ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক

ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে এনবিআরের নতুন মধ্যমেয়াদী কৌশল

প্রকাশিত: ১১:১৯, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে এনবিআরের নতুন মধ্যমেয়াদী কৌশল

এম শাহজাহান ॥ নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে ট্যাক্স জিডিপি বাড়ানোর কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে। ‘মধ্যমেয়াদী রাজস্ব আহরণ কৌশল’ নামে উদ্যোগটি আগামী তিন বছরে বাস্তবায়ন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর। এই কৌশলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়িয়ে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা। একই সঙ্গে ঋণনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব অর্থায়নে বাজেট প্রণয়নসহ অবকাঠামো খাতে সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানো। মধ্যমেয়াদী রাজস্ব আহরণ কৌশল নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রেভিনিউ থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ও ড্রাফটিং কমিটি নামে দুটো গঠন করেছে এনবিআর। এছাড়া এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। শীঘ্রই এনবিআরের এ প্রস্তাবটি অনুমোদন দিতে যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, বাজেটের আকার প্রতিবছর বাড়লেও সে তুলনায় রাজস্ব আহরণের হার বাড়ছে না। শুধু তাই নয়, এ বাজেটের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে উন্নয়ন কর্মকা- বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। এ কারণে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামো খাতে সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে। দ্রুত এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতুসহ দশ মেগা প্রকল্পের কাজ। এছাড়া আগামী ’৩০ সালের মধ্যে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। উন্নয়ন এগিয়ে নিতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ কারণে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হচ্ছে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির ওপর। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের তথ্যানুযায়ী প্রথম প্রান্তিকে আহরিত রাজস্বের পরিমাণ ৫৫ হাজার ৪৯৩ কোটি টাকা, যা বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ কম। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি রাজস্ব আয় সংক্রান্ত প্রসঙ্গে সংসদে বলেন, চলতি বাজেটের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বিগত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এ সময়ে কর রাজস্ব আহরণের পরিমাণ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে এবং করবহির্ভূত রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্কার ও কর ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে সঠিকভাবে ভ্যাট আহরণের জন্য ব্যবসায় অঙ্গনে ইলেক্ট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) যন্ত্র স্থাপন, আমদানি-রফতানি পণ্য শতভাগ স্ক্যানিংয়ের আওতায় আনার জন্য সকল কাস্টমস পয়েন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্ক্যানার স্থাপন প্রভৃতি। তিনি বলেন, এসব কার্যক্রম অর্থবছরের অবশিষ্ট সময়ে রাজস্ব আহরণের গতি আনবে বলে আশা করছি।
×