ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রেফারেন্স থাকলে প্রিফারেন্স পাওয়া যায় এই সংস্কৃতির অবসান হওয়া উচিত : ইকবাল মাহমুদ

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রেফারেন্স থাকলে প্রিফারেন্স পাওয়া যায় এই সংস্কৃতির অবসান হওয়া উচিত :  ইকবাল মাহমুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আর্ন্তজাতিক এন্টিকরাপশন এন্ড গভার্ননেন্স বিশেষজ্ঞ কঅজঊঘ ঐটঝঝগঅঘঘ এর নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ-এর সাথে এন্টিকরাপশন এন্ড গভার্ননেন্স ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করেন। এসময় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনি প্রক্রিয়ায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কমিশন দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি প্রতিরোধ, সরকারি পরিষেবা প্রদানে বিজনেস প্রসেস রি-ইঞ্জিনিয়ারিং এবং তৃণমূল পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে গণশুনানিসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি বলেন , “রেফারেন্স থাকলে প্রিফারেন্স পাওয়া যায়” এই সংস্কৃতির অবসানের জন্যই কমিশন পল্লী অঞ্চলে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫টি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। এর মাধ্যমে তৃণমূলে পর্যায়ের মানুষ যাতে তদবিরমুক্তভাবে তাদের সরকারি পরিষেবা পেতে পারে সে বিষয়েই কমিশন কাজ করছে। তিনি বলেন , দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনাায় উপকারভোগী জনগণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এ ব্যবস্থাপনায় সংস্কার প্রত্যাশা করে। কারণ কমিউনিটি সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণই প্রকল্পকে জনবান্ধব কার্যক্রমে পরিণত করতে পারে। উপকারভোগীদের প্রকল্পের প্রতি মমত্ববোধ ও আমিত্ব সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রকল্প ব্যবস্থাপনা চক্রে অবশ্যই সিভিল সোসইটির প্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া সমীচীন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সোস্যাল অডিট হতে পারে প্রকল্পের স্বচ্ছত ও জবাবদিহিতার অন্যতম কৌশল। তিনি বলেন, উন্নয়ন টেকসই করতে হলে নৈতিকমূল্যবোধ সম্পন্ন মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শুধু সার্টিফিকেট নির্ভর শিক্ষা দিয়ে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অর্জনও কঠিন। সক্ষম ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা না গেলে বিশ^ অর্থনীতি যে ১১ রাষ্ট্রের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে-তা ধরে রাখাও কঠিন চ্যালেজ্ঞ হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে যেমন কাজ করছে ঠিক তেমনি কমিশনের নিজস্ব সামর্থে দেশের ২৬ হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে সততা ও নৈতিকমূল্যবোধ গ্রোথিত করার চেষ্টা করছে। আমরা তরুণদের মাঝে এই বার্তার দেওয়ার চেষ্টা করছি দেশটি আমার। আমি এই দেশের গর্বিত মালিক। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি। তিনি বলেন দুর্নীতি দমন কমিশন উন্নয়ন সহযোগী বা কোনো সংস্থার কাছে কখনই কোনো আর্থিক সহায়তা চায় না, কমিশন চায় জ্ঞান, দক্ষতা, কৌশল, অভিজ্ঞতা এবং দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষা উপকরণ। প্রতিনিধি দলটির এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক শুধু চুঁনোপুটি কিংবা মধ্যম মানের দুর্নীতিবাজদের ধরছে না বরং অনেক রুই-কাতলাকেও ধরছে। আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ যার বিরুদ্ধেই অভিযোগ পাচ্ছে তাকেই জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসছে। এখন আর কেউ নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে ভাবার সাহস পাচ্ছেন না। তিনি বলেন দুদকের মামলায় অনেক রুই-কাতলা কারাগারে আছেন, অনেকে আদালতে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন, অনেককেই দুদকে এসে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আরো অনেককেই আসতে হবে। টিআই বাংলাদেশের সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যানের মূল্যায়ন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিআইবি’র কার্যক্রম প্রশংসনীয়। এটি দুদকের কৌশলগত সহযোগী। তবে আমার কেন যেন মনে হয়, সরকাির প্রতিষ্ঠানের ভাল কাজকে প্রশংসা করতে টিআইবি কার্পণ্য করে। টিআইবির সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সমালোচনার পাশাপাশি ভালো কাজের প্রশংসাও করা উচিত। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদক প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল।
×