর্গানাজেশন (এপিএইচও)। যদি কারও মধ্যে রোগের উপসর্গ মেলে, সেক্ষেত্রে তাঁকে আইসোলেশন হাসপাতালে পাঠানো হবে। চিন-সফরে যাওয়া ভারতীয়দের জন্য নির্দেশিকাও জারি করেছে সরকার। হাতধোয়া, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে সে সংক্রান্ত আচরণবিধি মেনে চলা ও সর্বোপরি কাউকে দেখে অসুস্থ বলে মনে হলে তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে তাতে। রান্না না করা মাংস খেতে ও খামারে যেতেও বারণ করা হয়েছে যাত্রীদের। সূত্র- এই সময়
×