ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিআরইউতে ‘লোকগানে জনকের মুখ’ গ্রন্থের প্রকাশনানুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

ডিআরইউতে ‘লোকগানে জনকের মুখ’ গ্রন্থের প্রকাশনানুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘লোকগানে প্রতিফলিত রাজনৈতিক বিষয়াবলি নিয়ে তেমন কোন বিবেচনা ও বিশ্লেষণ চোখে পড়ে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের শুভলগ্নে লোকগানে বঙ্গবন্ধুর চর্চার নানাদিক আমিনুর রহমান সুলতানের ‘লোকগানে জনকের মুখ’ সংকলন গ্রন্থে এক বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের সংকলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এতদিনে বিবেচনা করা হয়নি। বর্তমানে আমরা ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত সংস্কৃতিতে প্রতিফলিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জনসাংস্কৃতিক স্বরূপ বিশ্লেষণে নিয়োজিত রয়েছি। এই বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের সাধক কবিদের সামাজিক, রাজনৈতিক সচেতনতার প্রকাশ যেভাবে আবিষ্কৃত হবে সেভাবে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক মনোস্তত্বের পুনর্জাগরণে সাধক কবিদের প্রদর্শিত পথ অনুসরণের ইঙ্গিতপূর্ণ নির্দেশনা লাভ করা যেতে পারে’-একথা বলেন কবি, লেখক ও গবেষক আমিনুর রহমান সুলতানের ‘লোকগানে জনকের মুখ’ গ্রন্থ প্রকাশনানুষ্ঠানে অতিথিরা। ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে রবিবার দুপুরে ফোকলোর ফিল্ডওয়ার্ক রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, যাত্রানট ও পালাকার মিলন কান্তি দে, বাংলা একাডেমির সহপরিচালক নাট্যকার ও গবেষক সাইমন জাকারিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাশরিক ই হাবিব, কবি নুরুন নবী, কবি নাগরী লিপি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন ‘লোকগানে জনকের মুখ’ গ্রন্থের লেখক আমিনুর রহমান সুলতান। প্রকাশিত গ্রন্থটি নিয়ে বক্তারা বলেন, আমিনুর রহমান সুলতানের ‘লোকগানে জনকের মুখ’ একটি মিশ্ররীতির গ্রন্থ। কেননা গ্রন্থটিতে একইসঙ্গে সংকলধর্মী এবং গবেষণামূলক বৈশিষ্ট্য ধৃত হয়েছে। গ্রন্থটি সাতটি পর্বে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক লোক উপাদান সংকলিত। এগুলো হচ্ছে- বাউল, ভাওয়াইয়া, পুথি, যাত্রাপালায় বিবেক, গম্ভীরা, ভাট কবিতা ও জারিগানে বঙ্গবন্ধু। ‘বাউল গানে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক পর্বে বাউলের পরিচয় ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গানের পর্যালোচনা করা হয়েছে। এ পর্বে সংকলন করা হয়েছে আবদুল মজিদ তালুকদার, ভবা পাগলা, শাহ আবদুল করিম প্রমুখের গান। ‘ভাওয়াইয়া গানে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক পর্বে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের বিশ্বস্বীকৃতির কথা রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতক কর্তৃক সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার ঘটনা রয়েছে। ‘পুথিগানে বঙ্গবন্ধু’ পর্বে রয়েছে আবুল বাশার তালুকদার রচিত ‘মুজিব মুজিব ডাকি’ শিরোনাম অঙ্কিত একটি সংকলন। এতে জাতির পিতার জন্ম থেকে শুরু করে তার বেড়ে ওঠা, রাজনৈতিক জীবন, স্বাধীনতার ডাক, ১৫ আগস্টে সপরিবারে হত্যার ঘটনা উল্লেখ রয়েছে। ‘যাত্রাপালায় বিবেকের গানে বঙ্গবন্ধু’ পর্বে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মিলন কান্তি দে’র ‘বাংলার মহানায়ক’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে’ নামক যাত্রাপালায় বিবেকের গানকে তুলে এনেছেন। ‘গম্ভীরা গানে বঙ্গবন্ধু’ পর্বে গম্ভীরা গানের ভৌগোলিক পরিচয়ের পাশাপাশি এই গান পরিবেশনের বৈশিষ্ট্য ও পদ্ধতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ গবেষকদের আলোচনা ও বিশ্লেষণের উল্লেখ রয়েছে। ‘ভাট কবিতায় বঙ্গবন্ধু’ পর্বে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানাদিক বর্ণিত হয়েছে। ‘জারিগানে বঙ্গবন্ধু’ পর্বে আমিনুর রহমান সুলতান দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাস যেভাবে জারিগানের আসরে গীত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন আবদুর রহমান বয়তির গান, মির্জা রফিকুল হাসানের গানে। আলোচনা শেষে ‘লোকগানে জনকের মুখ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তরুণ কবি সিজন নাহিয়ান। গ্রন্থটি প্রকাশ হয়েছে সাতভাই চম্পা প্রকাশনী থেকে, প্রকাশক নিলুফা ইয়াসমিন। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের নেত্রকোনার কৃতিনন্দন সাজ্জাদুল হাসানকে। বইটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে দুই শ’ টাকা।
×