ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে এখন পঁচাত্তরের মতোই একদলীয় শাসন চলছে : মওদুদ

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

দেশে এখন পঁচাত্তরের মতোই একদলীয় শাসন চলছে  : মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে এখন পঁচাত্তরের মতোই একদলীয় শাসন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। মওদুদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্ত করতে বিএনপি আন্দোলন করবে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তি একই সূত্রে গাঁথা। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, দেশের মানুষের কাছে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কখনোই গ্রহনযোগ্য নয়। তারা নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করেছে। দেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরে পেতে চায়। দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন জনগন বিএনপির ওপর অর্পন করেছে। তিনি বলেন, একদলীয় শাসন থেকে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং পরবর্তীতে দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে খালেদা জিয়া দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করে গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়েছিলেন। আজকে সেই গণতন্ত্র আমাদের নেই। মওদুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বাকশাল প্রবর্তন করা হয়। সেদিন সংসদে বিনা আলোচনায়, বিনা বিতর্কে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী বিল মাত্র ১১ মিনিটের মধ্যে পাস করিয়ে দেশের তখনকার প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির পদে শপথ গ্রহন করে রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হন। তখন দলের নামকরণ করা হয় বাংলাদেশে কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ অর্থাৎ বাকশাল। ২৫ জানুয়ারি বাকশালের জন্মদিন। মওদুদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশতাক আহমেদ কিছু সামরিক অফিসারের মাধ্যমে জাতির জনককে হত্যা করে ক্ষমতা গ্রহন করে দেশে জারি করেন মার্শাল’ল। ৪ জন ছাড়া সংসদ ও মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের সকল সদস্যই নিজ নিজ পদে থেকে গেলেন। সেই সরকারের সমর্থনে আওয়ামী লীগের ৪ জন নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় এবং তাদের সেই হত্যাকান্ডের অপরাধ মওকুফ করার জন্য ইনডেমেনিটি অডিন্যান্স তারা জারি করা হয়। মওদুদ বলেন, দেশে আজকে চলছে একদলীয় শাসন। ১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসনের ধ্যান-ধরনা এখন চলেছে। ওই সময়ে যেমন কোনো রাজনীতি ছিল না, এখনো দেশে কোনো রাজনীতি নেই। এখন কোনো কার্যকর সংসদ নেই, আইনের শাসন নেই, বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। এ অবস্থার অবসানে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মওদুদ বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছিলো তা পরবর্তিতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তানএরর জন্য ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করা হয়। এরপর একই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জনগনের ভোটের অধিকার হরণ করে আরো ২টি প্রহসনের নির্বাচন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।
×