ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দর্শক মুগ্ধতায় সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপ্তি

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২৬ জানুয়ারি ২০২০

দর্শক মুগ্ধতায় সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপ্তি

মনোয়ার হোসেন, কক্সবাজার থেকে ॥ প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও জমে উঠল আসর। নৃত্য-গীতসহ বহুমাত্রিক পরিবেশনায় আলোড়িত হলো সমুদ্রতট। শ্রোতা-দর্শকের মুগ্ধতায় শেষ হলো সৈকত সাংস্কৃতিক উৎসব। সেই সুবাদে সমুদ্র স্থানের সঙ্গে সংস্কৃতির সংযোগে মুখরিত হলো পর্যটন নগরী কক্সবাজার। প্রথমবারের মতো এই পর্যটন শহরে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী উৎসবের শেষ দিন ছিল শনিবার। বিকেল থেকেই উৎসবকে ঘিরে ভিড় জমে সংস্কৃতিপ্রেমীদের। শেষ দিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল শেখ কামাল ও ফিরোজ সাঁইয়ের বাংলাদেশের প্রথম ব্যান্ডদল স্পন্দনের পরিবেশানা। এছাড়া ও এদিন শোনা চট্টগ্রামের মাইজভা-ারি গান থেকে লোকজ বাংলার সুরাশ্রিত বাউল গান। পরিবেশিত হয়েছে বৈচিত্র্যময় পাহাড়ী নাচ। শারীরিক নৈপুণ্যের রিং ড্যান্স কিংবা হাই সাইকেল নামের এ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী কেড়েছে নজর। সমাপনী দিনের আয়োজনের সূচনা হয় এ্যাক্রোবেটিক শিল্পীদের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। একাডেমির এ্যাক্রোবেটিক শিল্পীরা উপস্থাপন করে পাইপ ব্যালেন্স, দিয়াবো ব্যালেন্স, রোপ রাউন্ড, রোলার বালেন্স, মার্শাল আর্ট, হাই সাইকেল ও রিং ডান্স। পুষ্প নৃত্য পরিবেশন বান্দরবানের পাংখুয়া সম্প্রদায়ের শিল্পীরা। এছাড়াও সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে কক্সবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি। ‘দুঃখিনী বাংলা, জননী বাংলা’, ‘মঙ্গল হোক এই শতকে’ ও ‘বুকের ভেতর আকাশ’ গানের সুরে নাচ করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। ‘খায়রুল লো তোর লম্বা মাথার কেশ/চিরল দাঁতের হাসি দিয়া পাগল করলি দেশ’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় যুগল নাচ। আলাউদ্দীন তাহের শুনিয়েছেন ‘মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা’। এছাড়া একক গান শোনান একাডেমির সঙ্গীতশল্পী সুচিত্রা, সেতু ও রূপসা। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল চট্টগামের মাইজভা-ারি গান। পরিবেশিত হয় জুম চাষসহ নানা বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা বান্দরবানের বিভিন্ন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি নৃত্য। খেয়াং সম্প্রদায়ের মাছ ধরা নৃত্যের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে নয়নজুড়ানো তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের যুগল নৃত্য, লুসাই সম্প্রদায়ের জীবন ধারা নৃত্য, চাক সম্প্রদায়ের জুম নৃত্য ও পাংখুয়া সম্প্রদায়ের পুষ্পনৃত্য। ব্যান্ডদল স্পন্দনের পরিবেশনা শুরু হয় ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গান দিয়ে। শ্রোতাকে উচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে এরপর দলটি গেয়ে শোনায় ফিরোজ সাঁইয়ের বিখ্যাত গান ‘ইস্কুল খুইলাছে রে মওলা ইস্কুল খুইলাছে’, ‘মন তুই চিনলি না রে’, ‘হিসাবি মহাজন’সহ বেশ কিছু গান। স্পন্দনের ভোকালে ছিলেন নাজিম ও আনন। কঙ্গো বাজিয়েছেন দলনেতা কাজী হাবলু। কণ্ঠশিল্পী নাজিম এবং গিটারিস্ট নিয়াজ ফিরোজ সাঁইয়ের ছেলে । উৎসব প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩ ফুট দীর্ঘ প্রতিকৃতি নজর কেড়েছে উৎসব উপভোগকারীদের।
×