ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কূটনীতিকদের সহযোগিতা চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ০৯:৫৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

  ঢাকা সিটি নির্বাচন  সুষ্ঠু করতে  কূটনীতিকদের  সহযোগিতা  চায় বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র ও কাউন্সিলররা পদে পদে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অনিয়ম করছে বলে কূটনীতিকদের জানায় বিএনপি। এছাড়া কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তির বিষয়েও সহযোগিতা চায় দলটি। রবিবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠককালে এ সহযোগিতা চায় বিএনপি। বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপর সরকারী দলের হামলা, হয়রানি, মামলা ও গ্রেফতারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিভিন্ন বিষয় কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেন বিএনপি নেতারা। বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে যা চলছে, সার্বিক প্রেক্ষাপট, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন সামনে রেখে যেসব ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া দেশের মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। এবার ভোটে সে অধিকার থাকবে কি না, সুষ্ঠু ভোট হবে কি না এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমির খসরু বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। তাহলে এ নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা কোত্থেকে আসবে? সরকারী দলের প্রার্থীরা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাস্তার ফুটপাতেও ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, মাইক ব্যবহার করে সময়-অসময়ে। এগুলোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি নেই। ২৮ জানুয়ারি যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তার আলোচ্যসূচীতেও তা নেই। একপক্ষকে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে আর অপর পক্ষকে আইনভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে দেয়া হচ্ছে। খসরু বলেন, ইভিএমে ভোটের বিষয়টি নিয়েও কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কূটনীতিকরা প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশের নাগরিক। তারা কেউ কিন্তু ইভিএম ব্যবহার করছে না। কারণ, ইভিএম ব্যবহারে প্রোগ্রামিংটা যারা করবে তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে তাই রেজাল্ট হবে। তাই বেশিরভাগ দেশে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। দুই-চারটা দেশে যারা ব্যবহার করছে সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ সারাজীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছে কোন সমস্যা হয়নি। সেখানে ৪ হাজার কোটি টাকায় ইভিএম এনে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বৈঠককালে ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে বলে আমির খসরু জানান। এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার বিষয়টিও বিদেশী কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ ইসলাম অমিত, দলের নেতা মীর হেলাল এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, এ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জেবা খান প্রমুখ। রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে বিদেশী কূটনীতিকদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তুরস্কসহ প্রায় ২০ দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। ইশরাক হোসেনের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বৈঠক ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। রবিবার বিকেল ৩টায় ইশরাক হোসেনের গোপীবাগের বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রবিবার দুপুরে তার নির্বাচনী প্রচারে হামলার বিষয়টি তুলে ধরেছেন ইশরাক হোসেন। এছাড়া নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেছেন বলে জানা গেছে। ইশরাক হোসেনের বাসার অদূরে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের গাড়ি পৌঁছার পর রাস্তায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখে গাড়ি থামিয়ে দেয়া হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় রাস্তা থেকে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের গাড়ি ইশরাক হোসেনের বাসায় প্রবেশ করে। সেখানে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে স্বাগত জানান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। ইশরাক হোসেনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, আমি অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গেও দেখা করেছি। তারই অংশ হিসেবে আমি এখানে এসেছি। আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই যাতে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন।
×