ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাস-জঙ্গী-দুর্নীতি-দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে সব যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ২৬ জানুয়ারি ২০২০

সন্ত্রাস-জঙ্গী-দুর্নীতি-দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে  সব যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন শেখ হাসিনা

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, সারাবিশ্ব বলছে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বিষ্ময়কর, উন্নয়নের রোলমডেল। কিন্তু একটি দল বিএনপি, তাদের কোন উন্নয়নই চোখে পড়ে না। কারন এ দলটির সহযোগি সংগঠন হচ্ছে গ্রেনেড হামলাকারী, অগ্নিসন্ত্রাসী, জঙ্গী-সন্ত্রাসী, খুনী- স্বাধীনতাবিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুভয়কে জয় করে অগ্নিসন্ত্রাস-জঙ্গী-মাদক-দুর্নীতিবাজ-দারিদ্র্যতা-নিরক্ষরতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সব যুদ্ধে তিনি জয়ী হয়েছেন। প্রথমে স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এ দাবী জানান। আলোচনায় অংশ নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক, বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, সরকারি দলের নাসির উদ্দিন, সুলতানা নাদিরা, খন্দকার মমতা হেনা লাভলী, তাহমিনা বেগম, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, গণফোরামের সুলতান আহমেদ মনসুর আহমেদ ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান। আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও সাহসী নেতৃত্বে সব দিক থেকে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে। সকল সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গ্রেনেড হামলাসহ ২১ বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মৃত্যুভয়কে জয় করে সন্ত্রাস-মাদক-দুর্নীতি-দারিদ্র্যতা-নিরক্ষতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, সব যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতা মোকাবেলা করে দেশকে উপহার দিয়েছেন শান্তিময় উন্নত-সমৃদ্ধ ও অগ্রগতি। চীনে মারাত্মক আকারে দেখা দেয়া করোনাভাইরাস সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ সজাগ রয়েছি। নানা উদ্যোগ নিয়েছি, জনবল বৃদ্ধি করেছি। সকল সমুদ্রবন্দর, স্থল ও বিমানবন্দরে স্ক্যানার বসানো হয়েছে। যে কোন যাত্রী এই স্ক্যানারের মাধ্যমে আসলে তাকে আমরা সনাক্ত করতে পারব ওই যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রার মাধ্যমে। এ ব্যাপারে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকও ডাকা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা করেছি, করেনটাইন এরিয়াও তৈরি করেছি। সারাদেশে এই নির্দেশনা দিয়েছি। আর আগামীতে যাতে ডেঙ্গু বিস্তার করতে না পারে সেজন্য এখন থেকেই স্প্রে করার জন্য তিনি সিটি করপোরেশনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন হলে অবশ্যই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। এজন্য সবার মানষিকতার পরিবর্তন করতে হবে। ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, উন্নয়নের রোলমডেলের স্বীকৃতি পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সবাইকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারবে। শেখ হাসিনার হাত যত শক্তিশালী হবে, তত বেশি দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতি পাবে। তিনি বলেন, যেসব এলাকায় গ্যাস লাইন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না সেসব এলাকায় এলপিজি গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্যাপকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চলছে। একশ’ভাগ শিল্পায়নে গ্যাস ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাহক বিদ্যুত ও জ্বালানী সেবাকে কত পৌঁছে দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, সারাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ব বলছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল। কিন্তু একটি দল আছে বিএনপি, তাদের চোখে কোন উন্নয়নই চোখে পড়ে না। তাদের ব্যাপারে করুণা প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নেই। বিএনপির সহযোগি সংগঠন হচ্ছে গ্রেনেড হামলাকারী, জঙ্গী, নাশকতাকারী, অগ্নিসন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিরা। এদের একটাই লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে বিনাশ করা, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ষড়যন্ত্র করা। বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্রকারীর হাতে এ দলটির জন্ম। এদের ডাকে দেশের জনগণ কোন সাড়া দেয় না। শেখ হাসিনার পরিবর্তে জনগণ কী তারেক জিয়া-খালেদা জিয়াদের আনবে? কোনদিনই সেই স্বপ্ন তাদের সফল হবে না। গণফোরামের সুলতান আহমেদ মনসুর আহমেদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কী হয়েছে জানি না, কিন্তু আমার আসনে সম্পূর্ণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। প্রতিকূল অবস্থা থেকে আমার ভোটাররা ধানের শীষ মার্কায় ভোট দিয়েছে। চিরজীবন নৌকা নিয়ে চলেছি, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের কারণে আমাকে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে সংসদে আসতে হয়েছে। কারণ ২০০৮ সাল থেকে আমি রাজনৈতিক কারাগারে ছিলাম। ধানের শীষ মার্কায় ভোট করলেও মুজিব কোর্ট পড়ে জয় বাংলা স্লোগাণ দিয়ে ভোট চেয়েছি। যারা একসময় বঙ্গবন্ধুকে হিটলার ও ভারতের চর বলেছিল, তারাও এখন দেখি নৌকা নিয়ে সংসদে। যে অবস্থানেই থাকি না কেন যতদিন বেঁচে থাকবো বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করেই চলবো। সবাইকে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় স্লোগাণ জয় বাংলাকে মেনে নিয়েই রাজনীতি করতে হবে। জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, দেশের অর্থনীতিতে সঙ্কট চলছে। ব্যাংকখাতে ঋণখেলাপী এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। জনগণের গচ্ছিত টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সরকারের ব্যয় কমেনি, বরং দিন দিন বাড়ছে। ছোট দুটি রেলওয়ের বাথরুম মেরামতের খরচ দেখানো হয়েছে এক লাখ টাকা। এভাবে প্রচুর লুটপাট হচ্ছে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা পথে বসেছে। জনগণের দাবী, এসব কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দ্রুত ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার করতে হবে।
×