ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শতভাগ যাত্রী নিরাপত্তায় প্রতিটি রেলস্টেশনে বসবে স্ক্যানার মেশিন

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

  শতভাগ যাত্রী নিরাপত্তায় প্রতিটি রেলস্টেশনে বসবে স্ক্যানার মেশিন

মশিউর রহমান খান ॥ দেশের সব রেলস্টেশন ও রেলপথের যাত্রীদের জন্য শতভাগ নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম রেলস্টেশন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে রেলে ভ্রমণকারী কোন যাত্রী কোন প্রকার অবৈধ মালপত্র নিয়ে যাতে প্রবেশ বা পরিবহন করতে না পারে সেজন্য বডি স্ক্যানার ও লাগেজ স্ক্যানার দিয়ে তাদের মালপত্র পরীক্ষা করা হবে। দেশের প্রতিটি রেলস্টেশনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালুর অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা রেলস্টেশন কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে এ পদ্ধতির নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেছে। একইসঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রেলস্টেশনের আশপাশে দেয়াল নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। পদ্ধতিটি চালু করা গেলে কোন অবৈধ অস্ত্র মাদক বা অবৈধ কোন পণ্য নিয়ে কেউ ট্রেনে যাতায়াত করতে পারবে না। একইসঙ্গে যাওয়ার জন্য একটি পথই ট্রেনে নির্ধারিত থাকায় প্রতিটি যাত্রীকে অবশ্যই টিকেট কেটে ট্রেনে উঠতে হবে। এই দুটো স্টেশনের সব খোলা পথ বন্ধ করে সিলগালা করে দেয়া হবে। নিরাপত্তায় বর্তমানের চেয়ে আরও অনেক বেশি নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হবে। এসব মেশিন অপারেট করার জন্য দেয়া হবে প্রশিক্ষণ। সব যাত্রীকে একমুখী অবস্থানে যাওয়া-আসা করতে হবে। ফলে কোন যাত্রী অবৈধ কোন পণ্য রাস্তা থেকে গ্রহণ করলেও স্টেশন দিয়ে তা নিয়ে যেতে পারবে না। এ পদ্ধতি চালু করা গেলে টিকেটবিহীন যাত্রীরা যেহেতু একটি ফটক দিয়ে পরীক্ষাপূর্বক বের হবেন, তাই টিকেট না কেটে কোন অনিয়ম করলে বাধ্য হয়েই যাত্রীকে জরিমানা গুনতে হবে। ফলে বিনা টিকেটে রেলভ্রমণের পথ বন্ধ হবে। অপরদিকে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বর্তমানের চেয়ে অনেক বেশি আয় বাড়বে ও রেলস্টেশনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উদ্যোগ বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই রেলপথ মন্ত্রণালয় নিজস্ব অর্থে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম নামে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পুরোদমে চলমান রয়েছে। প্রকল্পের জন্য দুই স্টেশনে পাইলট প্রকল্পে তিনটি লাগেজ স্ক্যানার ও পাঁচটি বডিস্ক্যানার কিনবে। ইতোমধ্যে ঢাকা রেল স্টেশনের জন্য তিনটি বডি স্ক্যানার ও চট্টগ্রামের জন্য দুটি বডি স্ক্যানার বসানো হবে। সূত্র মতে, বর্তমানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের প্রায় সব স্থানই খোলা। ইচ্ছে করলেই যে কোন যাত্রী টিকেট ছাড়াই রেল ভ্রমণ করতে পারেন। স্টেশনের মূল ফটক দিয়ে বের না হয়ে খোলা স্থান দিয়ে পালিয়ে যায়। ফলে রেলের নিরাপত্তা কর্মী ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা ট্রেনে আসা যাত্রী সবার টিকেট পরীক্ষা করতে পারেন না। ফলে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে রেলওয়ের মতো বিশাল প্রতিষ্ঠানে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেও এত বছরেও লাভের মুখ দেখতে পারছে না। প্রকল্প সূত্র জানায়, রাজস্ব খাতে বাস্তবায়িত হওয়া এ পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যায়ক্রমে বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সকল রেলস্টেশনকে এর আওতায় আনা হবে।
×