ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কবি নির্মলেন্দু গুণের শারীরিক অবস্থার উন্নতি

প্রকাশিত: ১০:০৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 কবি নির্মলেন্দু  গুণের শারীরিক  অবস্থার উন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রখ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। শুক্রবার তার মেয়ে মৃক্তিকা গুণ জনকণ্ঠকে জানান, বাবার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভাল। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে আছেন। বাবাকে দেখছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বরেন চক্রবর্তী। ডাক্তাররা বলছেন বাবার নিউমোনিয়া। এটা দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা। কবি নির্মলেন্দু গুণ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কবি নির্মলেন্দু গুণ ১৯৪৫ সালে কাশবন, বারহাট্টা, নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুখেন্দু প্রকাশ গুণ এবং মা বিনাপনি। নির্মলেন্দু গুণের চার বছর বয়সে তার মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা চারুবালাকে বিয়ে করেন। নির্মলেন্দুরা মোট চার ভাই ও চার বোন। শুক্রবার ‘কবি নির্মলেন্দু গুণ গুরুতর অসুস্থ আইসিইউতে’ শিরোনামের রিপোর্টে ভুলবশত বাবা-মার তিন মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু ছোট ছেলে লেখা হয়। তিনি বারহাট্টার করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৬২ সালে দুই বিষয়ে লেটারসহ ম্যাট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পান। ম্যাট্রিক পরীক্ষার আগেই নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত উত্তর আকাশ পত্রিকায় নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কা-ারী’ প্রকাশ হয়। স্বাধীনতার পূর্বে তিনি সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সাংবাদিকতায়ও জড়িত ছিলেন। নির্মলেন্দু গুণের বেশিরভাগ কবিতায় অত্যাধুনিক দৃষ্টান্তবাদিতা পরিলক্ষিত। ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলনের সঙ্গে আত্মিকভাবে জড়িত ছিলেন তিনি। এরপর বাদ পড়েনি স্বাধীনতার পূর্বের ও পরের কোন বিপর্যয়। লিখেছেন একের পর এক শ্রেণীসংগ্রাম এবং স্বৈরাচারবিরোধী কবিতা। শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিবেশে যে কয়জন কবি ও লেখক সোচ্চার হয়েছেন, তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এ-গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা ‘হুলিয়া’ কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কবিতার পাশাপাশি ভ্রমণ কাহিনীও লিখেছেন। বহুল আবৃত্ত কবিতাসমূহের মধ্যে হুলিয়া, অসমাপ্ত কবিতা, মানুষ (১৯৭০ প্রেমাংশুর রক্ত চাই), আফ্রিকার প্রেমের কবিতা (১৯৮৬ নিরঞ্জনের পৃথিবী) ইত্যাদি অন্যতম। বাংলা একাডেমি পদক (১৯৮২), একুশে পদক (২০০১), স্বাধীনতা পুরস্কারসহ (২০১৬) অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত কবি নির্মলেন্দু গুণ।
×